বাড়ির বয়স্ক ও একরত্তি সদস্যদেরই নিউমোনিয়া হওয়ার আশঙ্কা বেশি। বেশ কিছু সমীক্ষার মতে, সারা বিশ্বে সদ্যোজাত শিশুর মৃত্যুর অন্যতম প্রধান কারণ নিউমোনিয়া। তাই জন্মের পর ছোট্ট অতিথিকে ভীষণ যত্নে রাখা জরুরি। একইসঙ্গে এমন কোনও রোগ লক্ষণ দেখা দিলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
কীভাবে শিশুর শরীর ছড়ায় নিউমোনিয়া?
সদ্যজাতকে যথেষ্ট যত্নে রাখলেও ওর নিউমোনিয়া হতে পারে। বিশেষজ্ঞদের কথায়, মূলত, ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস ও খুব কম ক্ষেত্রে ছত্রাক থেকে এই রোগ ছড়িয়ে পড়ে। কোনও আক্রান্ত ব্যক্তির হাঁচি কাশিতে নির্গত ড্রপলেট খুদের শরীরে গেলেই জীবাণু ছড়িয়ে পড়তে থাকে। জন্মের প্রথম একমাসের মধ্যে সদ্যজাতের নিউমোনিয়া হওয়ার পিছনে আরেকটি কারণ থাকে। গর্ভাবস্থায় নিউমোনিয়া হলে সেই জীবাণু গর্ভস্থ তরলকে সংক্রমিত করতে পারে। এর ফলে প্রসবের সময়ে বা আগে শিশুও সংক্রমিত এই রোগে সংক্রমিত হয়ে পড়ে। এই সময় ছোট্ট খুদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা একেবারেই কম থাকে। ফলে রোগ গুরুতর হওয়ার আশঙ্কা থাকে।
কীভাবে বোঝা সম্ভব?
সংক্রমণের পর বেশ কিছু লক্ষণ ফুটে ওঠে একরত্তির শরীরে। সেগুলো দেখেই বোঝা সম্ভব খুদে আক্রান্ত। নিউমোনিয়াতে আক্রান্ত হলে শিশু ঘন ঘন শ্বাস নিতে শুরু করে। এছাড়াও কাশি ও প্রচণ্ড জ্বরের লক্ষণ দেখা যায়। এই রোগের জীবাণু ফুসফুসে আক্রমণ করে। ফলে ফুসফুসের নিচের অংশে তরল জমতে শুরু করে। এর থেকেই দেখা দেয় শ্বাসকষ্ট। চিকিৎসকের কথায়, এই সময় খুদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা একেবারেই কম থাকে। তাই শরীর নিজে থেকে জীবাণুর বিরুদ্ধে লড়াই করতে পারে না। ছোট্ট অতিথির এই লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।
নিউমোনিয়া কেন হয়?
মায়ের নিউমোনিয়া হলে মাতৃগর্ভে থাকাকালীন জীবাণু শিশুকেও আক্রমণ করার আশঙ্কা থাকে। অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায়, গর্ভস্থ তরল থেকে শিশুর শরীরে জীবাণু প্রবেশ করেছে।
এছাড়াও বায়ুদূষণ নিউমোনিয়ার অন্যতম কারণ। ছোট্ট খুদে যেই ঘরে রয়েছে, সেই ঘরের বায়ু বিশুদ্ধ হওয়া জরুরি। সমীক্ষায় প্রমাণিত হয়েছে, নিউমোনিয়ায় মৃত্যু হয়েছে এমন অর্ধেক শিশুই দূষিত বায়ুর কারণে আক্রান্ত হয়েছিল। ধূমপান ছাড়াও রান্নাঘরের ধোঁয়া, ঘরের গরম তাপমাত্রা থেকেও নিউমোনিয়ার আশঙ্কা বাড়তে পারে।