ফুসফুসের বিভিন্ন সমস্যার কারণে প্রতি বছরই অনেক রোগীর মৃত্যু হয়। এর মধ্যে সিওপিডি সারা বিশ্বেই রোগী মৃত্যুর বড় কারণ হয়ে উঠেছে। বিজ্ঞানের পরিভাষায় এর পুরো নাম ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজিজ। বয়স হলে অনেকেরই এই রোগটি দেখা যায়। মূলত রোজকার ধূমপানের অভ্যাস ও দূষিত বায়ুর কারণে রোগটি হয়। বর্তমানে সিওপিডি বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম মারণ রোগ। বিভিন্ন চিকিৎসা থাকলেও রোগটি সম্পূর্ণ সারানো সম্ভব না। বরং এখনও পর্যন্ত এই রোগের সবকটি চিকিৎসাই লক্ষণগুলির বিরুদ্ধে সাহায্যকারী চিকিৎসা (সাপোর্টিভ ট্রিটমেন্ট)। সিওপিডি একবার দেখা দিলে তা সারা জীবন থেকে যায়।
বর্তমানে বিজ্ঞানের উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে এসেছে অত্যাধুনিক চিকিৎসা্ পদ্ধতি। ফুসফুস প্রতিস্থাপন তেমনই প্রক্রিয়া। এই চিকিৎসার মাধ্যমে সিওপিডি সারানোর চেষ্টা করা হয়। রোগীর পরিস্থিতি ভীষণ জটিল হলে শেষ বিকল্প হিসেবে এই পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়।
ফুসফুস প্রতিস্থাপন বিশেষজ্ঞ ডাঃ চন্দ্রশেখর কুলকার্নি জানাচ্ছেন, বেশ কিছু থেরাপি দিয়ে আপাতত সিওপিডির চিকিৎসা করা হয়। এর মধ্যে ব্রঙ্কোডাইলেটর দিয়ে চিকিৎসা অন্যতম। এটি দিয়ে শ্বাসবায়ুপথের চারপাশের পেশিগুলোকে প্রসারিত করা হয়। এ ছাড়াও অক্সিজেনের জোগার বাড়িয়েও চিকিৎসা করা হয়। তবে ফুসফুস প্রতিস্থাপন কিছু শর্ত মেনেই করা হয়।
কোন কোন রোগীর জন্য এই চিকিৎসা?
- চন্দ্রশেখর জানান, নিয়মিত ওষুধ খান এমন রোগীরই ফুসফুস প্রতিস্থাপন করা হয়।
- কোনও বড় রোগ না থাকলে এই প্রতিস্থাপন করা হয়।
- বয়স ৬০ বা তার কম হলে দুটি ফুসফুসই প্রতিস্থাপন করা যায়। বয়স ৬৫ বা তার কম হলে একটি ফুসফুসের প্রতিস্থাপন সম্ভব।
- এ ছাড়াও সমাজের তরফে যথেষ্ট সহযোগিতা দরকার।
- মনকে ঠিক রাখা এই সময় দরকার। কারণ ফুসফুস প্রতিস্থাপনের পর শরীরে অনেক পরিবর্তন আসতে পারে।
সিওপিডি এতে বরাবরের মতো সেরে যায়?
ফুসফুস প্রতিস্থাপন করলে সিওপিডি সম্পূর্ণ সারে না। তবে সমস্যা আগের থেকে অনেকটাই কমে যায়। রোগীর জীবনকাল এতে কিছুটা বাড়ে। একটি সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, ফুসফুস প্রতিস্থাপনের পর কিছু রোগী পাঁচ বছর পর্যন্তও বেঁচে ছিলেন।
কখন এই প্রতিস্থাপন করানো উচিত?
সিওপিডি-এর বেশ কিছু প্রচলিত চিকিৎসা রয়েছে। এর মধ্যে এম্ফিসেমাও একটি অন্যতম চিকিৎসা। এই চিকিৎসাগুলোয় কাজ না দিলে ফুসফুস প্রতিস্থাপনের সিদ্ধান্ত নেওয়া যেতে পারে।