প্রত্যেক বাবা-মাই চান তাদের সন্তান জীবনে অনেক এগিয়ে যাক। এখন সেই সময় চলে গেছে যখন শুধু শিক্ষাকে গুরুত্ব দেওয়া হতো। আজ, পড়াশোনার পাশাপাশি, খেলাধুলা এবং অন্যান্য সামাজিক দক্ষতায় আরও ভাল হওয়া সমান গুরুত্বপূর্ণ। এটাকে পরিবর্তিত সময়ের চাহিদা বলা যেতে পারে, যেখানে একটি বিষয়ে খুব ভালো হওয়ার চেয়ে অনেক বিষয়ে ভালো হওয়াকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়। সব মিলিয়ে আজ সময় এসেছে শিশুদের অলরাউন্ডার বানানোর। এটি শৈশব থেকেই শুরু হয়। এই প্রসঙ্গে, আজ আমরা আপনার জন্য কিছু প্যারেন্টিং টিপস নিয়ে এসেছি, এইগুলি মাথায় রেখে আপনি আপনার সন্তানকে সঠিকভাবে বড় করতে পারেন।
সন্তানের আগ্রহ চিহ্নিত করুন
প্রতিটি শিশু আলাদা এবং তার ব্যক্তিত্ব এবং আগ্রহও আলাদা। এমতাবস্থায় সন্তানের পছন্দ-অপছন্দ বুঝে তাকে সমাজের তৈরি ছাঁচে না বসানো অভিভাবকদের কর্তব্য। শিশুর সাথে বসে কথা বলুন, তার প্রতিভা চিনুন এবং তাকে একই দিকে উত্সাহিত করুন। আপনি যদি তার প্রতিদিনের রুটিনে তার প্রিয় জিনিসগুলিকে অন্তর্ভুক্ত করেন তবে শিশুটি তার সমস্ত কাজ আরও ভালভাবে করতে পারবে।
শিশুদের জীবনধারা উন্নত করুন
আপনি যদি জীবনের যে কোনও ক্ষেত্রে উন্নতি করতে চান তবে প্রথমে আপনার জীবনযাত্রায় পরিবর্তন আনা জরুরি। লাইফস্টাইলের মধ্যে শিশুর খাবার এবং জীবনযাত্রার মতো সমস্ত জিনিস অন্তর্ভুক্ত থাকে। ছোটবেলা থেকেই তাদের খাবার ভালো রাখা বাবা-মায়ের কর্তব্য। এতে ঘরে তৈরি পুষ্টিকর খাবার অন্তর্ভুক্ত করা উচিত। এ ছাড়া শিশুদের ঘুম ও জাগার সময়ও নির্ধারণ করতে হবে। এই ছোট স্বাস্থ্যকর অভ্যাসগুলো তাদের মানসিক ও শারীরিকভাবে সুস্থ রাখবে এবং জীবনে অনেক দূর নিয়ে যাবে।
শিশুদের বিভিন্ন কাজে সম্পৃক্ত করুন
আপনি যদি আপনার সন্তানকে একজন অলরাউন্ডার বানাতে চান, তবে সারাদিন একটি বিষয়ে ব্যস্ত থাকলে তা সম্ভব হবে না। অতএব, পিতামাতার দায়িত্ব সন্তানের রুটিন এমনভাবে তৈরি করা যাতে পড়াশোনা ছাড়াও বিভিন্ন ধরণের কাজ অন্তর্ভুক্ত থাকে। আপনার সন্তান যদি নাচ, গান, শিল্প বা যেকোনো খেলা পছন্দ করে, তাহলে তাকে এর ক্লাসে যোগদান করুন। তাকে নতুন শখের চেষ্টা করতে অনুপ্রাণিত করুন। একটি শিশু যত বেশি এক্সপোজার পাবে, সে তত বেশি শিখবে এবং উন্নত হবে।
ছোটবেলা থেকেই টাইম ম্যানেজমেন্ট শেখান
টাইম ম্যানেজমেন্ট, অর্থাত্ সময়ের সঠিক ব্যবহার হল একটি জীবন দক্ষতা যা সারা জীবনে স্বল্প সরবরাহে আসে। যে একবার শিখেছে সে জীবনে অনেক এগিয়ে যায়। এমতাবস্থায় ছোটবেলা থেকেই শিশুদের সময়ের গুরুত্ব শেখান এবং প্রতিটি কাজ সময়মতো করার অভ্যাস গড়ে তুলুন। শিশুদের জন্য একটি সঠিক টাইম টেবিল তৈরি করে এটি শুরু করুন। এই সময় সারণীতে তাদের সমস্ত কার্যকলাপ এবং অবসর সময়, সবকিছু অন্তর্ভুক্ত করুন। তবে মনে রাখবেন, সময় সারণী যেন এমন না হয় যেটা অনুসরণ করা শিশুর কাছে বোঝা মনে হয় এবং সে তা অনুসরণ করা বন্ধ করে দেয়।
শিশুর মধ্যে ইতিবাচক মানসিকতা গড়ে তুলুন
এটি একজন মানুষের চিন্তাভাবনা যা তাকে উপরে এবং নীচে নিয়ে যায়, তাই একটি ইতিবাচক মানসিকতা থাকা খুব গুরুত্বপূর্ণ। এর ভিত্তি যত কম স্থাপিত হবে, ততই ভালো। শিশুদের কঠিন পরিস্থিতিতে নিজেকে সামলাতে শেখান। শিশুর সাথে শুধু জয়ের কথাই নয়, পরাজয়কে কীভাবে ইতিবাচকভাবে নিতে হয় এবং এর থেকে কী শিখতে হয় সে সম্পর্কেও কথা বলুন। সময়ে সময়ে, শিশুদের অনুপ্রাণিত করার জন্য এরকম কিছু বই, সিনেমা, সাক্ষাৎকার বা গল্প বর্ণনা করুন।