মকর সংক্রান্তি, ফসল কাটা এবং সমৃদ্ধির সঙ্গে জড়িত এই উৎসব ভারতের অনেক জায়গায় ধুমধাম করে পালিত হয়। এই বছর ১৪ জানুয়ারি এই বিশেষ পিঠেপুলির উৎসব বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন ঐতিহ্যের সঙ্গে পালিত হচ্ছে। এই দিনে সূর্যের পূজা করা হয় এবং গঙ্গা স্নানেরও বিশেষ তাৎপর্য রয়েছে। এরই পাশাপাশি এই উৎসবে আরও একটি বিশেষ জিনিস রয়েছে এবং তা হল ঘুড়ি ওড়ানো। মকর সংক্রান্তির এই দিনে পুরো আকাশ রঙিন ঘুড়িতে ভরে যায়। কিন্তু মকর সংক্রান্তিতে কেন ঘুড়ি ওড়ানোর প্রথা আছে জানেন?
আরও পড়ুন: (Best Diet for Diabetes Patients: ডায়াবিটিস রোগীদের জন্য সেরা খাবার কী কী? জানালেন পুষ্টিবিদ)
মকর সংক্রান্তিতে কেন ঘুড়ি ওড়ানো হয়
মকর সংক্রান্তিতে ঘুড়ি ওড়ানো নিয়ে ধর্মীয় বিশ্বাস রয়েছে। রামায়ণ অনুসারে, মকর সংক্রান্তির দিন ভগবান শ্রী রাম প্রথম ঘুড়ি উড়িয়েছিলেন। কথিত আছে যে তাঁর ঘুড়ি এত উঁচুতে উড়েছিল যে তা ইন্দ্রলোকে পৌঁছে গিয়েছিল। সেই থেকে মকর সংক্রান্তির দিনে ঘুড়ি ওড়ানোর প্রথা শুরু হয়। ঘুড়ি ওড়ানোকে শুভ ও সুখের প্রতীক হিসেবেও দেখা হয়। মকর সংক্রান্তির দিনে মানুষ ঘুড়ি উড়িয়ে তাদের জীবনে সুখ ও সাফল্য কামনা করে।
ঘুড়ি ওড়ানোর বৈজ্ঞানিক কারণ
মকর সংক্রান্তিতে ঘুড়ি ওড়ানোর পেছনে কিছু বৈজ্ঞানিক কারণ রয়েছে।
প্রথম কারণ হল, মকর সংক্রান্তির উৎসবটি শীতকালে পালন করা হয়। আর জানুয়ারি মাস প্রচণ্ড ঠান্ডা। এমন পরিস্থিতিতে সকালে ছাদে ঘুড়ি ওড়ানো শরীরে সূর্যের আলো জোগায়, যা ভিটামিন ডি-এর ঘাটতি মেটাতে সাহায্য করে। ভিটামিন ডি শরীরের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এর ঘাটতির কারণে হাড় ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল হয়ে যেতে পারে। ভিটামিন ডি সূর্যের আলো থেকে সবচেয়ে বেশি পাওয়া যায়, তবে শীতের মরসুমে সূর্যের আলো কম থাকে এবং আজকাল মানুষ রোদে কম সময় কাটায়। এমতাবস্থায় মকর সংক্রান্তিতে ঘুড়ি উড়িয়ে শরীরে সূর্যের আলো ও ভিটামিন ডিয়ের অভাব পূরণ হয়।
দ্বিতীয় কারণ হল ঘুড়ি ওড়ানোর সময় শারীরিক পরিশ্রম হয়, যার ফলে আমাদের শরীর সক্রিয় থাকে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও শক্তিশালী হয়। শীতের মরসুমে সূর্যের আলো না থাকায় মেজাজও বেশ খারাপ থাকে। এমন পরিস্থিতিতে, ঘুড়ি ওড়ানো মেজাজকে উন্নত করে, যা আমাদের মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য উপকারি।
আরও পড়ুন: (Diabetes and Pulses: সব ডাল ডায়াবিটিসে ভালো নয়, জেনে নিন কোনটিতে উপকার আর কোনটিতে ক্ষতি)
ঘুড়ি ওড়ানোর সময় সতর্ক থাকুন
- নিরাপত্তায় খেয়াল রাখুন- ঘুড়ি ওড়ানোর সময় নিরাপত্তার যত্ন নেওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বৈদ্যুতিক তার থেকে দূরে থাকুন এবং ছাদে ঘুড়ি ওড়ানোর সময় ধারে যাবেন না।
- অন্যকে সম্মান করুন- ঘুড়ি ওড়ানোর সময়, অন্যের সম্পত্তির ক্ষতি করবেন না।
- পরিবেশের যত্ন নিন- ঘুড়ি ওড়ানোর পর ঘুড়ির সুতো কোথাও ফেলবেন না। নিরাপদে ডাস্টবিনে ফেলে দিন।