এক দিকে যেমন কলকাতা-সহ সারা রাজ্য জুড়ে বিরাট ধুমধাম করে পালন করা হচ্ছে দুর্গাপুজো। অন্যদিকে দানা বেধেছে এক বিতর্ক। এর কেন্দ্রে রয়েছে দক্ষিণ কলকাতার এক পুজো। সেখানে মহাত্মা গান্ধীকে মহিষাসুর রূপে দেখানো হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
দক্ষিণ কলকাতার রুবি পার্ক এলাকায় এই পুজোটির আয়োজন অখিল ভারত হিন্দু মহাসভা। তাদের মণ্ডপে দেবী দুর্গার যে মূর্তিটির পুজো করা হচ্ছে, সেখানেই মহিষাসুর রূপে রাখা হয়েছে মহাত্মা গান্ধীকে। দেবী দুর্গার হাতে তাঁকে বধ হতে দেখা গিয়েছে এই পুজোর প্রতিমায়।
কেন এমন করা হয়েছে? বেসরকারি এক সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, এ বছর যেহেতু ২ অক্টোবর অর্থাৎ মহাত্মা গান্ধীর জন্মদিনটি দুর্গাপুজোর মধ্যে পড়েছে, তাই এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে অখিল ভারত হিন্দু মহাসভার তরফে।
২ অক্টোবর অর্থাৎ গান্ধী জয়ন্তীর দিনটি অখিল ভারত হিন্দু মহাসভা ‘কালা দিবস’ হিসাবে পালন করে। পশ্চিমবঙ্গের অখিল ভারত হিন্দু মহাসভার রাজ্য কার্যনির্বাহী সভাপতি চন্দ্রচূড় গোস্বামী বেসরকারি সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন,মহাত্মা গান্ধীর জন্মদিন দুর্গাপুজোর মধ্যে পড়ায়, তাঁরা গান্ধীকে মহিষাসুর হিসাবে রাখবেন বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন।
তবে ইতিমধ্যেই বিষয়টি নিয়ে জলঘোলা শুরু হয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেকেই এটির সমালোচনা করেছেন। এবং আইনি পদ্ধতি এর বিরোধিতা করবেন বলেও জানিয়েছেন। টুইটারে কলকাতা পুলিশেরও দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে এই বিষয়ে।
তবে চন্দ্রচূড় গোস্বামী জানিয়েছেন, রুবি পার্কের কাছে প্রথমবার মতো দুর্গাপূজার আয়োজন করেছেন তাঁরা। আয়োজনের জন্য পুলিশ, কলকাতা মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশন, দমকল বাহিনী এবং বাকিদের অনুমতি নেওয়া হয়েছে। কেউই পুজোয় আপত্তি করেনি।
তাঁর দাবি, গান্ধী এই দেশের জন্য ভালো কিছু করেননি। তাই তাঁরা গান্ধীকে জাতির পিতা মানেন না। বরং তিনি দেশ ভাগের জন্য দায়ী বলে মনে করেন। সেই কারণেই এই প্রতীকী প্রতিবাদ।
তবে এই প্রথম বার নয়, এর আগেও অখিল ভারত হিন্দু মহাসভার তরফে নানাভাবে গান্ধীর বিরোধিতা করা হয়েছে। তবে এবার এর সঙ্গে দুর্গাপুজো জড়িয়ে যাওয়ায় বাঙালিদের মধ্যে এই নিয়ে আলোচনা বেশি হচ্ছে। কারণ দুর্গাপুজোর সঙ্গে বাঙালিদের যে আনন্দের আবেগ জড়িয়ে রয়েছে, এই প্রতীকী বিরোধিতাও তার সঙ্গে মানানসই নয় বলে মত অনেকের। ব্যাপারটিকে দৃষ্টিকটূ বলেও দাবি করেছেন অনেকে। আর সেখান থেকেই নানা ভাবে জটিলতার সৃষ্টি হচ্ছে। বাড়ছে প্রতিবাদের সংখ্যা।