বাংলা নিউজ > টুকিটাকি > Pujo Tour: গলা কাটা ভূত দেখাও হবে, পাহাড়ের কোলে থাকাও! যান কার্শিয়াংয়ের ডাওহিলে

Pujo Tour: গলা কাটা ভূত দেখাও হবে, পাহাড়ের কোলে থাকাও! যান কার্শিয়াংয়ের ডাওহিলে

পুজোয় ঘুরে আসুন কার্শিয়াংয়ের ডাওহিল থেকে। 

এত নির্জন, গা ছমছমে পাহাড়ি রাস্তা আপনি হয়তো খুব কমই দেখেছেন। ভারতের সেরা দশ ভূতের জায়গা হিসেবে জায়গা করে নিয়েছে কার্শিয়াংয়ের ডাওহিল। যাবেন নাকি ঘুরতে?

একবার ভাবুন তো নির্জন পাহাড় ধরে আপনি হাঁটছেন, মেঘরা এসে আপনার সঙ্গী হয়েছে। হঠাৎ সামনে দেখলেন একটা বাচ্চা ছেলেও হাঁটছে, কিন্তু তার মাথাই নেই! বা হাঁটতে হাঁটতে পৌঁছে গেলেন এমন এক রাস্তায় যেটার নামই ‘ডেথ রোড’। মানে যাকে বলে মৃত্যুর হাতছানি রয়েছে এখানে। ভারতের সেরা দশ ভূতের জায়গা হিসেবে জায়গা করে নিয়েছে কার্শিয়াংয়ের ডাওহিল। 

আসলে ভূতুরে এই গা ছমছমে ভাবটাই কিন্তু হবে এখানে ঘোরার আনন্দ। সারিসারি পাইন গাছ। এত ঘন জঙ্গল যে দিনেও কেমন একটা আলো আঁধারি কাজ করে এখানে। গাড়ি-ঘোড়া তো নেই-ই, মানুষজনও খুব কম। ডাওহিলে কোনও হোটেলও নেই, রয়েছে কিছু হোম স্টে। আর কেউ কেউ দার্জিলিং বা কার্শিয়াং শহর থেকে এখানে আসেন গাড়ি নিয়ে ঘুরতে। তাই ডাও হিলে থাকলে নর্থ বেঙ্গলের নির্জনতা উপভোগ করতে পারবেন প্রাণ ভরে। সঙ্গে রয়েছে পাখির কলকাকলি। নাম না জানা অর্কিড। 

বলা হয় অতিপ্রাকৃতিক অনুভব করেছেন অনেক টুরিস্টই এই ডাওহিলে। বিশেষ করে ডাওহিলের রাস্তা থেকে ফরেস্ট অফিসে যাওয়ার রাস্তা যেটা ডেথ রোড নামে পরিচিত সেটা। কেউ এখানে একটা ছোট বাচ্চার ভূত দেখেছেন যার মাথা নেই। কেউ দেখেছেন এক বুড়িকে, যে হঠাৎ গায়েব হয়ে যায়। কারও মনে হয়েছে একটা অদৃশ্য শক্তি যেন তাঁকে ফলো করছে। এমনকী এও শোনা গিয়েছে কিছু মানুষ নাকি ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেছেন। যদিও এসবই শোনা কথা। লোকাল মানুষরা এখানে কিচ্ছু দেখেননি। এমনকী ডাও হিলে রয়েছে দুটো বিখ্যাত স্কুল, যেখানের ছোট ছোট পড়ুয়ারা কখনও ভূত দেখেননি। এমনকী টুরিস্টদেরও প্রকাশ্যে ভূতের গল্প বলতে শোনা যায়নি। 

কী দেখবেন: 

ডাও হিলের আসল সৌন্দর্য এখানের গা ছমছমে পাইন ঘেরা রাস্তা। কুয়াশায় ঘেরা আধো অন্ধকার ভাব। হেঁটে হেঁটে দেখে নিন ডিয়ার পার্ক, ডাও হিল পার্ক, ডাও হিল ফরেস্ট মিউজিয়াম, ডাও হিল স্কুল, ভিক্টোরিয়া বয়েজ স্কুল। পায়ে হেঁটে এগুলো দেখতে ঘণ্টা দুই লাগবে। ভিক্টোরিয়া বয়েজ স্কুলের পিছনে রয়েছে ডাও হিল চার্চ। সেই কবে এই চার্চ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ভগ্নপ্রায় এই চার্চে ঢোকার অনুমতি নেই। তবে বাইরে থেকে দেখতেই প্রতি বছর আসেন হাজার হাজার টুরিস্ট এখানে। 

কার্শিয়াংয়ের টুরিস্ট স্পটগুলোও দেখে নিতে পারবেন ডাও হিলে থেকেই। রয়েছে হনুমান টক। ভগবান হনুমানের ৪০ ফুট উঁচু একটা স্ট্যাচু। এখান থেকে দুর্দান্ত ভিউ পাওয়া যায়। পাশে লেখা আছে ‘I Love Kurseong’। 

ইগলস ক্র্যাগ দেখুন। খুব সুন্দর একটা পার্ক। ফুলে ভরা থাকে গোটা শীতকাল। এটাও কার্শিয়াংয়ের একটা ভিউ পয়েন্ট। এরপর চলে যান গিড্ডা পাহাড়ে। উপর থেকে দেখুন আঁকা-বাঁকা রাস্তার বুকে টয়ট্রেনের লাইন। কপাল ভালো থাকলে একটা টয়ট্রেন দেখারও সুযোগ পেয়ে যাবেন। 

আপনি যদি ভোজন রসিক হন তাহলে চলে যান মার্গারেট ডেকে। পাহাড়ের গায়ে ঝুলন্ত এক ক্যাফে। খাঁটি দার্জিলিং টি-র স্বাদ নিতে চাইলে একবার আপনাকে মার্গারেট ডেক যেতেই হবে। এখানে কেক, কুকিজের স্বাদও অপূর্ব। ক্যাফের বাইরের বারান্দায় বসে কফির কাপে চুমুক দিতে দিতে কখন যে সময় কেটে যাবে নিজেও বুঝতে পারবেন না। 

কীভাবে যাবেন:

কলকাতা থেকে ট্রেনে পৌঁছে যান নিউ জলপাইগুড়ি। ফ্লাইট ধরে যেতে পারেন বাগডোগরা বিমানবন্দরেও। সেখান থেকে গাড়ি ভাড়া করে চলে আসুন ডাও হিলে। শেয়ার গাড়ি করেও আসতে পারেন। সেক্ষেত্রে আপনাকে কার্শিয়াং স্টেশনে নামতে হবে। সেখান থেকে হোমস্টের গাড়িতে ডাওহিল। ভাড়ার গাড়িও পাবেন। ভাড়া পড়বে ৭০০-৮০০ মতো। আর এনজেপি থেকে সোজা আসতে চাইলে গাড়ি ভাড়া লাগবে ৩০০০-৩৫০০ টাকা। 

 

বন্ধ করুন