প্রতি বছর ১ থেকে ৭ সেপ্টেম্বর পালিত হয় জাতীয় পুষ্টি সপ্তাহ। পুষ্টিকর উপাদান ও তাদের উপকারিতা সম্পর্কে সচেতনতা গড়ে তোলাই এই সপ্তাহ পালনের মূল উদ্দেশ্য। সুস্বাস্থ্যের জন্য শরীরে সমস্ত পুষ্টিকর উপাদানের উপস্থিতি জরুরি। এখানে এমন কয়েকটি খাদ্যের বিষয় জানানো হল, যা পুষ্টিতে সমৃদ্ধ।
স্যালমন মাছ- সমস্ত মাছে এক ধরনের পুষ্টিকর উপাদান থাকে না। স্যালমন ও অন্যান্য ফ্যাটি মাছে প্রচুর পরিমাণে ওমেগা ৩ ফ্যাটি অ্যাসিড থাকে। শারীরিক কার্যকারিতা বজায় রাখার জন্য ওমেগা ৩ ফ্যাটি অ্যাসিড গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। একাধিক গভীর রোগের আশঙ্কা কম করে এটি। ফ্যাটি অ্যাসিড ছাড়া এতে অন্যান্য অনেক পুষ্টিকর উপাদান থাকে। ১০০ গ্রাম স্যালমনে ২.৮ গ্রাম ওমেগা ৩, ম্যাগনেশিয়াম, পটাশিয়াম, ভিটামিন বি উপস্থিত থাকে। সপ্তাহে এক বা দুবার ফ্যাটি ফিশ অবশ্যই খাবেন।
রসুন- রসুন পুষ্টির উপাদানে ভরপুর। এতে ভিটামিন সি, বি১ ও বি৬, ক্যালশিয়াম, পটাশিয়াম, কপার, ম্যাঙ্গানিজ ও অধিক পরিমাণে সেলেনিয়ম থাকে। রসুনে এলিসিন নামক লাভকারী সালফার যৌগও থাকে প্রচুর পরিমাণে। নানান সমীক্ষা থেকে জানা গিয়েছে যে, উচ্চ রক্তচাপের পাশাপাশি ব্যাড কোলেস্টেরলকেও কম করে এলিসিন। এটি হৃদরোগের ঝুঁকি কম করে। রসুনে নানান ধরনের ক্যান্সার মোকাবিলার উপাদনও উপস্থিত। কাঁচা রসুনের অ্যান্টি ব্যাক্টেরিয়াল ও অ্যান্টি ফাঙ্গাল গুণ আছে।
আলু- একটি বড় আলুতে পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, আয়রন, কপার ও ম্যাঙ্গানিজ থাকে অধিক পরিমাণে। এতে ভিটামিন সি, ভিটামিন বি উপস্থিত থাকে। শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় সমস্ত পুষ্টি উপাদান আলুতে উপস্থিত থাকে। অন্য খাবারের তুলনায় সেদ্ধ আলু অনেকক্ষণ পেট ভরে রাখে।
ব্লুবেরি- এতে ক্যালরির পরিমাণ কম এবং ভিটামিন, মিনারেল ও অ্যান্থোসায়নিনের মতো অ্যান্টি অক্সিডেন্টে সমৃদ্ধ থাকে। রক্ত চলাচলে বাধা দূর করে এবং সমস্ত গভীর রোগ থেকে রক্ষা করে এটি। সমীক্ষা অনুযায়ী স্মৃতি শক্তি বৃদ্ধি করতে এবং ক্যান্সার মোকাবিলায় ব্লুবেরি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
ডিমের কুসুম- ডিমের কুসুমে সবচেয়ে বেশি পুষ্টিকর উপাদান থাকে। এতে ভিটামিন, মিনারেল, কোলিন-সহ নানান পুষ্টিকর উপাদান থাকে। এতে অধিক পরিমাণে ল্যুটিন, জ্যাক্সেন্থিনের মতো অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে যা চোখকে ভালো রাখে। এর ফলে চোখের ছানি ও অন্যান্য সমস্যা কমে। ডিমে সবচেয়ে বেশি প্রোটিন ও হেল্দি ফ্যাট থাকে।
ডার্ক চকোলেট- উচ্চ পরিমাণে কোকো সমৃদ্ধ ডার্ক চকোলেট সর্বাধিক পুষ্টিকর। এতে ফাইবার, আয়রন, ম্যাগনেশিয়াম, কপার ও ম্যাঙগানিজে ভরপুর। এতে উপস্থিত অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শরীরের পক্ষে উপকারী। সমীক্ষা অনুযায়ী ডার্ক চকোলেট রক্ত চলাচল উন্নত করে, উচ্চ রক্তচাপ কম করে এবং মস্তিষ্কের কার্যকারিতা বৃদ্ধি করে। হৃদরোগের সম্ভাবনাও কম করে এটি। তাই নিয়মিত ডার্ক চকোলেট খাওয়া উচিত।
গোটা অন্ন- গোটা অন্নে ফ্যাটের পরিমাণ খুব কম থাকে। তবে এগুলি ফাইবার ও কার্বোহাইড্রেটে ভরপুর। অন্ন খেলে দীর্ঘ সময় পর্যন্ত পেট ভরে থাকে। নিজের খাদ্য তালিকায় ওটস, পাউরুটি, ব্রাউন রাইস, জব, কিওনা, গোটা ভুট্টা ও গমের আটার রুটি অন্তর্ভূক্ত করুন।
বিনস- এতে সলিউবল ফাইবার উপস্থিত, যা হৃদয়ের পক্ষে খুবই ভালো। এটি শরীরের অতিরিক্ত কোলেস্টেরল কম করে। বিনসে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট থাকে। এতে অন্য সবজির তুলনায় বেশি পরিমাণে প্রোটিন থাকে। এ ছাড়াও গাজর, ব্রকোলি, সবুজ শাকসবজি অবশ্যই খাবেন।