করোনা নিয়ে বিপুল আলোচনা তো হচ্ছেই। ক্যানসারের মতো অসুখও প্রতি বছর বহু মানুষের প্রাণ কেড়ে নিচ্ছে। তা নিয়ে আলোচনা কম নয়। কিন্তু এরই মধ্যে নিঃশব্দে ঘাতকের কাজ করে চলেছে ম্যালেরিয়া। প্রতি বছর প্রায় ৫ লক্ষ মানুষের মৃত্যু হয় এই অসুখে। তাঁদের মধ্যে একটা বড় অংশ হল শিশুরা, যাদের বয়স ৫ বছরের কম।
ম্যালেরিয়ার চিকিৎসার জন্য নানা ধরনের ওষুধ রয়েছে বাজারে। এগুলির কোনও কোনওটা কারও কারও ক্ষেত্রে ম্যালেরিয়ার চিকিৎসায় খুবই কার্যকর। কিন্তু ম্যালেরিয়া অসুখটির জন্য যে প্যারাসাইট দায়ী, সেটি শরীরে আর সংক্রমণ ঘটাতে পারবে না, এমন কোনও উপায় এত দিন জায়া ছিল না। সংক্রমণ ঘটানোর পরে ওই ওষুধগুলি তা সারাতে সাহায্য করত।
এবার আসছে টিকা। যেটি ম্যালেরিয়ার সংক্রমণ হতেই দেবে না শরীরে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বা WHO-এর তরফে বলা হয়েছে, এটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত। বিজ্ঞান শেষ পর্যন্ত শিশুদের জন্য ম্যালেরিয়ার টিকাটি তৈরি করে ফেলল। বহু দিন আমরা এর অপেক্ষায় ছিলাম। এর সঠিক প্রয়োগ হলে প্রতি বছর হাজার হাজার শিশুর প্রাণ বাঁচবে।
ইতিমধ্যেই ঘানা, কেনিয়া এবং মালাউইয়ের ৮ লক্ষ শিশুর উপর এই টিকা প্রয়োগ করে আশানুরূপ ফল পাওয়া গিয়েছে। আগামী ৫ বছরের মধ্যে এই টিকা প্রয়োগ করে পৃথিবী থেকেই ম্যালেরিয়াকে অনেক কমিয়ে ফেলা যাবে বলেও আশা।
তবে এর আগেও ম্যালেরিয়ার টিকা তৈরি হয়েছে। সেই টিকায় খুব ভালো ফল পাওয়া যায়নি। ম্যালেরিয়া সংক্রমণের জন্য যে প্যারাসাইটটি দায়ী, এই প্রথম বার সেটিকে মারার মতো টিকা তৈরি করা হল। ফলে এটি বেশি কার্যকর হবে বলে মনে করছে বিজ্ঞানী মহল।
তবে শুধু এই টিকাই নয়, এর মাঝে ম্যালেরিয়ার অন্য একটি ওষুধ নিয়েও কাজ চলছে জোর কদমে। মূলত ক্যানসারের চিকিৎসায় প্রয়োগ হওয়া এই ওষুধটি খুব সফলভাবে মাত্র তিন দিনেই ম্যালেরিয়া সারিয়ে ফেলছে বলে দেখা গিয়েছে। ভবিষ্যতে বড়দের ম্যালেরিয়ার চিরিৎসায় এই ওষুধের প্রয়োগ বাড়তে পারে বলেও মনে করছেন চিকিৎসকরা।
গত বছরের অক্টোবর মাসে WHO-এর তরফে ম্যালেরিয়ার টিকাটির অনুমোদন দেওয়া হয়। তার পরেই আফ্রিকার যে দেশগুলিতে ম্যালেরিয়ার সংক্রমণ বেশি, সেখানে টিকাদানের কাজ শুরু হয়। আগামী দিনে বিশ্বের অন্যত্রও এই টিকা দেওয়ার কাজ শুরু হবে বলে জানা গিয়েছে।