একটি গবেষণা অনুযায়ী কারও যদি ৪০ বছর বয়সের আগেই মেনোপজ হয়ে যায় তাহলে তা আদতে ক্ষতিকর। ৪০ আগে রজোনিবৃত্তি হওয়া মানেই হৃদরোগের আশঙ্কা বৃদ্ধি পাওয়া। এই গবেষণায় ১৪ লক্ষ মহিলার তথ্য ব্যবহার করা হয়েছে এবং দেখা গিয়েছে যাঁদের অল্প বয়সেই মেনোপজ অথবা রজোনিবৃত্তি শুরু হয়ে গিয়েছে তাঁদের হার্ট ফেলিওরের সমস্যা বেড়ে গিয়েছে, সঙ্গে বেড়েছে অ্যাট্রিয়াল ফাইব্রিলেশনের সমস্যা। ইউরোপিয়ান হার্ট জার্নালে এই রিপোর্টটি প্রকাশিত হয়েছে।
কোরিয়ার ইউনিভার্সিটি কলেজ অফ মেডিসিনের ডক্টর গা ইউন নাম বলেছেন যাঁদের অল্প বয়সে মেনোপজ শুরু হয়, তাঁদের খুব কম বয়সেই হার্টের সমস্যা মূলত হার্ট ফেলিওর এবং অ্যাট্রিয়াল ফাইব্রিলেশনের সমস্যা দেখা যায়। পুরুষদের তুলনায় মহিলাদের হার্টের রোগ গড়ে ১০ বছর পর দেখা যায়। কিন্তু যাঁদের মেনোপজ আগে শুরু হয় তাঁদের কিন্তু হার্টের রোগের রিস্ক অনেক বেড়ে যায়। অনেকেই হয়তো ভাবেন প্রতি মাসের ঝামেলার থেকে মুক্তি মিলল, কিন্তু আদতে তা ক্ষতি করে।
যাঁদের ৪০ বছরের আগেই মেনোপজ হয় সেই সব মহিলাদের ১ শতাংশের উপর অত্যন্ত খারাপ প্রভাব পড়ে। গবেষণায় দেখা গিয়েছে অল্প বয়সে মেনোপজ এবং হার্টের অসুখের একটি গভীর যোগাযোগ রয়েছে।
এই গবেষণায় কোন বয়সে মেনোপজ হয়েছে, হার্টের সমস্যা মূলত হার্ট ফেলিওর কিংবা অ্যাট্রিয়াল ফাইব্রিলেশনের সমস্যা আছে কিনা এই সব তথ্য নিয়ে গবেষণা করা হয়েছে। কোরিয়ান ন্যাশনাল হেলথ ইন্স্যুরেন্স সিস্টেম থেকে তথ্য জোগাড় করা হয়েছে।
মোট ১৪০১১৭৫ মহিলার থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে এই গবেষণা করা হয়েছে যেখানে দেখা গিয়েছে ২৮১১১ মহিলার ৪০ বছরের আগেই মেনোপজ হয়ে গিয়েছে। এবং এই গড় মেনোপজের বয়স হচ্ছে ৩৬.৭ বছর। যাঁদের তথ্য এই গবেষণায় ব্যবহার করা হয়েছে তাঁদের গড় বয়স ৬০ বছর। দীর্ঘ ৯.১ বছর ধরে চেক আপ করে দেখা গিয়েছে ৪২৬৯৯ জনের হার্টের ফেলিওর হয়েছে এবং ৪৪৮৩২ জনের অ্যাট্রিয়াল ফাইব্রিলেশনের সমস্যা হয়েছে।
বয়স, ধূমপান, মদ্যপান, ব্যায়াম, আয়, ওজন, হাইপারটেনশন, ডায়াবেটিস, কিডনির রোগ, ইত্যাদির উপর ভিত্তি করে গবেষকরা যে গবেষণা করেছেন সেখানে তাঁরা অল্প বয়সে মেনোপজের সঙ্গে হার্টের রোগের যোগসূত্র খুঁজে পেয়েছেন। ৩৩ শতাংশের হার্ট ফেলিওরের সমস্যা হতে পারে বলেই এই গবেষণায় দাবি করা হয়েছে। অন্যদিকে অ্যাট্রিয়াল ফাইব্রিলেশনের সমস্যা ৯ শতাংশের মধ্যে দেখা দিতে পারে। যাঁদের ৪০ বছরের নিচে মেনোপজ হয়েছে তাঁদের ৫০ বছরের পর যাঁদের মেনোপজ হয়েছে তাঁদের তুলনায় প্রায় ১১ থেকে ৩৯ শতাংশ বেশি রিস্ক থাকে হার্টের রোগের।
তবে এই মেনোপজের বয়স নির্ভর করে অনেক কিছুর উপর। তাই যদি ৪০ বছরের নীচে আপনার মেনোপজ হয় তাহলে অবশ্যই সাবধান থাকুন। এবং নিয়মিত চেকআপ করান।