চাঁদের বয়স অনেক বেশি। অতীতে বিজ্ঞানীরা চাঁদের বয়স সম্পর্কে যা অনুমান করেছিলেন, সেই তুলনায় ১০০ মিলিয়ন বছর বেশি বয়সী হল পৃথিবীর উপগ্রহ চাঁদ। চাঁদের পৃষ্ঠ থেকে নিয়ে আসা শিলাগুলির উপর ভিত্তি করে নতুন গবেষণা এমনই ধারণা দিয়েছে। নেচারে প্রকাশিত এই গবেষণায় বলা হয়েছে যে প্রায় ৪:৩৫ বিলিয়ন বছর আগে, চাঁদের পৃষ্ঠ 'রিমেলটিং' প্রক্রিয়ার কোপে পড়েছিল। যা এর শিলাগুলিকে বাস্তবের চেয়ে অনেক ছোট করে দেখায়।
আরও পড়ুন: (শীতে চুল পড়া ও খুশকির সমস্যায় ভুগছেন? এই সব ঘরোয়া উপাদানেই চুল হবে মজবুত ও সুন্দর)
রিমেল্টিং প্রক্রিয়া আসলে কী
'রিমেলটিং' প্রক্রিয়াটি ঘটে যখন চাঁদের মতো একটি গ্রহ বা চাঁদের পৃষ্ঠ প্রচণ্ড গরম হয়ে উঠে গলে যেতে শুরু করে। আগ্নেয়গিরি বা উপগ্রহের অভ্যন্তরে অন্যান্য শক্তির কারণে এমনটি ঘটতেই পারে। তবে, পৃষ্ঠটি কিছু পরিমাণে গলে যাওয়ার পরে আবার শক্ত হয়ে যায়, তখনই এটি শিলাগুলিকে তার আগের তুলনায় ছোট করে দেওয়ার ক্ষমতা রাখে। আর বিজ্ঞানীরা মনে করেন, চাঁদের এই গলে যাওয়ার ঘটনাটি প্রায় ৪.৩৫ বিলিয়ন বছর আগে ঘটেছে, যার দরুণ চাঁদের আসল বয়স নিয়ে বিজ্ঞানীদের মধ্যে সংশয় থেকেই গিয়েছে। বিজ্ঞানীরা চাঁদের পাথরের বয়স পরিমাপ করার পদ্ধতিকে পরিবর্তন করেছে।
তাহলে চাঁদের বয়স কত হতে পারে
সৌরজগৎ শুরু হওয়ার পরপরই প্রায় ৪.৫ বিলিয়ন বছর আগে চাঁদ গঠিত হয়েছিল, এমনটাই ধারণা দেয় লুনার জিরকন নামক চাঁদের বিরল খনিজগুলিও। এটি আসলে প্রাথমিক সৌরজগতের মডেলগুলির সঙ্গে অনেক ক্ষেত্রেই মিলে যায় এই মডেলগুলো। আর তা দেখেই বিজ্ঞানীরা মনে করছেন যে সৌরজগতের বেশিরভাগ বড় বস্তুগুলি প্রায় ৪.৪ বিলিয়ন বছর আগে গঠিত হয়েছিল।
আবার ক্যালিফোর্নিয়া ইউনিভার্সিটির সান্তা ক্রুজের গ্রহ বিজ্ঞানী ফ্রান্সিস নিম্মো বলেছেন যে সৃষ্টির প্রথম দিকে চাঁদের প্রতি পৃথিবীর টান চাঁদে বড় পরিবর্তন এবং প্রচুর তাপ সৃষ্টি করতে পারে। এর দরুণই হয়ত 'রিমেলটিং' প্রক্রিয়াটি ঘটে এবং চাঁদের বয়সের তুলনায় শিলাগুলি ছোট দেখায়। বৃহস্পতির চাঁদ আইওতে একই ঘটনা নজরে এসেছে।
আরও পড়ুন: (HT Bangla Exclusive: নয়া যন্ত্রে বিপদ বেশি? কীভাবে কানের বারোটা বাজাচ্ছে ইয়ারপড, নেকব্যান্ড, আলোচনায় চিকিৎসক)
এরই পাশাপাশি জানা গিয়েছে, চাঁদের দূরের দিকটি আরও ভালোভাবে অন্বেষণ করে চাঁদের নমুনা নিয়ে আসবে চিনের আসন্ন চ্যাং'ই ৬ মিশন। এমন পরিস্থিতিতে নিম্মো আরও বলেন যে চাঁদের আরও নমুনা পাওয়া গেলে এই ফলাফলগুলির আরও গভীরে গিয়ে সবটা জানা সম্ভব হবে। ভবিষ্যতের কম্পিউটার মডেলগুলিও অধ্যয়ন করবে যে কীভাবে জোয়ারের উত্তাপ চাঁদের ভূতত্ত্বকে প্রভাবিত করে।