অন্যান্য পুজোর থেকে দুর্গাপুজোর পদ্ধতির বেশ কিছু পার্থক্য রয়েছে। বাঙালি হিন্দুদের অন্যতম বড় পুজোর এই পদ্ধতি সম্পর্কে নিঃসন্দেহে ভালো ধারণা আছে বাঙালি পুরোহিতদেরই। তত ভালো করে হয়তো জানেন না অবাঙালি পুরোহিতরা। আর তাই এবার দুর্গাপুজোর আগে কলকাতায় হাজির দেশের নানা প্রান্তের পুরোহিতরা। উদ্দেশ্য, দুর্গাপুজোর পদ্ধতি শেখা।
এই উদ্দেশ্যেই গুজরাট এবং উত্তরপ্রদেশ থেকে কলকাতায় এসেছেন বেশ কয়েক জন পুরোহিত। দুর্গাপুজোর মন্ত্র কীভাবে উচ্চারণ করতে হবে, পুজোর সময়ে কী কী আচার পালন করতে হবে থেকে শুরু করে আরও বহুবিধ নিয়ম শিখছেন তাঁরা। গত শনিবার থেকে শোভাবাজার রাজবাড়িতে শুরু হয়েছে পৌরহিত্য শেখার এই ক্লাস। সব মিলিয়ে ১০ দিনের কোর্সে শিক্ষা নিচ্ছেন তাঁরা। রীতিমতো সিলেবাস মেনে পড়ান হচ্ছে তাঁদের।
কী কী রয়েছে সিলেবাসে? পুজোর আচার বিচারের সঙ্গে মন্ত্রপাঠের পদ্ধতি ছাড়াও রয়েছে আরও বহু কিছু।
- পুজো করার সময়ে কী কী করা যাবে না, তা নিয়ে বড়সড় একটি অংশ রয়েছে এই সিলেবাসে। চা-কফি থেকে শুরু করে নস্যি বা অন্য কোনও ধরনের নেশার বস্তু গ্রহণ করার কথা নয় এই সময়ে। সেই সম্পর্কে ভালো করে বোঝানো হচ্ছে তাঁদের।
- অনেক পুরোহিত দ্রুত মন্ত্র উচ্চারণ করেন। তাতে উচ্চারণের ক্ষেত্রে কিছু সমস্যা থেকে যায়। উচ্চারণের সঠিক পদ্ধতিও বলা হচ্ছে তাঁদের।
- পুজোর ক’টা দিন পুরোহিতদের সাত্ত্বিক আহার করার কথা। কিন্তু এই চার দিন খাবারদাবারের নিয়মের ফেরে অনেক পুোরহিত অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাই সে সম্পর্কেও একটি ধারণা দেওয়া হচ্ছে এই কোর্সে। পুষ্টবিদরা এখানে তাঁদের ক্লাস নিচ্ছেন। জানাচ্ছেন কী কী খেতে হবে। এবং কী কী খাওয়া যাবে না।
- করোনাকালে কীভাবে শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে পুজো করতে হবে, সেটিও বোঝানো হচ্ছে তাঁদের। আর কোন কোন ধরনের স্বাস্থ্যবিধি তাঁরা মানবেন, সেটিও বলে দেওয়া হচ্ছে।
কোর্সের শেষে সার্টিফিকেটের ব্যবস্থা রয়েছে। ৫০ নম্বরের পরীক্ষায় নাকি অন্তত ৩০ পেতে হবে এই সার্টিফিকেটের জন্য। তবেই পাস করতে পারবেন তাঁরা। তবেই সার্টিফিকেটের দৌলতে দুর্গাপুজোয় অংশ নিতে পারবেন এই সব পুরোহিতরা।