শীতকাল মানেই সর্দিকাশি আর গলা ব্যথার মরশুম। ঠান্ডা লাগা থেকে নিজেকে বাঁচিয়ে রাখার প্রস্তুতি শুরুর আগেই শুরু হয় নাক টানা। মূলত ঋতু পরিবর্তন শুরু হলেই দেখা যায়, ফ্লু-এ আক্রান্ত হচ্ছেন আট থেকে আশি। যাদের আগে থেকেই বিভিন্ন শারীরিক সমস্যা রয়েছে তাদের আবার এই রোগের বাড়বাড়ন্ত। কোভিডের পর থেকে হাঁচি কাশি দেখলেই মানুয এক হাত দূরত্ব রেখে চলে। সেখানে ফ্লু-এর সমস্যা বিপদ আরও বাড়িয়েছে।
শীত ছাড়াও বর্ষার সময় এই সমস্যার বাড়বাড়ন্ত দেখা যায়। কোভিডের সময় মানুষ ঠান্ডা লাগা নিয়ে কিছুটা সচেতন ছিল। তখন ফ্লু-এর সমস্যাও ছিল বেশ কম। তবে কোভিডের বিধিনিষেধ উঠে যেতেই পরিস্থিতি আগের মতো হয়ে গিয়েছে। ফলে নতুন করে বেড়েছে সর্দি কাশিতে জেরবার হওয়া।
ফ্লু রোগটি ছড়ায় হাঁচি-কাশির জন্য। এই রোগে আক্রান্তের মিউকাস থেকে অন্যদের দেহে ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়ে। সংক্রমক রোগ হওয়ায় ফ্লু-তে সহজেই অনেকে আক্রান্ত হয়ে পড়ে। কোভিডের মতো এটি কারও কারও ক্ষেত্রে মারাত্মক আকারও ধারণ করতে পারে। এমনকি মৃত্যু হওয়াও অস্বাভাবিক নয়।
ডাঃ রাজেশ ভরদ্বাজ বলছেন, কিছু মানুষের ক্ষেত্রে ফ্লু-এর সমস্যার বাড়বাড়ন্ত দেখা দেয়। দুই থেকে ছয় বছর বয়সী শিশু, গর্ভবতী মহিলা, বয়স্ক ও দীর্ঘদিন ধরে অ্যাজমা, নিউমোনিয়া বা ডায়াবিটিস রোগে ভুগছেন এমন মানুষদের ক্ষেত্রে সমস্যাটা বেশি হয়। সময়মতো ব্যবস্থা নিলে এর থেকে সহজেই মুক্তি মিলতে পারে।
চিকিৎসকের কথায়, সময় মতো প্রতিষেধক নিলে সবচেয়ে ভালো ফল মেলে। করোনা ভাইরাসের মতো ফ্লু-এর ভাইরাসও ফুসফুসে আক্রমণ করে। কোভিডের মতোই এর জন্যও প্রতিষেধক রয়েছে।
অনেকেরই ধারণা, কোভিডের প্রতিষেধক নেওয়া আছে মানেই ফুসফুসের সবরকম সমস্যা থেকে রেহাই মিলবে। এমন ধারণা আদৌ ঠিক নয়। ফ্লু আর কোভিড দুটি আলাদা ভাইরাস থেকে হয়। ফলে দুটোর জন্য আলাদা আলাদা প্রতিষেধক নেওয়া জরুরি।
চিকিৎসকের কথায়, করোনা ভাইরাসের মতো ফ্লু-এর ভাইরাসও প্রতিবছর চেহারা পাল্টায়। প্রতিবছর এর নতুন স্ট্রেন এই রোগ ছড়ায়। তাই ঋতু পরিবর্তনের আগেই প্রতিষেধক নিলে সহজে রোগটি এড়ানো যায়। এছাড়া, নতুন স্ট্রেনের জন্য প্রতিবছরই নতুন প্রতিষেধক তৈরি করা হয়। ফ্লু-এর চিকিৎসার থেকে একটি প্রতিষেধক নেওয়া অনেকটাই সাশ্রয়ী। ডোজ নিয়ম মেনে নেওয়া হলে এই সমস্যা আর ছুঁতেও পারবে না।