এক্টোপিক প্রেগন্যান্সি অর্থাৎ জটিল ছিল গর্ভধারণ। পরিস্থিতি ছিল সঙ্কটের। চিকিৎসক সে কথা জানতেন বলেই অভিযোগ রোগিনীর পরিবারের। কিন্তু তা সত্ত্বেও ঠিক মতো চিকিৎসা করেনি হাসপাতাল। মৃত্যু হয় ৪১ বছরের প্রসূতির। আনন্দপুরের বেসরকারি হাসপাতাল ফর্টিসের বিরুদ্ধে এমনই অভিযোগ দায়ের করেন মৃতার স্বামী।
(আরও পড়ুন: ছোট ছোট কথা ভুলে যান প্রায়ই? এই পরিচিত পানীয়টি রোজ খেলেই সমস্যা কমবে)
তিলজলার বাসিন্দা অপর্ণা বসু হাজরা অনেক চিকিৎসার পর অগস্টের শুরুতে গর্ভবতী হন। তাঁর স্ত্রীরোগ চিকিৎসক পরীক্ষা করে জানান এই গর্ভাবস্থা আদতে এক্টোপিক প্রেগন্যান্সি। অর্থাৎ পরিস্থিতি বেশ জটিল। এক্টোপিক প্রেগন্যান্সি মানে জরায়ুর বদলে ভ্রূণ ফ্যালোপিয়ান টিউবে বেড়ে উঠছিল। যার ফলে ওই টিউব ফেটে প্রাণসংশয় হওয়ার ঝুঁকি থাকে। এর জন্য অস্ত্রোপচার দরকার হতে পারে বলেও জানিয়েছিলেন চিকিৎসক। পাশাপাশি তিনি পরামর্শ ছিল, আচমকা পেটে যন্ত্রণা বা অন্য সমস্যা হলে তৎক্ষণাৎ ফর্টিস হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে। ১৮ অগস্ট পেটে অসহ্য যন্ত্রণা শুরু হয় অপর্ণার। পর দিন ১৯ অগস্ট বাড়াবাড়ি হলে চিকিৎসকের পরামর্শ মতো তাঁকে ফর্টিসে নিয়ে যাওয়া হয়।
(আরও পড়ুন: দুশ্চিন্তা রোজকার সঙ্গী? দুধের সঙ্গে এটি মিশিয়ে খেলে সমস্যা কমবে)
অপর্ণার স্বামী অমিতের অভিযোগ, হাসপাতাল জানিয়ে দেয়, রাতে আলট্রাসোনোগ্রাফির করা যাবে না। পর দিন ২০ অগস্ট যন্ত্রণা বাড়লে অমিতকে হট ব্যাগ আনতে বলে হাসপাতাল। অমিত বলেন, ‘বেলা ১২টা নাগাদ ফোনে জানানো হয়, ওর অবস্থা সঙ্কটজনক। ক্রিটিক্যাল কেয়ারে রাখা হয়েছে। এর পর একটা নাগাদ যখন গিয়ে পৌঁছায়, ততক্ষণে ও আর নেই!’ তাঁর দাবি, হাসপাতালের নথিতে যে সময় ইউএসজি-র কথা লেখা হয়, ততক্ষণে অপর্ণার দেহ নিয়ে তাঁরা শ্মশানে। এই সব অভিযোগ অস্বীকার করে হাসপাতালের ফেসিলিটি ম্যানেজার আশিস মুখোপাধ্যায় দাবি করেছেন, ‘প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল। ইউএসজি-তে কোনও অস্বাভাবিকতা মেলেনি। পর্যবেক্ষণে থাকাকালীনই আচমকা অবস্থার অবনতি হয়। ক্রিটিক্যাল কেয়ারে নিয়েও শেষরক্ষা হয়নি।’ তবে পরিজনেরা এই যুক্তি মানতে নারাজ। তাঁদের প্রশ্ন, ইউএসজি স্বাভাবিকই থাকলে ডেথ সার্টিফিকেটে পেটের ভিতরে রক্তক্ষরণের কথা লেখা হল কেন? কেন লেখা হল শক সিনড্রোমের কথা? অমিতের দায়ের করা অভিযোগের ভিত্তিতে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে আনন্দপুর থানা।