পুজোর পর থেকেই রাজ্যে আবার ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হওয়ার খবর মিলেছে। শীতের আগমনের আগে এই আবহাওয়া পরিবর্তনের সময় সতর্ক থাকতে বলছেন বিশেষজ্ঞরা। বিশেষত এই সময় আবহাওয়া পরিবর্তনের কারণে জ্বর, সর্দি লেগেই আছে।
তবে জ্বর হলেই যে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন কেউ, বিষয়টা তেমন নয় মোটেও। তাই একনজরে দেখে নিন ডেঙ্গুর উপসর্গ এবং ডেঙ্গু হলে কী কী করা উচিত -
ডেঙ্গুর উপসর্গ
অন্যান্য অসুস্থতার (যে কারণে জ্বর, ব্যথা, ফুসকুড়ি হয়) সঙ্গে অনেক সময় ডেঙ্গুর উপসর্গ গুলিয়ে যায়। সাধারণত ডেঙ্গুর উপসর্গ কী কী হয়, তা দেখে নিন -
১) জ্বরের সঙ্গে চোখে ব্যথা (সাধারণত চোখের পিছনে হয়)।
২) জ্বরের সঙ্গে পেশিতে ব্যথা।
৩) জ্বরের সঙ্গে হাড়ে ব্যথা।
৪) জ্বরের সঙ্গে বমি বমি ভাব/বমি।
৫) জ্বরের সঙ্গে মাথা যন্ত্রণা।
৬) জ্বরের সঙ্গে ফুসকুড়ি।
৭) শুধু জ্বর।
ডেঙ্গর উপসর্গ সাধারণ দুই থেকে সাতদিন থাকে। অধিকাংশ মানুষ সপ্তাহখানেকের মধ্যে সেরে ওঠেন। তবে কারও যদি গুরুতর ডেঙ্গু হয়, তাহলে কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই উপসর্গ মারাত্মক আকার ধারণ করতে পারে।
ডেঙ্গুর উপসর্গ দেখা দিলে কী করবেন?
১) যদি আপনার ডেঙ্গুর উপসর্গ দেখা দেয়, তাহলে অবিলম্বে চিকিত্সকের সঙ্গে যোগাযাগ করুন। আপনি কোথায় কোথায় গিয়েছিলেন, তা জানান।
২) যতটা সম্ভব, বিশ্রাম নিন।
৩) জ্বর এবং ব্যথা কমাতে প্যারাসিটামোল খেতে পারেন। তবে অ্যাসিপিরিন এবং ইবুপ্রফেন খাবেন না।
৪) ডিহাইড্রেশনের সমস্যা হয়। তাই শরীরে প্রচুর পরিমাণে ফ্লুইড দরকার। জল পান করুন বা জলে ইলেকট্রোলাইট মিশিয়ে জল পান করতে হবে।
৫) যদি খুব জ্বর থাকে, তাহলে ঠান্ডা জল দিয়ে রোগীর গা মুছিয়ে দিন।
সাবধানে থাকতে হবে
জ্বর চলে যাচ্ছে। কিন্তু এই সময়টা রোগীদের একাংশের ক্ষেত্রে বিপজ্জনক হয়। তাই উপসর্গ দেখা দেওয়ার তিন থেকে সাতদিন পর্যন্ত সতর্ক খাকতে হবে। পেটে ব্যথা বা লাগাতার বমি, ত্বকে লাল দাগ বা ছোপ, নাক বা মাড়ি থেকে রক্তরক্ষণ, বমির সঙ্গে রক্ত বের হওয়া বা মলের সঙ্গে রক্ত, নিঃশ্বাস-প্রশ্বাসে সমস্যা, আছন্নভাব, অস্বস্তির মতো বিষয়গুলি হচ্ছে কিনা, তা নজরে রাখুন। কোনও একটি বিষয় হলেই দ্রুত চিকিত্সকের কাছে নিয়ে যান।
গুরুতর ডেঙ্গু এবং তার উপসর্গ
প্রতি ২০ জন আক্রান্তের মধ্যে একজনের ডেঙ্গু মারাত্মক হয়। তার ফলে কারও রক্তক্ষরণ হতে পারে। মৃত্যু পর্যন্ত হওয়ার সম্ভাবনা আছে। সেই গুরুতর ডেঙ্গুর উপসর্গ কী কী, তা দেখে নিন একনজরে -
১) পেটে ব্যথা এবং অস্বস্তি।
২) বমি (২৪ ঘণ্টায় কমপক্ষে তিনবার)।
৩) নাক বা মাড়ি থেকে রক্তক্ষরণ।
৪) বমির সঙ্গে রক্ত বের হওয়া বা মলের সঙ্গে রক্ত।
৫) দুর্বলভাব, ক্লান্তিবোধ, অস্বস্তি।
কাদের সাধারণত গুরুতর ডেঙ্গু হয়?
যাঁদের আগে ডেঙ্গু হয়েছিল, তাঁদের ক্ষেত্রে পরবর্তীকালে ডেঙ্গু মারাত্মক আকার ধারণ করতে পারে। এছাড়াও শিশু এবং অন্ত্বঃসত্ত্বা মহিলাদের ক্ষেত্রে ডেঙ্গু সাধারণত গুরুতর হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে।
গুরুতর ডেঙ্গুর উপসর্গ দেখা দিলে কী করবেন?
দ্রুত চিকিত্সকের কাছে নিয়ে যান রোগীকে। কোনও সময় নষ্ট করা যাবে না। যত দ্রুত নিয়ে যাবেন, তত সুবিধা হবে।
*(সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশনের তথ্য অনুযায়ী)