দাঁতে ক্যাভিটি ভর্তি! দাঁতের ক্ষয় সারানোর নিশ্চিত উপায় আজ জেনে নিন

দাঁত আমাদের শরীরের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ, যা কেবল আমাদের মুখের সৌন্দর্যই বৃদ্ধি করে না, খাবার চিবানো এবং হজমেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কিন্তু, আজকের ব্যস্ত জীবনে, সঠিক খাদ্যাভ্যাস এবং মুখের সঠিক পরিচ্ছন্নতার অভাবে, দাঁতের সমস্যা দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই সমস্যাগুলির মধ্যে সবচেয়ে সাধারণ এবং গুরুতর সমস্যা হল দাঁতের ক্ষয় অর্থাৎ গহ্বর বা ক্যাভিটি।

ক্যাভিটির সমস্যা তখনই দেখা দেয় যখন আমরা নিয়মিত দাঁত পরিষ্কার করি না, খুব বেশি মিষ্টি খাই। এই জিনিসগুলি দাঁতে জমা হয় এবং ব্যাকটেরিয়া বৃদ্ধি করে, যা অ্যাসিড তৈরি করে এবং ধীরে ধীরে দাঁতের উপরের স্তরকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে, এই স্তরটি ভেঙে যেতে শুরু করে এবং দাঁতের ক্ষয় শুরু হয়। শিশু থেকে বৃদ্ধ সকল বয়সের মানুষ এই সমস্যায় আক্রান্ত।

প্রাথমিকভাবে, দাঁতের ক্ষয় ধরা কঠিন কারণ এতে কোনও ব্যথা হয় না, কিন্তু এই সমস্যা বাড়ার সাথে সাথে ঠান্ডা বা গরম অনুভূতি, চিবানোর সময় ব্যথা এবং মুখের দুর্গন্ধের মতো সমস্যা দেখা দিতে শুরু করে। এই সমস্যাটি সাধারণত শিশুদের মধ্যে দেখা যায় কারণ তারা প্রচুর চকোলেট, টফি এবং মিষ্টি খাবার খায় এবং সঠিকভাবে ব্রাশ করে না। যদি সময়মতো চিকিৎসা না করা হয়, তাহলে এটি দাঁতের ভেতরের স্নায়ুতে পৌঁছাতে পারে, যার ফলে তীব্র ব্যথা, ফোলাভাব এমনকি দাঁত তোলার মতো সমস্যাও হতে পারে। অতএব, আমাদের দাঁতের যত্ন নেওয়া এবং সময়মতো চিকিৎসা করা গুরুত্বপূর্ণ।

ক্যাভিটির সমস্যা সমাধান হবে কীভাবে

ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ ডেন্টাল অ্যান্ড ক্র্যানিওফেসিয়াল রিসার্চ (এনআইডিসিআর) অনুসারে, যদি প্রাথমিক পর্যায়ে দাঁতের ক্যাভিটি পড়ে, তাহলে এটি প্রতিরোধ এবং নিরাময় করা যেতে পারে। এই ধরনের ক্ষেত্রে দন্ত চিকিৎসকরা ফ্লোরাইড প্রয়োগ করেন। এটি দাঁতের বাইরের স্তরকে শক্তিশালী করে এবং প্রাথমিক ক্ষয় নিরাময়ে সাহায্য করে। কিন্তু যদি ক্যাভিটি বেড়ে যায়, তাহলে শুধুমাত্র ফ্লোরাইড দিয়ে চিকিৎসা করা সম্ভব নয়। এমন পরিস্থিতিতে, দন্তচিকিৎসক দাঁতের ক্ষয়প্রাপ্ত অংশটি সরিয়ে ফেলেন, যাতে ক্যাভিটি আরও ছড়িয়ে না পড়ে। এর পরে দাঁতের খালি অংশটি ফিলিং উপাদান দিয়ে পূর্ণ করা হয়। একে বলা হয় ফিলিং।

দাঁতের ক্ষয় রোধ করতে ফ্লোরাইডযুক্ত টুথপেস্ট দিয়ে দাঁত ব্রাশ করুন। দিনে দুইবার ফ্লোরাইড টুথপেস্ট দিয়ে ব্রাশ করলে দাঁত মজবুত হয়। ফ্লোরাইডযুক্ত মাউথওয়াশ ব্যবহার করুন, যা দাঁতের উপর একটি স্তর তৈরি করে এবং দাঁতকে ক্ষয় থেকে রক্ষা করে। ভালো ওরাল স্বাস্থ্যবিধি অনুশীলন করুন। দিনে দু' বার, সকালে এবং রাতে ব্রাশ করুন। দাঁতের ফাঁকে ভালো করে পরিষ্কার করুন যাতে আটকে থাকা খাবারের কণাগুলো সরে যায়। বেশিরভাগ ব্যাকটেরিয়া সেখানেই জন্মায়।

মিষ্টি এবং স্টার্চযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলুন। সুষম এবং পুষ্টিকর খাদ্য গ্রহণ করুন; ফলমূল, শাকসবজি, দুধ এবং ডালের মতো স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া দাঁত এবং মাড়িকে শক্তিশালী রাখতে সাহায্য করে। ঘন ঘন কিছু না খাওয়াই ভালো, কারণ ঘন ঘন খাওয়ার ফলে দাঁতে ব্যাকটেরিয়ার আক্রমণ বেড়ে যায়। প্রতি ছয় মাসে একবার চেকআপের জন্য দাঁতের চিকিৎসকের কাছে যেতে ভুলবেন না।