কোটি কোটি মানুষ রক্তচাপের সমস্যায় ভোগেন। মানসিক চাপ, কাজের চাপ, খাদ্যাভ্যাসের নানা সমস্যার কারণে রক্তচাপ বাড়ছে অনেকেরই। গত দু’বছরে কোভিডের কারণে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়েছে। মারাত্মক ভাবে বেড়ে গিয়েছে মানসিক চাপ। আর তার প্রভাব পড়েছে রক্তচাপে।
এই সমস্যা থেকে বাঁচতে অনেকেই ব্লাড প্রেশারের ওষুধ খান। এক হিসাবে এই ধরনের ওষুধ প্রতি বছর কোটি কোটি মানুষের জীবন বাঁচায়, কমায় হৃদরোগের আশঙ্কা। কিন্তু জীবন বাঁচানোর কাজ যে ওষুধটি বছরের পর বছর করে চলেছে, সেটি কি সম্পূর্ণ নিরাপদ? নাকি এটি ঘুরিয়ে শরীরের ক্ষতি করছে?
হালে University of Virginia School of Medicine-এর একটি গবেষণা তেমনই ইঙ্গিত দিচ্ছে। সেখানে বলা হয়েছে, নিয়মিত বছরের পর বছর ব্লাড প্রেশারের ওষুধ খেলে কিডনি সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে যেতে পারে। এই জাতীয় ওষুধ কিডনির উপর চাপ ফেলে, এমন আশঙ্কা অনেক চিকিৎসকই করতেন। কিন্তু এই প্রথম বার হাতেকলমে তার প্রমাণও পাওয়া গেল।
কী বলা হয়েছে এই গবেষণাপত্রে?
গবেষণকরা বলছেন, কিডনির ঠিক করে কাজ করার জন্য renin cell নামের কোষের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই কোষগুলি renin নামক হরমোন তৈরি করে। আর এটিই রক্ত পরিশুদ্ধ করার কাজ করে। কিছু কিছু রাসায়নিক এই renin-এর কাজের ধরন পাল্টে দেয়। এগুলি তখন কিডনিরই ক্ষতি করতে শুরু করে। আর এই রাসায়নিকগুলির বেশির ভাগই পাওয়া যায় ব্লাড প্রেশারের ওষুধে।
ফলে দীর্ঘ দিন ধরে যাঁরা ব্লাড প্রেশারের ওষুধ খান, তাঁদের কিডনির মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে এর ফলে। তেমনই বলা হয়েছে গবেষণায়।
তাহলে কি ব্লাড প্রেশারের ওষুধ খাওয়া ছেড়ে দেবেন?
মোটেই তা নয়। কারণ তাতেও বাড়বে হৃদরোগ এবং মৃত্যুর আশঙ্কা। গবেষকদের বক্তব্য, ব্লাড প্রেশারের ওষুধ দরকার মতো খেতেই হবে। কিন্তু জীবনযাত্রায় বদল এনে সেই ওষুধের মাত্রা যত কমানো যায়, ততই ভালো। এর পাশাপাশি চিকিৎসকের পরামর্শে কিডনির যত্ন নেওয়ার বিষয়েও সচেতন হতে হবে।