কিছুই ভাল লাগছে না। জীবনটা যেন অন্ধকারাচ্ছন্ন লাগছে। এমনটা যদি অনুভব করে থাকেন, তাহলে জানিয়ে রাখি, আপনি একা নন। সাফল্যের শীর্ষে থাকা ব্যক্তিরও কখনও কখনও মন খারাপ হয়।
কিন্তু সবসময়েই কি মনটা খারাপ লাগছে? দিনের পর দিন এমন কী মাসের পর মাস অবসাদগ্রস্ত মনে হচ্ছে? সেক্ষেত্রে নজর দিন মানসিক স্বাস্থ্যে। প্রথমেই এই নিয়মগুলি মেনে চলুন। উপকার না হলে অবশ্যই একজন মনোবিদের পরামর্শ নিন।
আরও পড়ুন : একই সরলরেখায় চাঁদ, বৃহস্পতি, শনি এবং শুক্র গ্রহ! জানুন কবে
১. সোশ্যাল মিডিয়া বর্জন
স্কুলে একসঙ্গে পড়া বন্ধুটি বিলাসবহুল গাড়ি কিনে ফেলল। বান্ধবী পাঁচ তারা রেস্তোরাঁয় ডিনার করছে। সোশ্যাল মিডিয়া জুড়ে শুধুই সাফল্য, আনন্দের নজির। নিউজ ফিড স্ক্রল করতে করতে নিজের সঙ্গে তাঁদের জীবনের তুলনা মনে আসতেই পারে।
কিন্তু মনে রাখবেন, সোশ্যাল মিডিয়ায় সকলে শুধু তাঁদের জীবনের সুন্দর অংশটুকুই তুলে ধরেন। তার আড়ালে যে হতাশা, গ্লানি, ব্যর্থতা থাকে, তার কণামাত্র প্রকাশ পায় না। এই ফোর্সড পজিটিভিটি দেখে নিজেকে কম সফল মনে হতেই পারে।
সাধারণ মানুষ তো ছেড়েই দিন। বিশ্বের ধনীতম ব্যক্তি, ইলন মাস্ক নিজেও ঠিক এই কারণেই ইনস্টাগ্রাম ব্যবহার করা ছেড়ে দিয়েছেন। শুনে নিন তাঁরই মুখ থেকে।
বিশ্বের অন্যতম সফল ব্যক্তিই যদি এমনটা ভাবেন, তাহলে আমার-আপনারও এমন মনে হওয়াটা অস্বাভাবিক নয়।
২. হবিতে ডুব দিন
দিনের কিছুটা সময় রাখুন শুধুমাত্র নিজের জন্য। আপনি মন থেকে যেটা করতে চান, সেটাই করুন। সেই কাজ যাই হোক না কেন। রান্না, জিম, ছবি আঁকা, বাগান, গান, নাচ, গল্পের বই পড়া, সিনেমা দেখা- আপনার মন যা চায়, তাই করুন।
৩. যে কাজগুলি করলে মন খারাপ হয়, তা এড়িয়ে চলুন
দুঃখের সিনেমা দেখে মুড বিগড়ে যাচ্ছে? সোশ্যাল মিডিয়ায় কোনও করুণ ছবি দেখার পর কিছু ভাল লাগছে না? এমনটা হলে এখন থেকে এই ধরনের জিনিসগুলি এড়িয়ে চলুন। কোনও নির্দিষ্ট ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলার পর অবসাদ এলে তাঁকেও এড়িয়ে চলাই ভাল।
৪. খাওয়াদাওয়া ও শরীরচর্চায় মন দিন
খাওয়াদাওয়া ও শরীরচর্চা কিন্তু মানসিক স্বাস্থ্যের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। বেশি বেশি জাঙ্কফুড খেলে তা পরোক্ষভাবে অবসাদের কারণ হতে পারে। অন্যদিকে শরীরচর্চা মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি করার জন্য প্রমাণিত।
তাই প্রতিদিন অন্তত ৩০ মিনিট শরীরচর্চা করুন। মেনে চলুন একটি সুষম, পুষ্টিকর খাদ্যাভ্যাস। মাঝে মাঝে জমিয়ে জাঙ্কফুডও খান। তবে মাসে ১-২ বারের বেশি নয়।
৫. কাজ ও বাড়ি আলাদা রাখুন
প্রয়োজন না হলে অফিসের বাইরে কাজের কথা মাথাতেও আনবেন না। অফিস ও অফিসের বাইরের জগত আলাদা রাখুন। এতে স্ট্রেস কম হবে।
৬. পোষ্য রাখুন
আপনার কি কুকুর-বেড়াল ভাল লাগে? তাহলে একটি পথকুকুরের ছানা বা বিড়াল পুষতে পারেন। সেই সময় বা দায়িত্ব নেওয়ারই সুযোগ না থাকলেও রয়েছে উপায়। স্থানীয় পথকুকুরদের খেতে দিন, দেখভালের ব্যবস্থা করুন। দেখবেন মন ভাল হয়ে যাবে।
৭. বিশ্বস্ত কাউকে সব বলুন
বিশ্বস্ত কাউকে নিজের মনের কথা জানান। তিনি আপনার স্ত্রী, মা-বাবা, ভাই-বোন, বন্ধু এমনকি সম্পূর্ণ অচেনা কেউ-ও হতে পারে। পরামর্শ নয়, শুধুমাত্র নিজের মধ্যে জমে থাকা ভাবনা বের করতেই কথা বলুন। চাপমুক্ত হবেন।
৮. মনোবিদের পরামর্শ নিন
শরীর খারাপ হলে আমরা চিকিত্সককে দেখান। মন খারাপ হলে দেখাই না কেন? ভয় পাবেন না। মনোবিদের পরামর্শ নিন।