তাঁর ফেসবুক প্রোফাইল খুললে প্রথমেই চোখে পড়বে স্কুলের নামটি। গাংনাপুর হাই স্কুল। যদিও তার আগে তিনি স্থানীয় গোপীনগর প্রাইমারি স্কুলে পড়াশোনা করতেন। এক সময়ে এই স্কুলে পর্যাপ্ত ক্লাসঘর ছিল না। তাই গাছতলাতেই বসত ক্লাস। আর সেখানেই ক্লাস করত ছোট্ট ছেলেটি। এ বছর সেই ‘ছেলেটি’ই মনোনয়ন করবে একজন নোবেল জয়ী।
না, সেই ছোট্ট ছেলেটি এখন আ মোটেই ছোট নেই। তিনি এখন বেশ নামজাদা বাঙালি বিজ্ঞানী। বাস নরওয়ের রাজধানী অসলো শহরে। অসলো বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসাবিজ্ঞানের গবেষক অসীম কে দত্তরায়। অতি বড় এক সম্মান তাঁকে দেওয়া হয়েছে নোবেল কমিটির তরফে।
বিজ্ঞানচর্চায় অসীম কে দত্তরায়ের কৃতিত্ব কী?
রক্ত জমাট বাঁধা আটকানোর জন্য বিশেষ ধরনের ওষুধ নিয়ে অসীমবাবুর বহু কাজ রয়েছে। মূলত টমেটো থেকে তিনি এমন এক ধরনের উপাদান পান যা অনুচক্রিকার কাজ সাময়িকভাবে আটকাতে পারে। তাঁর এই আবিষ্কারকে Fruitflow নামে বিজ্ঞানজগত চেনে।
এছাড়াও ভ্রুণের মস্তিষ্ক গঠন নিয়েও তাঁর উল্লেখযোগ্য কাজ রয়েছে। সব মিলিয়ে তিনি আন্তর্জাতিক বিজ্ঞানচর্চা জগতে উল্লেখযোগ্য নাম।
অসীম কে দত্তরায়ের যাত্রাপথ:
১৯৮১ সালে অসীমবাবু চিকিৎসাবিজ্ঞানে উচ্চতর শিক্ষার জন্য আমেরিকা যান। তার পরে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপক, মুখ্য বৈজ্ঞানিকের ভূমিকা পালন করেছেন। ২০০১ সাল থেকে তিনি অসলো বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসাবিজ্ঞান বিভাগে অধ্যাপনা করছেন। তার নামে পাঁচটি আন্তর্জাতিক পেটেন্ট রয়েছে।
দেশের সঙ্গে অসীম কে দত্তরায়ের যোগ:
স্থানীয় মানুষ সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, প্রায় প্রতি বছরই একবার করে গ্রামের বাড়িতে আসেন অসীমবাবু। ঘুরে যান ছোটবেলার স্কুল বাড়িটি থেকেও। তবে গত দু’বছর করোনার কারণে তিনি বাড়িতে আসতে পারেননি।
নোবেল কমিটি থেকে পাওয়া সম্মানটির অর্থ:
এবার নোবেল যাঁদের দেওয়া হবে, তাঁদের মনোনয়নের একটি তালিকা তৈরি হবে। সেই তালিকায় অসীমবাবু একজনকে মনোনয়ন করতে পারবেন। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অসীমবাবুকে যে সম্মান দেওয়া হয়েছে, সেটি একজন বিজ্ঞানীকে তাঁর কাজের স্বীকৃতি দেওয়াও বটে। এটি কোনও অংশেই নোবেল পুরস্কার পাওয়ার থেকে কম নয়।