মহালয়া এসে গেল যখন দুর্গাপুজো কি আর দূরে থাকতে পারে? ঢাকের বাদ্যি তো ইতিমধ্যেই বেজে উঠেছে। আর গুনে গুনে কয়েকটা দিনের অপেক্ষা। চারদিকে কত বাহারি পুজো। কোথাও বা সর্বজনীন সাবেকি পুজো, কোথাও আবার থিমের আড়ম্বর, কোথাও বনেদিয়ায়ানা, কোথাও আবার মিশে আছে ইতিহাসের ছোঁয়া। কত ধরনের দেবীমূর্তি না দেখা যায়। শিল্পীদের কত কারুকাজ, ভাবনা ফুটে ওঠে দেবীমূর্তির মধ্যে দিয়ে। কিন্তু কখনও সোনার প্রতিমার পুজো দেখেছেন? এখানে আজও দেবীর স্বর্ণপ্রতিমা পূজিত হন। কোথায় জানেন? জয়পুর রাজবাড়িতে।
জেলার পুজোতেও এখন নানারকম চমক দেখা যায়। বিভিন্ন জায়গায় থিমের ঘটা। কিন্তু যেটা সব থেকে বেশি নজর কাড়ে সেটা হল রাজবাড়ির পুজোগুলো। তেমনই একটি রাজবাড়ি হল জয়পুরের রাজবাড়ি। এখানে বাঁশ, কাঠ, মাটি দিয়ে মূর্তি বানানো হয় না। পূজিত হয় সোনার দুর্গা।
আর এই সোনার দুর্গা দেখার জন্যই জয়পুর রাজবাড়িতে ভিড় উপচে পড়ে। অবশ্যই এই রাজবাড়িতে দেবীর দশভূজা রূপ পূজিত হয় না। তার বদলে পূজিত হয় দ্বিভূজা মূর্তি। এই পুজোর সূচনা ঘটে ১৬০০ সালের শেষদিক থেকে।
শোনা যায়, একটা সময় পর্যন্ত এই রাজবাড়িতে মূর্তি পুজো হত না। কেবল নবপত্রিকা এবং খড়গ পুজো করা হত এই বাড়িতে। কিন্তু একবার পুজোয় একটি দুর্ঘটনা ঘটে। তখন দেবীর স্বপ্নাদেশ পান এই জয়পুরের মহারাজ কাশীনাথ সিং। তখন তিনি দেবীর দ্বিভূজা স্বর্ণমূর্তি তৈরি করিয়ে আনেন এবং তার পুজো শুরু করেন।
তবে সারা বছর মোটেই এই দুর্গাকে বাড়িতে রাখা হয় না। ব্যাঙ্কে রাখা থাকে এই মূর্তি, কেবল পুজোর কয়েকদিন তাকে বাড়িতে আনা হয়। ১৯৭০ সালে দুর্গা মূর্তিকে চুরি করার চেষ্টা করা হয়। এরপর ব্যাঙ্কের লকারে সেই মূর্তি রাখার ব্যবস্থা করা হয়। পুজোর সময় ভিড় নিয়ন্ত্রণ করার জন্য রাখা হয় যথেষ্ট পরিমাণে পুলিশ। কারণ এই সোনা প্রতিমা দেখার জন্য ব্যাপক ভিড় হয় জয়পুর রাজবাড়িতে।