মানসিক অবসাদ এমন একটি সমস্যা, যা এখন গ্রাস করছে প্রায় প্রত্যেক মানুষকে। ইঁদুর দৌড়ের লড়াই লড়তে গিয়ে কোথাও যেন মানুষ একা হয়ে যাচ্ছে, যা থেকে তৈরি হচ্ছে একাকীত্ব। দীর্ঘদিনের এই একাকিত্বে ভুগতে ভুগতে একসময় শরীরে তৈরি হচ্ছে একের পর এক সমস্যা। মানসিক অবসাদের ফলে যে রোগের ঝুঁকি সবথেকে বেশি বেড়ে যায় সেটি হল উচ্চ রক্তচাপ বা হাই ব্লাড প্রেসার।
হাই ব্লাড প্রেসারকে ‘নীরব ঘাতক’ বলা হয় কারণ চট করে আপনি এই রোগের লক্ষণ বুঝতে পারবেন না। তবে আপনার যদি অনিয়মিত হৃদস্পন্দন, তালু ঘেমে যাওয়ার সমস্যা, বুক ধরফর করার মত সমস্যা থাকে তাহলে বুঝতে হবে আপনার হাই ব্লাড প্রেসার হয়েছে। এই মানসিক চাপ আর হাই ব্লাড প্রেসার, ২ মিলে সমস্যা আরো জটিল করতে পারে তাই প্রথমেই আপনাকে মানসিক স্বাস্থ্যের দিকে নজর দিতে হবে।
(আরো পড়ুন: খালি পায়ে সুইজারল্যান্ডের রাস্তায় মিলিন্দ সোমান, ৩ ডিগ্রি তাপমাত্রায় করলেন জগিং! এর উপকারিতা জানেন?)
মূলত অস্বাস্থ্যকর খাদ্যের অভ্যেস, অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন, একাকীত্ব এই সমস্ত ডেকে নিয়ে আসে মানসিক অবসাদকে। মানসিক অবসাদের হাত থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য প্রতিদিনের জীবনে নিয়ে আসতে হবে মাত্র ৮টি পরিবর্তন। এই পরিবর্তনগুলি শুধু আপনার মনকে শান্ত করবে তা নয়, আপনার শারীরিক সমস্যাগুলোও দূর করবে।
ধ্যান: প্রতিদিন সকালে উঠে কয়েক মিনিট ধ্যান করুন। ধ্যান অর্থাৎ মেডিটেশন আপনার মনকে শান্ত করবে এবং মানসিক অবসাদ থেকে মুক্তি দেবে আপনাকে।
নিয়মিত ব্যায়াম: মানসিক চাপ কমানোর জন্য প্রতিদিন অন্ততপক্ষে কিছুক্ষণ শারীরিক কসরত করা প্রয়োজন। প্রতিদিন আধ ঘন্টা যোগ ব্যায়াম, হাঁটাহাঁটি অথবা জগিং করতে স্ট্রেস কমিয়ে ফেলতে পারেন।
(আরো পড়ুন:টুনা মাছে ভরা কালো ফুচকা! এ কেমন স্বাদের খাবার খাচ্ছে মানুষ? ভিডিয়ো দেখে অবাক নেটিজেন)
স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া: ফল, সবজি, গোটা শস্য এবং চরবিহীন প্রোটিনের মাধ্যমে নিজের মানসিক অবসাদের মাত্রা কমিয়ে ফেলতে পারেন। তবে প্রতিদিনের খাবার থেকে বর্জন করতে হবে লবণ এবং ক্যাফাইন জাতীয় খাবার। এগুলি রক্তচাপের মাত্রা বাড়ায় এবং মানসিক অবসাদ তৈরি করে।
ডিপ ব্রেথ: প্রতিদিন কিছুক্ষণ গভীরভাবে প্রশ্বাস নিয়ে নিঃশ্বাস ছাড়ার চেষ্টা করুন। সারাদিনের ১০ মিনিট যদি আপনি এই কাজ করতে পারেন তাহলে আপনার স্ট্রেস লেভেল অনেক কমে যাবে।
মনোবিদের সাহায্য নিন: কোনও কারনে যদি আপনার মানসিক চাপ তৈরি হয় তাহলে মনোবিদের সাহায্য নিন। এমন কিছু মানুষের সঙ্গে কথা বলুন যারা আপনার কথা শুনবে এবং আপনাকে ভরসা করবে।
ধূমপান এবং অ্যালকোহল এড়িয়ে চলুন: শুধু মানসিক চাপ কমানোর জন্য নয়, নিজেকে সুস্থ রাখার জন্য ধূমপান এবং অ্যালকোহল থেকে দূরে থাকুন।
পর্যাপ্ত ঘুম দিন: নিজেকে মানসিকভাবে সুস্থ রাখার জন্য কমপক্ষে ৮ ঘন্টা ঘুমোন। যতই কাজ থাকুক না কেন প্রতিদিন একটি নির্দিষ্ট সময়ে ঘুমিয়ে পড়ুন এবং সকালে তাড়াতাড়ি উঠার চেষ্টা করুন।
পরিবারকে সময় দিন: সারাদিনে যতই ব্যস্ততা থাকুক না কেন, কিছু ঘনিষ্ঠ বন্ধু বান্ধব বা পরিবারকে সময় দেওয়ার চেষ্টা করুন। মনে রাখবেন, আপনার ঘনিষ্ঠ মানুষরাই আপনার কঠিন সময়ে আপনার পাশে থাকবে।