প্রায় ৪,০০০ বছরের পুরনো একটি শহরের সন্ধান পেলেন প্রত্নতাত্ত্বিকরা। সৌদি আরবের একটি মরুভূমিতে লুকিয়ে থাকা এই অতি প্রাচীন শহরের আবিষ্কার দেখায়, কীভাবে সেই সময়ের জীবন ধীরে ধীরে যাযাবর থেকে শহুরে জীবনযাত্রায় পরিবর্তিত হয়েছে।
গবেষকরা দাবি করেছেন যে উত্তর-পশ্চিম সৌদিতে পাওয়া এই প্রাচীন শহরের নাম আল-নাতাহ। জানা গিয়েছে, এই শহরটি দীর্ঘকাল ধরে খাইবারের প্রাচীরে ঘেরা মরুদ্যানের আড়ালে লুকিয়ে ছিল। প্রাচীনকালেও এই অঞ্চলে সভ্যতা ছিল উন্নত। ফরাসি প্রত্নতাত্ত্বিক গুইলাম শার্লক্সের নেতৃত্বে এই গবেষণা করা হয়েছে। তারপর প্লাস ওয়ান নামের একটি জার্নালে এই গবেষণার বিস্তারিত প্রকাশিতও হয়েছে।
আরও পড়ুন: (Sleep Divorce: রোম্যান্সের অভাবে বাড়ছে বিপদ, সঙ্গীর চেয়ে প্রিয় এখন অন্য কিছু! কী এই স্লিপ ডিভোর্স?)
প্রতিবেদন অনুসারে, খাইবারের মরুভূমি অঞ্চলের এই প্রাচীন শহরে ছিল ৫০ টিরও বেশি বাড়ি। ১৪.৫ কিলোমিটার দীর্ঘ একটি বিশাল প্রাচীরের সন্ধানও মিলেছে। ব্রোঞ্জ যুগের শুরুর দিকে, যাযাবর থেকে বসতি গড়ার জীবনধারায় মানুষের চলে আসার প্রমাণ হল এই আবিষ্কার।
প্রায় ৫০০ জন এই শহরে বাস করতেন
গবেষকরা বলছেন যে তখনকার দিনে এটি একটি বড় শহর ছিল। এখানে প্রায় ৫০০ জন বাস করতেন। আদি ব্রোঞ্জ যুগে ২৪০০ থেকে ২০০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দে ২.৬ হেক্টরের বসতি স্থাপন করা হয়েছিল এবং প্রায় ১৫০০ থেকে ১৩০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ পর্যন্ত জনবসতি ছিল। তবে, হাজার বছর পর তা জনশূন্য হয়ে পড়ে। যদিও শহরটির বাসিন্দারা কেন শহর ছেড়েছিলেন, তা জানা যায়নি।
আরও পড়ুন: (দিনে কতটা নুন খাওয়া উচিত? WHO-র এই উপদেশ হার্ট-কিডনির রোগ থেকে বাঁচাবে আপনাকে)
এই শহরগুলি ছিল মেসোপটেমিয়া বা মিশরের শহরগুলির তুলনায় অনেকটাই ছোট। উত্তর-পশ্চিম আরবে এই শহরের উন্নতি হয়েছিল ধীরগতিতে। কারণ গবেষকরা বলেছেন যে সেই সময়ে উত্তর-পশ্চিম আরবকে একটি অনুর্বর মরুভূমি হিসাবে দেখা হতো।
শহরের বাড়িগুলি একইভাবে তৈরি করা হয়েছিল এবং বাড়িগুলোর পাশে ছোট ছোট রাস্তাও ছিল। গবেষকরা মনে করেন যে ব্রোঞ্জ যুগে, উত্তর-পশ্চিম আরবে প্রধানত যাযাবর গোষ্ঠীর বসবাস ছিল, যারা পশু পালন করতেন। দূর-দূরান্তের বাণিজ্যও করতে যেতেন। এখানে অনেক কবরস্থানও ছিল। এখানে পাওয়া কবরস্থানের ভেতরে কুড়ুল, খঞ্জর এবং এগেট পাথর পাওয়া গিয়েছে। এতদিন আগের পৃথিবীতেও উন্নত সমাজের ইঙ্গিত দেয় এই আবিস্কার।