বাংলা নিউজ > টুকিটাকি > Rabindranath Tagore: চিঠি হারিয়েছে কালের নিয়মে, তবু ছিন্ন চিঠির মধ্যে আজও জাগেন রবীন্দ্রনাথ

Rabindranath Tagore: চিঠি হারিয়েছে কালের নিয়মে, তবু ছিন্ন চিঠির মধ্যে আজও জাগেন রবীন্দ্রনাথ

শিলাইদহের তরুণ (Encyclopedia)

বলাইয়ের মতোই কি তাঁর প্রাণ কোনও এক আদি অকৃত্রিম সুরে বাঁধা ছিল? সে সুরই কি ক্রমাগত তাঁকে টেনেছে এক বিশেষ নিয়তির দিকে?— যে নিয়তিতে প্রকৃতির সঙ্গে মানুষের নিবিড় মিলন হয়‌? বিশেষ আলাপে দুই রবীন্দ্রচিন্তক

নিবিড় কথার শুরু

‘ঐ- যে মস্ত পৃথিবীটা চুপ করে পড়ে রয়েছে, ওটাকে এমন ভালোবাসি…সমস্তটা-সুদ্ধ দু হাতে আঁকড়ে ধরতে ইচ্ছে করে।’ ছিন্নপত্রের ১৮তম চিঠি শুরুতেই এমনই গভীর আলিঙ্গনের সুর। যিনি এই চিঠি লিখছেন, তাঁর বড় হয়ে ওঠার আদলে চোখ রাখলে দেখা যায়, জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়িতে পুষ্ট হচ্ছে শৈশব থেকে কৈশোর। বড়বাজারের কাছে চিৎপুর এলাকা।  শহরের কলকবজা যেখানে পুরোদমে চলছে, তারই মধ্যে এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্ম ও বেড়ে ওঠা। বলাইয়ের মতোই কি তাঁর প্রাণ কোনও এক আদি অকৃত্রিম সুরে বাঁধা ছিল? সে সুরই কি ক্রমাগত তাঁকে টেনেছে এক বিশেষ নিয়তির দিকে?— যে নিয়তিতে প্রকৃতির সঙ্গে মানুষের নিবিড় মিলন হয়‌? 

পরস্পরের কাছে বিশেষ ওঠা

সাতাশের কোঠায় এসে নাগরিক কবির সঙ্গে দেখা হল বাংলাদেশের প্রকৃতির। সে দেখা এতটাই উজ্জ্বল যে কথায় ধরে ফেলা যায় না। দুজনেই দুজনকে সেদিন ডাক দিয়েছিল — ‘সে বললে, এই-যে! আমিও বললুম, এই-যে!’ (ছিন্নপত্র, ২২) তারপর দুজনের নীরব অবগাহন পরস্পরের ভিতর — ‘তারপরে দুজনে পাশাপাশি বসে আছি আর কোন কথাবার্তা নেই…..’ (ছিন্নপত্র, ২২)।

<p>শিলাইদহ কুঠিবাড়ি</p>

শিলাইদহ কুঠিবাড়ি

(Encyclopedia)

এমনই যে প্রেমের গভীরতা, সে গভীরতায় কি কোনও পক্ষপাত তৈরি হয়েছিল? মানুষের তুলনায় প্রকৃতির সুর কি উচুঁতারে বাধা বলে মনে হয়েছিল কবির? বিশিষ্ট সাহিত্যিক অনিতা অগ্নিহোত্রী কাটিয়ে দিচ্ছেন সেই সংশয়। তাঁর কথায়, ‘প্রকৃতির নিবিড় ও নির্জন সান্নিধ্যে বসে ছিন্নপত্র লেখা। তাই তাঁর প্রকৃতিকে নিয়ে ভাবনা একটি নিরন্তর সুরের মতো আমাদের কানে বাজে। পদ্মাবোটে দিন কাটিয়ে আকাশ, জল, আলো ও বৃক্ষলতার যে পরিপূরক রূপ দেখেছিলেন কবি, ছিন্নপত্রাবলী তারই প্রতিফলন।’

চিঠি লেখার ধারা ধারা দিন দিন যেন বিলুপ্ত হচ্ছে। জরুরি কাজ ছাড়া ব্যক্তিগত চিঠি লেখা প্রায় উঠেই গিয়েছে। সেই প্রসঙ্গ টেনেই রবীন্দ্র বিশেষজ্ঞ পীতম সেনগুপ্ত বললেন, 'ইন্দিরা দেবীকে দিনের পর দিন চিঠি লিখতেন নানা বিষয়ে, তবে প্রাধান্য পেয়েছিল পল্লী প্রকৃতি এবং পল্লীবাসীদের জীবনের কথা। পরে ইন্দিরা দেবীর সৌজন্যে এই সমস্ত চিঠি ‘ছিন্নপত্র’ নামে সংকলিত।'

<p>তাঁর সঙ্গে প্রকৃতির  গহীন আত্মীয়তার বয়ান ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে ছিন্নপত্রের নানা চিঠিতে</p>

