গর্ভবতী মহিলাদের নিজের বিশেষ যত্ন নিতে হয়। বাড়িতে থাকুন বা বাইরে কোথাও, নিজের যত্নে বিন্দুমাত্র গাফিলতি হতে দেওয়া যাবে না। গর্ভাবস্থার ৯ মাসে অনেক বার যাত্রা করতে হতে পারে। কিন্তু এ সময় কোনও গাফিলতি হতে দেওয়া চলবে না। আজ, ১১ এপ্রিল যে ন্যাশনাল সেফ মাদারহুড ডে পালিত হয়, তার প্রধান উদ্দেশ্যই হল, স্বাস্থ্যকর গর্ভাবস্থা ও প্রসবের বিষয় সচেতনতা গড়ে তোলা, আবার স্তন্যদানকারী মহিলাদের সচেতন করাও এই দিবস পালনের অন্যতম উদ্দেশ্য। এই দিন উপলক্ষে জেনে নিন প্রেগনেন্সির সময় ট্রাভেল করা উচিত কি না। আবার যাত্রার সময় কী সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে তা-ও জেনে নিন।
গর্ভাবস্থায় কী ট্রাভেল করা উচিত?
গর্ভাবস্থায় ট্রাভেল করায় কোনও প্রতিবন্ধকতা নেই। তবে যাঁদের কোনও সমস্যা রয়েছে, তাঁদের এই যাত্রা করা এড়িয়ে যাওয়া উচিত।
কী কী সমস্যা দেখা দিতে পারে?
১. প্রথম তিন মাস ও ন’মাসেও ঘুরতে যাওয়া উচিত নয়। কারণ এই সময়কালে সর্বাধিক ঝুঁকি থাকে। এ সময় বেড রেস্টের পরামর্শ দিয়ে থাকেন চিকিৎসকরা। ট্রাভেলিংয়ের সময়ে বেশি হলে, পথ খারাপ হলে, আবার মেডিক্যাল সুবিধার অভাব থাকলে এ সময় গর্ভাবস্থায় প্রভাব বিস্তার করতে পারে।
২. বাড়িতে থাকলে নিয়মিত ব্যায়াম করেন, সুষম আহার গ্রহণ করেন। কিন্তু বাইরে ঘুরতে গেলে এই রুটিন মেনে চলা সম্ভব হয় না। সঠিক পুষ্টির জোগান না-পেলে ঘাটতি দেখা দিতে পারে। যাত্রার সময় সুস্থ থাকতে হলে খাওয়া-দাওয়ার যত্ন নেওয়া জরুরি। বিশ্রাম করুন। হোটেলে হাল্কা ব্যায়াম করে নিন। বেশি করে তরল পদার্থ গ্রহণ করুন।
৩. গর্ভাবস্থায় বমির সমস্যা সবচেয়ে সাধারণ। এ সময় শরীরে এমন কিছু হরমোনের পরিমাণ বেড়ে যায়, যা গা গোলানোর কম করার শারীরিক ক্ষমতাকে দমিয়ে দেয়।
৪. গর্ভাবস্থার প্রথম তিন মাসে যাত্রা করবেন না। তা না-হলে মিসক্যারেজের আশঙ্কা বাড়তে পারে।
নিরাপদে কী ভাবে যাত্রা করবেন?
১. শরীরে জলের অভাব হতে দেবেন না। বিমানযাত্রা করলে আর্দ্রতার অভাবে ডিহাইড্রেশানের সম্ভাবনা বৃদ্ধি পায়। পা ছড়িয়ে বসবেন।
২. গাড়িতে যাত্রা করলে পেটের নীচে সিটবেল্ট বাঁধবেন। গাড়ির সামনে সিটে বসুন ও জানালা খোলা রাখুন। রক্তচাপ সাধারণ রাখার জন্য ফোলাভাব থেকে বাঁচার জন্য পা ছড়িয়ে বসুন ও পা দোলাতে থাকুন। জলজাহাজে যাত্রা করলে গা গোলানো ও মর্নিং সিকনেস বেড়ে যেতে পারে। জাহাজে ও বিমানে কোনও চিকিৎসা সুবিধা রয়েছে কি না, সে বিষয়ে যাচাই করে নিন।
৩. গর্ভাবস্থায় দ্বিতীয় ত্রৈমাসিককে গর্ভবতী মহিলাদের যাত্রার জন্য নিরাপদ মনে করা হয়। কারণ প্রথম তিন মাস পর মর্নিং সিকনেস, ক্লান্তি, বমির মতো সমস্যা কমে যায়।
৪. সংক্রামক রোগ ছড়িয়ে রয়েছে এমন কোনও স্থানে যাবেন না।
৫. প্রেগনেন্সিতে বিমান যাত্রাকে নিরাপদ মনে করা হয় না। তবে অত্যন্ত দরুরি হলে গর্ভাবস্থার ১৪ থেকে ২৮ সপ্তাহের মধ্যে এমন করুন। এই যাত্রার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে ভুলবেন না।