দিব্যি কথা বলছিলেন সবার সঙ্গে। আচমকাই কথা আটকে যায়। চোখ বুজে আসতে থাকে। হঠাৎই হৃদরোগ আক্রান্ত হন মাঝবয়সি ব্যক্তি। টাল না রাখতে পেরে কোনওরকমে ধপ করে বসে পড়েন চেয়ারে। আশেপাশের লোকজন সঙ্গে সঙ্গে কাছেই থাকা স্বাস্থ্য সচিবকে খবরটি জানান। তারপরেই তিনি ছুটে এসে কার্ডিওপালমোনারি রিসাসিটেশন বা সিপিআরের মাধ্যমে বাঁচিয়ে তোলেন তাঁকে। সম্প্রতি ঘটনাটির ভিডিয়োই সম্প্রতি ভাইরাল হয়েছে সমাজমাধ্যমে।
জানা যায়, মঙ্গলবার চণ্ডীগড় হাউজিং বোর্ডের অফিসে হঠাৎ করেই হৃদরোগে আক্রান্ত হন এক মাঝবয়সি ব্যক্তি। এরপর তিনি পড়েও যান। পড়ে গিয়েছেন শুনে ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন চণ্ডীগড়ের স্বাস্থ্যসচিব যশপাল গর্গ। রোগীকে সঙ্গে সঙ্গে তুলে চেয়ারে বসানো হয়। এরপর তাঁর বুকের বাঁ দিকে জোরে জোরে চাপ দিতে থাকেন তিনি। হৃৎপিণ্ড সচল করার জন্য সিপিআর পদ্ধতির আশ্রয় নেন যশপাল। কিছুক্ষণের চেষ্টায় প্রাণে বেঁচে যান রোগী।
তবে এই সিপিআর পদ্ধতি নিয়েই উঠেছে প্রশ্ন। সচিবের প্রশংসার পাশাপাশি অনেকেই চেয়ারে বসে সিপিআর করবার এই পদ্ধতি সঠিক কিনা সে নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। একাধিক চিকিৎসক ভিডিয়োটি শেয়ার করে জানান, সিপিআর এই পদ্ধতিটি একেবারেই ভুল। বরং এতে মারাত্মক ক্ষতিও হতে পারে রোগীর। চিকিৎসক তারিক ত্রাম্বু পোস্টটি শেয়ার করে প্রশংসার পাশাপাশি একটি সঠিক সিপিআরের ভিডিয়ো কমেন্টে আপলোড করে দেন। তবে আরেক চিকিৎসক বনতি সেতুপথি টুইটারে ভিডিয়োটি শেয়ার করে লেখেন, এটি সিপিআর পদ্ধতি নয়। কেউ এটা করার চেষ্টা করবেন না। জ্ঞান থাকলে একজন ব্যক্তির বুকের উপর এমন লাফানোর কোনও দরকারই হয় না। প্রসঙ্গত, চোখ বুজে এলেও সম্পূর্ণ অজ্ঞান হননি হৃদরোগে আক্রান্ত ব্যক্তি জনক লাল।
সঠিক সিপিআর কীভাবে করবেন?
- প্রথমে আক্রান্ত ব্যক্তিকে একটি সুরক্ষিত জায়গায় নিয়ে যান।
- তারপর মাথা আলতো কাত করে থুতনি উপরের দিকে করুন।
- এই অবস্থায় আপনার ডান হাতবাঁ হাতের উপর রেখে বা বাঁহাতটা ডান হাতের উপর রেখে আঙুলের মধ্যে আঙুল প্রবেশ করান।
- এবারে দুই হাত ওই অবস্থায় বুকের ঠিক মাঝ বরাবর রাখুন। লক্ষ্য রাখুন হাত যেন সবসময় সোজা থাকে। কোনওভাবেই হাত ভাঁজ করবেন না।
- এবারে ৩০ বার দ্রুত বুকে চাপ দিন। মনে রাখুন চাপটি দ্রুত ও শক্ত হতে হবে। শক্ত বলতে বুকে চাপ দেওয়ার হাতের চাপে বুক যাতে ২ ইঞ্চি ভিতরে ঢোকে।
- এভাবে ৩০ বার বুকে চাপ দেওয়ার পর ব্যক্তির নাক টিপে মুখে মুখ লাগিয়ে দুবার বেলুন ফোলানোর মতো ফুঁ দিতে হবে।
- প্রতি ফুঁতে আক্রান্ত ব্যক্তির পেট যেন উপরের দিকে ওঠে। অর্থাৎ ফুলে ওঠে।
- এভাবে ৩০ বার চাপের পর দুবার (৩০:২ অনুপাতে) করে ফুঁ দিতে থাকতে হবে। যতক্ষণ না অ্যাম্বুলেন্স আসে, ততক্ষণ মিনিটে ১০০ থেকে ১২০ বার এই চাপ দিতে হবে।
এই খবরটি আপনি পড়তে পারেন HT App থেকেও। এবার HT App বাংলায়। HT App ডাউনলোড করার লিঙ্ক https://htipad.onelink.me/277p/p7me4aup