সারাদিনের কাজ ঠিকভাবে করতে হলে মানসিক স্বাস্থ্য ঠিক রাখা জরুরি। আর মানসিক স্বাস্থ্য ঠিক থাকলে খুব জটিল সমস্যারও সমাধান করা সম্ভব। অথচ বর্তমান সময়ে সবচেয়ে বেশি অবহেলিত হল মানসিক স্বাস্থ্য। কোভিডকালে মানুষের ঘরবন্দি অবস্থার শুরু। এই সময় থেকেই মনের স্বাস্থ্যের খেয়াল রাখার প্রয়োজনীয়তা বাড়ে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সাম্প্রতিক রিপোর্টে জানা গিয়েছে, ২০১৯ সালে সারা বিশ্বে মোট এক মিলিয়ন মানুষ মানসিক ডিসঅর্ডারে ভুগছেন। এর মধ্যে ১৫ শতাংশ হল কর্মক্ষম পরিনতবয়স্ক মানুষ। কোভিডের প্রথম বছরে অ্যাংজাইটি ও অবসাদগ্রস্ত মানুষের সংখ্যা ২৫ শতাংশ বেড়ে গিয়েছিল। বিশেষজ্ঞের পরামর্শ, মন ভালো রাখতে দৈনন্দিন জীবনযাপনে বদল আনা দরকার। মানসিক স্বাস্থ্য ভালো করে তুলতে নিয়মিত ব্যায়াম, ধ্যান, ডিজিটাল পর্দার সামনে বেশিক্ষণ না থাকার পরামর্শ দিয়ে থাকেন বিশেষজ্ঞরা। তবে এর পাশাপাশি ডায়েটেও পরিবর্তন জরুরি।
প্রতিদিনের ডায়েটে কিছু নির্দিষ্ট উপাদান রাখার পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা। বিজ্ঞানের ভাষায় এগুলো হল মাইক্রোনিউট্রিয়েন্টস্। বিভিন্ন সমীক্ষায় দেখা গেছে, মনের স্বাস্থ্য ভালো রাখার পিছনে নিউট্রিয়েন্টের ভূমিকা রয়েছে।
জিওন লাইফসায়েন্সের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ডাঃবিবেক শ্রীবাস্তব এইচটি লাইফস্টাইলকে তেমনই পাঁচটি মাইক্রোনিউট্রিয়েন্টের কথা জানালেন।
১. ভিটামিন ডি: ২০১৫ সালের এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, ভারতে প্রতি ২০ জনের মধ্যে একজন অবসাদে ভোগেন। ভিটামিন ডি আমাদের কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রের কার্যক্ষমতা ঠিক রাখতে সাহায্য করে। অবসাদজনিত সমস্যা কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্র থেকেই উৎপন্ন হয়।
২. ভিটামিন সি: ভিটামিন সি-এর অভাবে নিউরোট্রান্সমিটার ডোপামিন ও সেরানিনের ক্ষরণ কমে যেতে থাকে। ডায়েটে ভিটামিন সি থাকলে অ্যাংজাইটি, অবসাদ ও বাইপোলার ডিসঅর্ডারের মতো সমস্যা এড়ানো যায়।
৩. ভিটামিন বি: ভিটামিন বি মুড নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। ভিটামিন বি ১২-এর অভাবে শরীরে ক্লান্তিভাব আসে ও স্মৃতিশক্তি দুর্বল হয়ে যায়। ভিটামিন বি সিক্স ও ফোলেটের অভাবে অবসাদের সমস্যা তৈরি হয়। প্রতিদিনের ডায়েটে ভিটামিন বি থাকলে কগনিটিভ কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।
৪. জিঙ্ক: জিঙ্কের অভাবে আবেগের ভারসাম্য নষ্ট হতে পারে। একইসঙ্গে স্ট্রেস নিয়ন্ত্রণেও সমস্যা দেখা দেয়। জিঙ্কের অভাবে মনোযোগের সমস্যা, ঘুমের সমস্যা ও বিভিন্নরকম মানসিক রোগ দেখা দিতে পারে।
৫. ওমেগা থ্রি: মস্তিষ্কের বার্ধক্য এড়াতে ও কগনিটিভ কার্যক্ষমতা ঠিক রাখতে এটি সাহায্য করে। ব্যক্তিত্ব, ব্যবহার ও মনোযোগ নিয়ন্ত্রণেও ওমেগা থ্রি মুখ্য ভূমিকা নেয়। বাইপোলার ডিসঅর্ডার, মাতৃত্বকালীন অবসাদ নিয়ন্ত্রণেও এর ভূমিকা রয়েছে।