তাঁর সঙ্গে প্রকৃতির  গহীন আত্মীয়তার বয়ান ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে ছিন্নপত্রের নানা চিঠিতে

প্রকৃতি ও মানুষ— পারস্পরিক নির্ভরতা

 প্রকৃতি কি আদৌ গুরুত্ব পাচ্ছে একবিংশ শতাব্দীর মানুষের কাছে? অনিতা অগ্নিহোত্রী জানালেন রবীন্দ্রনাথের এই বিশেষ অনুভব নিয়ে। ‘এই অনুভবের মধ্যে দুটি স্তর আছে। প্রকৃতির মধ্যে নিজেকে পুনর্জায়িত করার ক্ষমতা আছে, যদি মানুষ তার বিধ্বংসী প্রবৃত্তি সম্বরণ করতে পারে। রবীন্দ্রনাথের এই প্রকৃতি ভাবনা দেশের ও বাংলার নবীনতর প্রজন্মকে প্রভাবিত করেছে। কেবল মুগ্ধতা নয়, ভালোবাসা নয়, প্রকৃতির মধ্যে নিজেকে ফিরে পাওয়ার মন্ত্র রবীন্দ্রনাথের দান।’

তরুণ বয়সেই লন্ডন ঘুরে এসেছেন কবি। ফলে বাংলা তথা ভারতের বাইরেও অন্য একটি দেশ ও তার সংস্কৃতির সঙ্গে পরিচয় হয়েছিল তাঁর। কিন্তু তখনও বাকি এই নীরব পৃথিবীর সঙ্গে আলাপ। পীতমবাবুর কথায় উঠে এল সেই নিবিড় দেখার প্রসঙ্গ। ‘বাংলার বিভিন্ন ঋতুর রূপ রবীন্দ্রনাথ শিলাইদহে যেভাবে দেখেছেন তা কিন্তু জোড়াসাঁকোতে বসে দেখতে পেতেন না।’

শেষে এসে আরেকটি চিঠির কিছু অংশ উল্লেখ না করলেই নয়।,‘সন্ধেটা কী চমৎকার, কী প্রকাণ্ড, কী প্রশান্ত, কী অগাধ সে কেবল স্তব্ধ হয়ে অনুভব করা যায়, কিন্তু ব্যক্ত করতে গেলেই চঞ্চল হয়ে উঠতে হয়…’ (ছিন্নপত্র, ২৩)। এই যে ব্যক্ত করতে গেলেই মানুষ চঞ্চল হয়ে ওঠে, হয়ে ওঠে মুখর, তার বিপরীতেই দাঁড়িয়ে সুবিশাল সজীব অথচ নীরব প্রকৃতি। নীরবতার সেই ইঙ্গিতময় দ্যোতনার ভিতরেই যেন বারবার জন্মাতে চেয়েছেন রবীন্দ্রনাথ। তাঁর নিজের লেখাতে ঠিক যেভাবে জন্মেছেন বারবার। হতেই পারে, শিলাইদহ ও ছিন্নপত্রাবলী রবীন্দ্রনাথের নিজেকে পুনরাবিষ্কার।

(এই খবরটি আপনি পড়তে পারেন HT App থেকেও। এবার HT App বাংলায়। HT App ডাউনলোড করার লিঙ্ক https://htipad.onelink.me/277p/p7me4aup)

টুকিটাকি খবর

Latest News

BJP নয়, CPMই আসলে সাম্প্রদায়িক, কারণ ব্যাখ্যা করলেন শুভেন্দু IPL-এ এখনই পাওয়া যাবে না সূর্যকে- হার্দিকের চিন্তা বাড়িয়ে সামনে এল বড় আপডেট কলকাতা মেট্রো এবার ছুটবে বিমানবন্দর পর্যন্ত, দুর্গাপুজোর আগে চালুর সম্ভাবনা স্বাস্থ্যসাথীর টাকা তৃণমূলের পৈত্রিক সম্পত্তি না কি? শুভেন্দু 'চমকিলা'র গানে বিভক্ত পঞ্জাব!ট্রেলার লঞ্চে হঠাৎ ঝরঝর করে কেঁদে ফেললেন কেন দিলজিৎ বিচারব্যবস্থাকে প্রভাবিত করা হচ্ছে বলে CJI-কে চিঠি ৬০০ আইনজীবীর, কটাক্ষ মোদীর দিল্লি হাইকোর্টে স্বস্তি কেজরিওয়ালের, তাঁর বিরুদ্ধে জনস্বার্থ মামলা খারিজ নতুন মাসের শুরুতেই পঞ্চকের অশুভ ছায়া, বিরত থাকুন শুভকাজ থেকে, মেনে চলুন এই নিয়ম মোবাইল দেখে রোগীর চিকিৎসা করবেন ডাক্তাররা, কলকাতার হাসপাতালে উন্নত প্রযুক্তি ‘‌ব্যক্তিগত তথ্য ফাঁস করেছে তৃণমূল’‌, রেখার স্বাস্থ্যসাথী কার্ড নিয়ে সরব অমিত

Copyright © 2024 HT Digital Streams Limited. All RightsReserved.