ভারতে কোভিডের দ্বিতীয় স্রোতকে এগিয়ে নিয়ে গিয়েছিল ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট। এই ভয়াবহ ভ্যারিয়েন্টের প্রবল বিষ দংশনে প্রাণ হারিয়েছেন বহু মানুষ। দিনে দিনে ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছিল ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট। এরপর ২০২২ শুরুর আগে থএেকেই প্রকোপ বাড়ে ওমিক্রনের। তবে দ্বিতীয় স্রোতের মতো ওমিক্রন স্রোত সেভাবে ভয়াবহ রূপ নেয়নি। প্রশ্ন উঠছে কোভিডের এই দুই ভ্যারিয়েন্টের মধ্যে কোনটি ৫ বছরের নিচের শিশুদের জন্য ভয়াবহ? সাম্প্রতিক JAMA পেডিয়াট্রিক্স জার্নালে এই বিষয়ে উঠে এসেছে নানান তথ্য। দেখে নেওয়া যাক ডেল্টা নাকি ওমিক্রন, শিশুদের জন্য কোনটি বেশি ভয়াবহ।
গবেষণা কী বলছে?
কেস ওয়েস্টার্ন রিজার্ভ ইউনিভার্সিটির একটি গবেষণা বলছে,ওমিক্রন ডেল্টার থেকে ৬ থেকে ৮ গুণ বেশি সংক্রামক। গবেষণা আরও বলছে যে, ওমিক্রনে আক্রান্ত রোগীদের ডেল্টার চেয়ে ১৬ শতাংশ কম ঝুঁকি থাকে ইমার্জেন্সিতে ভর্তির ক্ষেত্রে। এছাড়াও মেকানিক্যাল ভেন্টিলেশনের ক্ষেত্রে ৮৫ শতাংশ ঝুঁকি কম থাকে ওমিক্রনের ক্ষেত্রে। গবেষণা বলছে, ১.৮ শতাংশ শিশু যারা ওমিক্রনে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। সেখানে ডেল্টায় আক্রান্ত ৩.৩ শতাংশ শিশুরা হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। গবেষণা নিয়ে অধ্যাপক পামেলা ডেভিস বলছেন, 'আমাদের গবেষণার সবচেয়ে বড় উপসংহার হল, ডেল্টার তুলনায় অনেক বেশি শিশুই ওমিক্রনে আক্রান্ত হয়েছে, তবে যে শিশুরা ওমিক্রনে আক্রান্ত তাদের ওপর গুরুতর কোনও প্রভাব পড়েনি ডেল্টা আক্রান্তদের তুলনায়।' তিনি বলছেন, শীতের দিকে আমেরিকায় বিভিন্ন হাসপাতালে শিশুদের কোভিড আক্রান্তের কেস বেড়ে যেতে দেখা গিয়েছিল। তাঁদের গবেষণার পরিসংখ্যান বলছে, আমেরিকায় ৬৫১, ৬৪০ জন শিশুর মধ্যে ২২,৭৭২ জন আক্রান্ত হয়ছে ওমিক্রনে, সেখানে ডেল্টায় আক্রান্তের সংখ্যা ৬৬,০০০ জন।
উঠছে নানান তথ্য
গবেষণার বিভিন্ন দিক থেকে উঠে আসছে যে পাঁচ বছরের নিচে যে শিশুরা ভ্যাকসিনের উপযুক্ত নয়, তাদের শরীরে রয়েছে করোনা রুখতে বিশেষ ধরনের প্রতিরোধ ক্ষমতা। SARS-CoV2 সংক্রমণের ক্ষেত্রে এদের আক্রান্ত হওয়ার হার অনেকটাই কম। দেখা গিয়েছে, অল্প কোমর্বিডিটি রয়েছে এমন দেড় বছর থেকে ১ বছর ৭ মাসের শিশুরা ওমিক্রন আক্রান্ত বেশি হয়েছে, ডেল্টার তুলনায়। গবেষণা বলছে, পাঁচ বছরের নিচের শিশুদের জন্য ডেল্টার তুলনায় ওমিক্রন অনেকটাই কম ভয়ঙ্কর। ওমিক্রনের বিপদ বাড়ানোর ক্ষমতা যেখানে ১৬ শতাংশ ,সেখানে ডেল্টায় ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার ঝুঁকি ৮৫ শতাংশ। যদিও কোভিডে আক্রান্ত হওয়ার পর শিশুর শরীরের মস্তিষ্ক, হার্ট, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার পরিস্থিতি কেমন থাকছে, তা নিয়ে এখনও কোনও স্পষ্ট ধারণা আসেনি।