রোজ নানা কিছু ভাইরাল হয়ে যায় সোশ্যাল মিডিয়ায়। কিন্তু এই ছবিটি ভাইরাল হয়ে যাওয়ার সঙ্গে অদ্ভুত এক বিষাদের যোগ রয়েছে— এমনই বলছেন অনেকে। কী এই ছবি? ছবিটি কেরলের এক পরিবারের। সেই পরিবারের এক সদস্যের মৃতদেহ ছবিটির কেন্দ্রে শায়িত। আর তাঁকে ঘিরে বাকিরা হাসছেন। এমন ছবি কোথা থেকে এল, কেন এল, কেনই বা তা ভাইরাল হয়ে গেল— এগুলি নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে।
সম্প্রতি এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমে ছাপা হয়েছে ছবিটি। যা জানা গিয়েছে, তাতে ওই পরিবারের বরিষ্ঠতম সদস্যা মারা গিয়েছেন। যত দূর জানা গিয়েছে, নব্বইয়ের ঘরে পৌঁছে বা ছুঁয়েই মারা গিয়েছেন তিনি। তাঁর মৃতদেহ মাঝখানে রেখে ছবি তুলেছেন ওই পরিবারের জনা চল্লিশেক সদস্য। কমবেশি প্রায় সকলের মুখেই হাসি। কেন এমন আচরণ? এক-আধ জন নন, প্রায় গোটা পরিবারের সকলেই এমন হাসছেন কেন? এই প্রশ্নই উঠেছে।
কিন্তু কী বলছেন পরিবারের সদস্যরা? ছবিটি ভাইরাল হয়ে যাওয়ার পরে বাবু উম্মান বলে একজন নিজের মতামত জানিয়েছে সংবাদমাধ্যমকে। বাবু ওই পরিবারের সদস্য। তিনি বলেছেন, প্রথমত এই ছবিটি ভাইরাল হয়ে যাক— এমনটা মোটেও তাঁরা চাননি। এমনকী বুঝতেও পারেননি। দ্বিতীয়ত, যিনি মারা গিয়েছেন, সেই ‘ঠাকুমা’ অত্যন্ত ভালোভাবে নিজের জীবন বেঁচেছেন। তাঁর সন্তান এবং নাতিনাতনিরা তাঁকে যথেষ্ট ভালোবেসেছেন। এবং এই ছবিটি এভাবে তোলার কারণই হল, তাঁরা যে ভালো সময় একসঙ্গে কাটিয়েছেন, সেটি মনে রাখা।
পরিবারের অন্য এক সদস্য সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, ‘এই ছবিটির অর্থ সকলের পক্ষে বোঝা সম্ভব নয়। বেশির ভাগ মানুষই মৃত্যুর পরে কান্নাই দেখেন। কিন্তু মৃত্যু আসলে বিদায় জানানোও। আর সেই বিদায় জানানোর সময়ে শুধু শোকে মূহ্যমান হতে নেই, হাসিমুখেও বিদায় জানাতে হয়। আর সেটিই করেছি আমরা। শেষবেলায় ঠাকুমাকে হাসি মুখে বিদায় জানিয়েছি।’
তবে শেষ এখানেই নয়। কেরলের শিক্ষামন্ত্রী ভি সিবনকুট্টিও প্রায় একই কথা বলেছেন। তাঁর কথায়, ‘মৃত্যু খুবই দুঃখের। কিন্তু একই সঙ্গে এটি বিদায় জানানোও। যে পরিবার একসঙ্গে দারুণ মুহূর্ত কাটিয়েছে। যাঁরা একসঙ্গে আনন্দ করেছেন, তাঁরা কোনও একজনকে বিদায় জানানোর সময়ে কেন শুধুই চোখের জলে ভাসবে কেন?’ এই ছবিটির কোনও খারাপ কথা বা কটুকথা প্রাপ্য নয় বলেও মত তাঁর।