১. ভারতের প্রথম স্বাধীনতা সংগ্রামে তার ভূমিকা (১৮৫৭): যদিও শাস্ত্রী ১৮৫৭ সালের বিদ্রোহের অনেক পরে জন্মগ্রহণ করেছিলেন, তিনি স্বাধীনতা সংগ্রামের জন্য গভীরভাবে অনুপ্রাণিত ছিলেন। তিনি প্রথম স্বাধীনতা সংগ্রামের শহিদদের প্রতি অনেক শ্রদ্ধাশীল ছিলেন এবং তার পিতা শাস্ত্রী ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের শক্তিশালী সমর্থক ছিলেন।
২. রেল মন্ত্রী হিসেবে শাস্ত্রীর পদত্যাগ: ১৯৫৬ সালে, তামিলনাড়ুর একটি বড় ট্রেন দুর্ঘটনার পর ১৪৪ জন মারা যাওয়ার ঘটনায় শাস্ত্রী রেলমন্ত্রী হিসেবে পদত্যাগ করেন। দুর্ঘটনায় তার সরাসরি কোন দায় না থাকা সত্ত্বেও, এর জন্য নৈতিকভাবে দায় গ্রহণ করার তার সিদ্ধান্ত ছিল রাজনৈতিক সততার একটি বিরল উদাহরণ।
৩. তিনি খুব সাধারণ জীবনযাপন করতেন: শাস্ত্রীকে তার সরলতার জন্য পরিচিতি লাভ হয়েছিল। তিনি প্রায়ই "সরল পুরুষ" হিসেবে অভিহিত হতেন। তার পদমর্যাদা থাকা সত্ত্বেও তিনি একটি সাদাসিধে বাড়িতে থাকতেন, সাধারণ পোশাক পরতেন এবং অত্যন্ত সাশ্রয়ী জীবনযাপন করতেন।
৪. তার রহস্যজনক মৃত্যু: লাল বাহাদুর শাস্ত্রী ১৯৬৬ সালের ১১ জানুয়ারি তাশকেন্ট, উজবেকিস্তানে মৃত্যুবরণ করেন, তাস্কেন্ট চুক্তি স্বাক্ষরের পর পরই। তার মৃত্যুর কারণ নিয়ে বিভিন্ন গুঞ্জন এবং ষড়যন্ত্র তত্ত্ব রয়েছে, যেমন তাকে বিষ দেওয়া হয়েছিল, যদিও সরকারিভাবে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর কথা বলা হয়।
৫. "জয় জওয়ান, জয় কিষান" প্রথম প্রচলন করেছিলেন: শাস্ত্রী "জয় জওয়ান, জয় কিষান" (হে সেনা, হে কৃষক) স্লোগানটি প্রচলন করেছিলেন, যা তার একটি শক্তিশালী এবং স্বনির্ভর ভারতের দৃষ্টিভঙ্গি প্রতিফলিত করেছিল। এই স্লোগানটি ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছিল এবং এটি তার জাতীয় প্রতিরক্ষা এবং কৃষি সংস্কারের প্রতি মনোযোগের প্রতীক হয়ে ওঠে।
৬. একজন অনিচ্ছুক রাজনীতিবিদ: লাল বাহাদুর শাস্ত্রী তার প্রাথমিক জীবনে রাজনীতি নিয়ে খুব একটা আগ্রহী ছিলেন না। তিনি ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের সময় রাজনৈতিক কর্মে যুক্ত হন। তিনি প্রায়ই একটি শান্ত জীবন যাপন করতে পছন্দ করতেন এবং প্রধানমন্ত্রী পদ গ্রহণে অনিচ্ছুক ছিলেন, তবে পণ্ডিত জওহরলাল নেহরুর মৃত্যুর পর তাকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নিতে হয়।
. অহিংসা এবং শান্তির শক্তিশালী সমর্থক: যদিও শাস্ত্রী ভারতের সার্বভৌমত্বের শক্তিশালী প্রতিরক্ষক ছিলেন এবং ১৯৬৫ সালের ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের মধ্যে সক্রিয় ছিলেন, তিনি শান্তিরও দৃঢ় সমর্থক ছিলেন। যুদ্ধের পর একটি যুদ্ধবিরতি আহ্বান করার এবং শান্তি আলোচনা চালানোর জন্য তিনি অনেক কিছু করেছেন, যা তার কূটনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি ও যুদ্ধের পর শান্তি প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টা প্রকাশ করে।
এই তথ্যগুলি শাস্ত্রীর সরলতা, নৈতিক মূল্যবোধ এবং ভারতের ওপর তার দীর্ঘস্থায়ী প্রভাবের প্রতি আলোকপাত করে, এমনকি তার জীবনের কিছু কম পরিচিত দিকেও।