২০২১ সালে প্রেসিডেন্সি ইউনিভার্সিটিতে ইতিহাস বিভাগে ভর্তি হন জাহিদ কবীর। কিন্তু সেমিস্টার পরীক্ষার সময় ইংরেজিতে উত্তর লিখতে পারেননি। তাই এক বছর পড়লেও পড়া ছেড়ে দিতে হয় তাঁকে। জলপাইগুড়ির একটি বাংলা মাধ্যম স্কুলে পড়াশুনো করেছেন জাহিদ। ক্লাসে অধ্যাপকদের লেকচারগুলি ইংরেজিতেই হত। ফলে তার সঙ্গে মানিয়ে নিতে বেশ অসুবিধা হয়েছিল। সংবাদমাধ্যম টাইমস অফ ইন্ডিয়াকে কবীর জানাচ্ছেন, 'যেহেতু আমার ইংরেজি শব্দভান্ডার দুর্বল ইংরেজিতে তেমনই সাবলীল নই, তাই আমি ঠিকমতো উত্তর লিখতে পারিনি। পরীক্ষায় আমার গ্রেডও বেশ কমে যাচ্ছিল। বাংলায় উত্তর লেখার সুযোগ থাকলে আমি পিছিয়ে থাকতাম না।'
কবীরের মতো আরও অনেকে আছেন যারা প্রেসিডেন্সি ছাড়তে বাধ্য হয়েছিলেন। রোজ ইংরেজিতে লেকচার শোনা আর পরীক্ষায় ইংরেজিতে উত্তর লিখতে যথেষ্ট অসুবিধা হচ্ছিল তাঁদের।
শুধু প্রেসিডেন্সি নয়, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররাও একই সমস্যার সম্মুখীন হয়েছে। মুর্শিদাবাদের আলি হোসেন ২০২১ সালে যাদবপুরের ইতিহাস বিভাগে ভর্তি হন একটি সেমেস্টারের পরে তিনি কোর্সটি ছেড়ে দিতে বাধ্য হন। তাঁর কথায়, যেহেতু পড়াশোনার সব লেকচার নোটস ইংরেজিতে ছিল, তাই সিলেবাস বুঝতে ও মানিয়ে নিতে বেশ সমস্যা হচ্ছিল।' বর্তমানে তিনি রবীন্দ্র ভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। সেখানে পড়াশোনার যবতীয় নোটস ইংরেজি এবং বাংলা দুই ভাষাতেই পাওয়া যায়।
প্রেসিডেন্সি ইউনিভার্সিটির এসএফআই ইউনিট ইতিমধ্যেই এই ব্যবস্থার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়েছে। পরীক্ষায় উত্তর লেখার সময় ইংরেজি ছাড়াও পড়ুয়াদের মাতৃভাষায় বিশেষত বাংলায় লিখতে দেওয়া হোক, এমনটাই তাদের দাবি।, প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের এসএফআই ইউনিটের সাধারণ সম্পাদক রিশাভ সাহা জানান, 'এসএফআই ইতিমধ্যেই ডিনদের কাছে জমা বেশ কিছু ছাত্রের তথ্য জমা দিয়েছে। এই ছাত্রেরা এখনও ইংরেজি ব্যবস্থার সঙ্গে মানিয়ে নিতে সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে। এমনকী ইতিমধ্যেই যেসব ছাত্ররা বিশ্ববিদ্যালয় ছেড়ে গিয়েছে তাদের কথাও জানিয়েছে ইউনিট।'
প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের জীবন বিজ্ঞান বিভাগে স্নাতক স্তরের প্রথম বর্ষের ছাত্র শুভজিৎ দাস। তাঁর কথায় বলেন, 'ইংরেজিতে করা প্রশ্ন বুঝতে পারিনি। এই সেমেস্টারে জীববিজ্ঞানে পাশ করব কিনা তা নিয়ে বেশ ভয়ে আছি। তাছাড়াও ইংরেজিতে ভালো করে উত্তর লেখা কঠিন ছিল।' তবে ইংরেজিতেই পড়া চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি। বেশিরভাগ শিক্ষার্থীদের কথায়, ইংরেজিতে পড়তে হলে প্রায়ই তাদের আত্মবিশ্বাস কমে যায়। এমনকী এই সমস্যাগুলি অধ্যাপকদের সঙ্গে ভাগ করে নিতে সংকোচ হয়।
এই খবরটি আপনি পড়তে পারেন HT App থেকেও। এবার HT App বাংলায়। HT App ডাউনলোড করার লিঙ্ক https://htipad.onelink.me/277p/p7me4aup