আধুনিক চিকিৎসা ব্যবস্থার উন্নতি হওয়ার কারণে বহু মানুষই ক্যানসার রোগ থেকে মুক্তি পাচ্ছেন। তবুও ক্যানসার রোগ এই মুহূর্তে সবচেয়ে বেশি প্রাণঘাতি। ক্যানসারের কোষ যখন রক্তে মিশে গিয়ে শরীরের অন্যান্য অঙ্গে ছড়িয়ে পড়ে তখন এই রোগ ভয়ানক হয়ে ওঠে। সম্প্রতি এক গবেষণায় প্রকাশিত হয়েছে, স্তন ক্যানসারে আক্রান্ত রোগীদের ঘুমন্ত অবস্থায় ক্যানসারের কোষ সবচেয়ে বেশি রক্তে প্রবেশ করে। গবেষণাটি চালিয়েছেন, Swiss Federal Institute of Technology এবং the University of Basel-এর গবেষকরা।
যখন ক্যানসারে আক্রান্ত টিউমারের কোষগুলি রক্তের মাধ্যমে শরীরের অন্যত্র ব্যাপক হারে ছড়িয়ে পড়ে সেই অবস্থাকে বলা হয় স্টেজ ৪ ক্যানসার। (আরও পড়ুন: চিকিৎসক বলে দিয়েছিলেন, আয়ু আর কয়েক মাস! নতুন ওষুধে ক্যানসার সারিয়ে সুস্থ রোগী)
Nature পত্রিকায় প্রকাশিত এই গবেষণায় বলা হয়েছে, ক্যানসার কোষের উৎপত্তি বা দ্রুত ছড়িয়ে পড়া ঠিক কোন কোন বিষয়ের উপর নির্ভর করে তার সঠিক ব্যাখা পাওয়া যায় না। তবে এই গবেষণায় মানুষের শারীরতত্ত্বের এমন কিছু বিষয়ের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে যা ক্যানসার চিকিৎসায় খুব কার্যকর হতে পারে। (আরও পড়ুন: হস্তমৈথুন করলে কমে ক্যানসারের ঝুঁকি, গাঁটের ব্যথা!)
গবেষকরা জানিয়েছেন, মেলাটনিন, টেস্টোস্টেরন ও গ্লুকোকর্টিকয়েডের মতোcircadian rhythm হরমোনগুলি ক্যানসারে আক্রান্ত টিউমারের অবস্থা অনেকটাই নির্ধারণ করে।Circadian rhythm হরমোনগুলি মানুষের মানসিক, শারীরিক ও আচরণগত পরিবর্তনকে প্রভাবিত করে।
গবেষকরা লক্ষ করেছেন, মানুষের শরীর সক্রিয় থাকার সময় ক্যানসার আক্রান্ত কোষগুলি অনেকটাই কম বৃদ্ধি পায়। প্রথমে ইঁদুরের উপর গবেষণা করে এই বিষয়টি জানা যায়। পরে ৩০ জন স্তন ক্যানসারে আক্রান্ত মহিলার উপর এই গবেষণা চালানো হয়। দেখা যায় যে ক্যানসার কোষগুলির সক্রিয়তা রোগীদের ঘুমন্ত অবস্থায় অনেকটাই বেড়ে গিয়েছে।
গবেষকদলের অন্যতম সদস্য Nicola Aceto বলেছেন, এই গবেষণার ফলাফল দেখে তিনি অবাক হয়েছেন। কারণ চিকিৎসক মহলে এতদিন ধারণা ছিল দিনের যে কোনও সময়ে ক্যানসারের কোষ সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়তে পারে।
তবে গবেষকরা বলেছেন, দিনে নির্দষ্ট পরিমাণে ঘুম কখনওই শরীরের পক্ষে ক্ষতিকারক নয়। তাঁরা বলেছেন, ক্যানসার কোষের সক্রিয়তা কেবলমাত্র ঘুমের উপর নয়, হরমোনের পরিবর্তনের উপরেও নির্ভর করে। সুতরাং রোগীদের ঘুম এড়িয়ে চলার কোনও প্রয়োজন নেই।