‘ফিউচার ফুডস’ নামে একটি জার্নালে সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে একটি নতুন সমীক্ষাপত্র। আর সেটিই চমকে দিয়েছে সকলকে। এর ফলে বদলে যেতে পারে খাদ্য সম্পর্কে ধারণা। এর ফলে বদল আসতে পারে খাদ্যাভ্যাসেও। এমনই ইঙ্গিত দিচ্ছেন বিজ্ঞানীরা।
কী বলে হয়েছে এই সমীক্ষাপত্রে? সেখানে উল্লেখ করা হয়েছে, কৃত্রিম উপায়ে তৈরি উদ্ভিদ-জাত মাংস এবং প্রাণীদের মাংসে প্রায় সম পরিমাণ পুষ্টিগুণ থাকে। শুধু তাই নয়, এটি প্রাণীদের থেকে পাওয়া মাংসের তুলনায় বেশি স্বাস্থ্যকরও। এমনই দাবি করা হয়েছে সেই সমীক্ষাপত্রে।
উদ্ভিদ-জাত খাবারের স্বাস্থ্যগুণ এবং পরিবেশের উপর তার প্রভাব নিয়ে এই গবেষণাটি চালানো হয়েছে। শুধু স্বাস্থ্যকরই নয়, উদ্ভিদ-জাত খাবার পরিবেশের জন্যও খুবই ভালো, এবং আগামী দিনে এটি পরিবেশবান্ধব পরিস্থিতি সৃষ্টি করার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে চলেছে বলেও দাবি করা হয়েছে।
যাঁরা আমিষ খাবার বা দুগ্ধজাত খাবার খেতে পছন্দ করেন, তাঁদের ক্ষেত্রে আগামী দিনে উদ্ভিদ-জাত মাংস অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিকল্প হতে পারে বলেও এই সমীক্ষাপত্রে দাবি করা হয়েছে।
কী কী গুণ রয়েছে উদ্ভিদ-জাত মাংসের?
- সমীক্ষা থেকে বলা হয়েছে, উদ্ভিদ-জাত মাংস ওজন কমাতে এবং পেশির গঠনে প্রাণিজ মাংসের থেকে অনেক বেশি কার্যকর। প্রাণিজ মাংসের মধ্যে ৪০ শতাংশকেই অস্বাস্থ্যকর বলে দাবি করা হয়েছে।
- উদ্ভিদ-জাত মাংসে প্রোটিনের গুণগত মানও প্রাণিজ মাংসের তুলনায় বেশি বলে দাবি করা হয়েছে এখানে।
- উদ্ভিদ-জাত মাংস হজ করা অনেক সহজ বলে জানানো হয়েছে।
- কৃত্রিম উপায়ে তৈরি উদ্ভিদ-জাত মাংস কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে পারে বলেও জানানো হয়েছে এই সমীক্ষায়।
- আরও একটু দারুণ সুবিধা রয়েছে এই উদ্ভিদ-জাত মাংসের। বিজ্ঞানীদের আশা, এটি প্রাণিজ মাংসের তুলনায় কম দামিও হবে। ফলে অনেকেই সহজে কিনতে পারবেন এই মাংস।
উদ্ভিদ-জাত মাংস কীভাবে পরিবেশের উপকার করতে পারে?
- এই মাংস কমিয়ে দিতে পারে গ্রিন হাউজ গ্যাসের নিঃসরণের পরিমাণ। প্রাণিজ মাংসের তৈরি বার্গারেরর জন্য যে পরিমাণ গ্রিন হাউজ গ্যাস নিঃসরণ হয়, তার পরিমাণ প্রায় ৯৮ শতাংশ কমে যেতে পারে, যদি ওই মাংসের জায়গায় উদ্ভিদ-জাত মাংস ব্যবহার করা হয়।
- কার্বন-ডাই অক্সাইড উৎপাদনের মাত্রাও কমে যেতে পারে এর ফলে।
- উদ্ভিদ-জাত মাংস উৎপাদনের জন্য খুব কম জল লাগে। খুব বেশি জমির দরকার হয় না। এবং দূষণের মাত্রাও কম।
বিজ্ঞানীদের আশা, আগামী দিনে তাই উদ্ভিদ-জাত মাংস বড়সড় একটি বিকল্প হয়ে উঠতে চলেছে। ভবিষ্যতের পৃথিবীকে দূষণমুক্ত করতে এটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে চলেছে বলেও মনে করছেন তাঁরা।