ক্যানসারের চিকিৎসায় এবার কেমোথেরাপির সঙ্গে খাওয়াদাওয়াও গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে। সম্প্রতি ক্যানসার নিয়ে একটি গবেষণা এমনটাই দাবি করছে। গবেষকদের বক্তব্য, কেমোথেরাপি বা রেডিয়েশনের সঙ্গে সঙ্গে খাওয়াদাওয়াও খুব গুরুত্বপূর্ণ। শরীর থেকে পুষ্টি পেয়েই ক্যানসার কোশ সংখ্যায় বাড়তে থাকে। বিশেষ ধরনের প্রোটিন এই বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। সেই প্রোটিনকে আটকাতে পারলেই মিলতে পারে সমাধান। ক্যানসারের চিকিৎসা এই গবেষণার জন্য আরও দ্রুত হবে বলে মনে করছেন গবেষকরা।
শরীরের যে কোনও অঙ্গেই ক্যানসার দেখা দিতে পারে। কোনও অঙ্গ বা কলার মধ্যে থাকা কোশ হঠাৎ করে বিভাজিত হয়ে সংখ্যা বাড়াতে পারে। সংখ্যা বাড়তে বাড়তে ধীরে ধীরে টিউমারের সৃষ্টি হয়। কখনও কখনও সেই টিউমার ম্যালিগন্যান্ট হয়। আবারও কখনও তেমনটা হয় না। টিউমার ম্যালিগন্যান্ট হলে সেখান থেকেই ক্যানসারের শুরু। প্রথম প্রথম কোশের অস্বাভাবিক আচরণ কোনওভাবেই বাইরে থেকে বোঝা যায় না। তাই প্রথম দিকে ক্যানসার ধরাও পড়ে না। তবে চারটি স্টেজের পর ক্যানসারের কারণে মৃত্যু হতে পারে। প্রাথমিক স্টেজে শারীরিক অস্বস্তিকে অবহেলা না করে চিকিৎসক দেখিয়ে নিলে ক্যানসার তেমন মারাত্মক আকার নেয় না।
মিচিগান রগেল ক্যানসার সেন্টারের গবেষণাটি কোলন ক্যানসার নিয়ে করা হয়েছিল। ইঁদুরের শরীরে এই গবেষণা করা হয়। ফলাফল বেরোলে দেখা যায়, ক্যানসার কোশের মধ্যে থাকা একটি বিশেষ পদার্থ কোশকে সংখ্যা বাড়ানোর নির্দেশ দিচ্ছে। পদার্থটির বৈজ্ঞানিক নাম এমটরসি। প্রোটিনের মধ্যে থাকা দুটি বিশেষ অ্যামিনো অ্যাসিড এই এমটরসিকে সংকেত দেয়। সেই সংকেত পেলেই এমটরসি বুঝতে পারে শরীরে পুষ্টি উপাদান এসেছে। এবারে সে উপাদান কাজে লাগিয়ে সংখ্যা বাড়ানো যেতে পারে। যে কোনও কোশের সংখ্যা বাড়ানোর জন্য পুষ্টির দরকার। অ্যামিনো অ্যাসিডের সংকেত পেয়েই এমটরসি কোশকে সংকেত পাঠায়। গবেষকরা বলছেন, এই দুটি আ্যামিনো অ্যাসিডের সংকেত না পেলে এমটরসি একটা সময়ের পর কাজ বন্ধ করে দেয়। এমটরসি কাজ বন্ধ করলেই ক্যানসার কোশের বিপত্তি। তারা তখন আর সংখ্যায় বাড়ে না। বরং পুষ্টি না পেয়ে মরে যেতে থাকে। রোগীও ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে উঠতে থাকে।
দীর্ঘদিন কম প্রোটিন খেলে রোগীর অন্য শারীরিক সমস্যা হতে পারে। তবে কেমোথেরাপি বা রেডিয়েশনের আগে এক থেকে দুই সপ্তাহ কম প্রোটিন খাওয়াই যায়। তেমনটা করা গেলে চিকিৎসায় আরও ভালো ফল মিলতে পারে, মনে করছেন গবেষকরা।