প্রায় ১০,৫০০ থেকে ১০,১০০ বছর আগের কথা। সবে মাত্র চাষাবাদ শিখছে মানুষ। দল বেঁধে থেকে শিকার করে বাঁচার পরিবর্তে শুরু হয়েছে চাষবাস। সেই সময়ই লাল শিয়াল এবং বন্য বিড়ালের মতো ছোট মাংসাশী প্রাণী তাদের উল্লেখযোগ্য খাদ্য ছিল। প্রাচীনকালকে আরও গভীরভাবে জানার জন্য ইস্রায়েলের আহিহুদ নামক একটি প্রাচীন স্থানে খনন করা হয়েছিল। সেখান থেকেই জানা গিয়েছে এমনটাই। এটাও দেখা গিয়েছে যে লেভান্টের আদিবাসীরা খাদ্যের পাশাপাশি পশমের জন্য লাল শেয়াল এবং বনবিড়ালের মতো ছোট মাংসাশী প্রাণীর উপরই নির্ভর করত।
আরও পড়ুন: (Essay and Speech on Netaji: স্কুলে নেতাজিকে নিয়ে কিছু বলতে হবে? এখান থেকে একবার পড়ে নিলেই যথেষ্ট)
আহিহুদ থেকে আর কী কী জানা গিয়েছে
আহিহুদ সাইটে, গবেষকরা ২০১২ এবং ২০১৩ সালে খননকার্য চালিয়েছিল। সেই সময় তাঁরা প্রচুর প্রাণীর হাড়ও খুঁজে পেয়েছিলেন। ১,২৪৪টি প্রাণীর অবশিষ্টাংশের মধ্যে অনেকগুলি লাল শিয়াল, বিচ মার্টেন, মিশরীয় মঙ্গুস এবং ইউরোপীয় ব্যাজারের মতো ছোট মাংসাশী প্রাণীরও হাড়ও পাওয়া গিয়েছিল। এ প্রসঙ্গে প্রধান গবেষক ডক্টর শিরাদ গালমোর বলেছেন যে বিপুল সংখ্যক ছোট মাংসাশী প্রাণীর হাড় এবং তাদের উপর কাটার চিহ্নগুলি গবেষকদের আরও বুঝতে সাহায্য করেছে, এ থেকেই তাঁরা জানতে পারেন এই প্রাণীগুলিকে সে যুগে কীভাবে ব্যবহার করা হয়েছিল।
সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে যে ১২ শতাংশেরও বেশি লাল শেয়ালের হাড়ে এবং ১৯ শতাংশ বন্য বিড়ালের হাড়ে স্পষ্ট কাটা চিহ্ন রয়েছে, যা বড় বড় প্রাণী যেমন গজেল এবং খরগোশে পাওয়া যায় তার চেয়ে এই হার অনেক বেশি। এই চিহ্নগুলি দেখায় যে প্রাণীগুলির চামড়া সে যুগের মানুষ পরনের জন্য ব্যবহার করেছে এবং তাদের মাংস ছিল আদিম মানুষের জন্য অন্যতম খাদ্য। এমনকি কিছু হাড়ে পোড়া চিহ্নও ছিল, যা প্রমাণ করে যে সেগুলি আদিম মানুষের দল রান্না করেই খেত।
বলা বাহুল্য, এই ফলাফলগুলি এটাই তুলে ধরে যে ছোট মাংসাশী প্রাণীগুলো প্রারম্ভিক নিওলিথিক সমাজের জন্য কতটা গুরুত্বপূর্ণ ছিল। যদিও পূর্ববর্তী গবেষণায় গবেষকরা মনে করেছিলেন যে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এই প্রাণীগুলি তাদের পশমের জন্য ব্যবহার করা হত। কিন্তু নতুন গবেষণা সেই ধারণাই পাল্টে দিয়েছে। যদিও, এতেই সন্তুষ্ট নন তাঁরা। গবেষকরা তাই বলেছেন যে দক্ষিণ লেভান্টের অন্যান্য প্রাচীন স্থানে ছোট মাংসাশী প্রাণীর ভূমিকা সম্পর্কে জানার জন্য আরও গবেষণা করা প্রয়োজন।