দুধ এমন একটি সুষম খাদ্য যা শিশু থেকে বয়স্ক সকলের জন্যই ভীষণ প্রয়োজনীয়। স্বাস্থ্যের বিকাশের জন্য হোক অথবা সুস্থতার জন্য, দুধের কোনও বিকল্প হয় না। তবে দুধ একটি উপকারী পানীয় হিসেবে তা আপনি সারাদিনে যখন তখন খেতে পারেন না। একটি নির্দিষ্ট পরিমাণের বেশি দুধ যদি আপনি রোজ পান করেন সে ক্ষেত্রে হতে পারে একাধিক শারীরিক সমস্যা।
ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিকেল রিসার্চের রিপোর্ট অনুযায়ী, একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ রোজ ৬০০ মিলিগ্রাম দুধ খেতে পারেন। অর্থাৎ একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ প্রত্যেকদিন দুই গ্লাস দুধ খেতে পারেন সর্বোচ্চ। ১০ থেকে ১৮ বছর বয়সী মানুষ সারা দিনে ৮০০ মিলিগ্রাম দুধ খেতে পারেন। তবে বয়সের সাথে সাথে দুধ খাওয়ার পরিমাণ কমানো উচিত। এক গ্লাস দূরে থাকে ৫ গ্রাম স্যাচুরেটেড ফ্যাট, যা অতিরিক্ত পরিমাণে গ্রহণ করলে হতে পারে স্ট্রোক বা কার্ডিওভাসকুলার রোগ।
(আরো পড়ুন: কমবে ওজন, প্রখর হবে দৃষ্টি! ভুট্টা খেলে আর কী কী উপকার পাবেন জানেন? দেখে নিন)
অতিরিক্ত দুধ পান করলে হতে পারে এই ১১ টি পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া
হজমে সমস্যা: অতিরিক্ত দুধ পান করলে ডায়রিয়া, গ্যাস, পেটে ব্যথার মত সমস্যা দেখা দিতে পারে।
ওজন বৃদ্ধি: এক কাপ দুধে থাকে ১৮০ গ্রাম ক্যালরি। অতিরিক্ত দুধ যদি আপনি পান করেন সেক্ষেত্রে আপনার ওজন বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থেকে যায়।
কোলেস্টরলের মাত্রা বৃদ্ধি: দুধে স্যাচুরেটেড ফ্যাট থাকার কারণে দুধ বেশি খেলে রক্তে এলডিএল কোলেস্টরলের মাত্রা বেড়ে যায় এবং হৃদরোগের ঝুঁকি থেকে যায়।
পুষ্টির ভারসাম্যহীনতা: আপনি যদি সারাদিন দুধ খেয়ে থাকেন তাহলে আপনার শরীরে ভিটামিন, প্রোটিন খনিজ বা ফাইবারের মাত্রা কমে যাবে। কারণ দুধ খেয়ে যদি আপনার পেট ভর্তি থাকে তাহলে অন্য কোনও খাবার খেতে ইচ্ছা করবে না আপনার।
আয়রনের ঘাটতি: অত্যাধিক দুধ খেলে আপনার শরীরের আয়রন কমে যেতে পারে। বিশেষ করে ছোট বাচ্চারা যদি অতিরিক্ত দুধ খায় তাহলে রক্তাল্পতার সমস্যা দেখা দিতে পারে।
ব্রণ: দুধ খেলে দুধে থাকা অ্যান্ডডোজেন মুখের ব্রণ তৈরি বা বিকাশে সাহায্য করে। তাই ব্রণ থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য দুধের পরিমাণ কমিয়ে দিতে হবে আপনাকে।
(আরো পড়ুন: কেন আজকের দিনটি ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ? জানুন তেলাঙ্গানা গঠনের কাহিনি)
হাড়ের ক্ষয়: দুধে অতিরিক্ত ক্যালসিয়াম থাকার কারণে আপনার হাড় যে মজবুত হবে এ কথা আপনি জানেন। তবে আপনি হয়তো জানেন না, অতিরিক্ত দুধ খেলে প্রস্রাবের মাধ্যমে ক্যালসিয়াম বেরিয়ে যায় এবং হাড় হয়ে যায় নমনীয়।
হরমোনের ভারসাম্যহীনতা: প্যাকেটজাত দুধে থাকে ইস্ট্রোজেন এবং এমন কিছু গ্রোথ ফ্যাক্টর হরমোন যা প্রতিনিয়ত আপনার শরীরে স্তন ক্যানসার বা প্রোস্টেট ক্যানসারের সমস্যা বাড়িয়ে দেয়।
কিডনিতে পাথর: দুধে থাকা অতিরিক্ত ক্যালসিয়াম আপনার কিডনিতে পাথর হওয়ার সম্ভাবনা বাড়িয়ে দেয়। শরীরে যখন অতিরিক্ত ক্যালসিয়াম প্রবেশ করে তখন অতিরিক্ত ক্যালসিয়াম কিডনিতে পাথর তৈরি করে। তাই কোনও ভাবেই অতিরিক্ত দুধ খাওয়া বাঞ্ছনীয় নয়।