পাইলসের সমস্যা এখন প্রায়ই দেখা যায়। আমাদের রোজকার খাওয়াদাওয়ার জন্যই এই সমস্যার বাড়বাড়ন্ত হয়েছে। তবে বাড়িতে থেকেও পাইলসের চিকিৎসা করা যায়। মারাত্মক আকার ধারণ না করলে চিকিৎসকের কাছে না গিয়ে বাড়িতে পাইলস কমিয়ে ফেলা সম্ভব। এই প্রতিবেদনে থাকছে তারই হদিশ।
পাইলস কী?
পাইলস মলদ্বারের একটি রোগ। এই রোগে আক্রান্ত ব্যক্তির মলদ্বারের চারপাশ ফুলে ওঠে। আসলে শিরার কারণে এটি হয়। মলদ্বারে থাকা শিরাগুলো ফুলে যাওয়ার ফলে এমন সমস্যা দেখা দেয়। পাইলস হলে মলত্যাগের সময় অস্বস্তি ও ব্যথা হয়। এছাড়া মলদ্বার থেকে রক্তও পড়তে পারে। রক্ত পড়ার লক্ষণ দেখা দিলে তাকে চিকিৎসাবিজ্ঞানে ব্লিডিং পাইলস বলা হয়।
পাইলস কেন হয়?
আমাদের রোজকার ডায়েটই পাইলসের মূল কারণ। রোজকার ডায়েটে মশলাদার ও তৈলাক্ত খাবার বেশি থাকলে পাইলসের সমস্যা দেখা দেয়। এছাড়াও ফাইবারের পরিমাণ কম থাকলেও এই রোগ হতে পারে। অতিরিক্ত তেলে জাতীয় খাবার খেলে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা হয়। এর ফলেই বাড়ে পাইলসের আশঙ্কা।
পাইলসের লক্ষণ
মলত্যাগের সময় মলদ্বারে ব্যথা ও অস্বস্তি হলে তা পাইলসের ইঙ্গিত হতে পারে। এছাড়াও, অনেকদিন ধরে চিকিৎসা না করালে মল দিয়ে রক্ত বের হতে পারে। পাশাপাশি অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ থেকে রক্তাল্পতা বা অ্যানিমিয়া হতে পারে। এগুলো সবই পাইলসের লক্ষণ।
রোগটি সারানোর ঘরোয়া উপায়
অনেকেই সঠিক সময় পাইলসের চিকিৎসা করান না। এর পিছনে একরকম সামাজিক লজ্জাও কাজ করে। রোগ নিয়ে অহেতুক লজ্জার কিছু নেই। বরং সঠিক সময় রোগটি ধরা পড়লে বাড়িতেই সহজ উপায়ে সারিয়ে তোলা সম্ভব। প্রিস্টিন কেয়ারের সার্জারি বিভাগের চিকিৎসক ডাঃ সাজিত নায়ার তেমনই কয়েকটি উপায়ের কথা জানাচ্ছেন।
১. এপসম লবণ দিয়ে গরম জলে স্নান: টয়লেট সিটে বসানো যায় এমন একটি পাত্রে হালকা গরম জল নিয়ে তাতে এই লবণ মেশান। এরপর জলের সংস্পর্শে মলদ্বার কিছুক্ষণ রাখতে হবে। এতে ব্যথা থেকে অনেকটাই রেহাই মিলবে। বাথটাব থাকলে তার জলেও এই লবণ মিশিয়ে স্নান করা যেতে পারে।
২. বরফ দিয়ে রাখা: বরফের প্যাক পনেরো মিনিট ধরে মলদ্বারের সংস্পর্শে রাখুন। এতে সবচেয়ে বেশি আরাম পাওয়া যায়। ব্লিডিং পাইলস হলেও এই পদ্ধতি অনুসরণ করার পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা।
৩. সাপ্লিমেন্ট: মল শক্ত থেকে নরম করার জন্য বেশকিছু ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার বাজারে পাওয়া যায়। এর মধ্যে ইসবগুলের কথা প্রায় সবাই জানেন। ইসবগুল নিয়মিত খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য এড়ানো যায়। এটি নিয়মিত খেলে মল নরম হয়ে যায়। এতে মলত্যাগের সময় ব্যথা ও অস্বস্তি হয় না।