বাংলা নিউজ > টুকিটাকি > 15th August, 1947: প্রথম স্বাধীনতা দিবস ভাবতে বইয়ের পৃষ্ঠা থেকে উঁকি দেয় নেতাজির রবার স্ট্যাম্প: সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়
পরবর্তী খবর

15th August, 1947: প্রথম স্বাধীনতা দিবস ভাবতে বইয়ের পৃষ্ঠা থেকে উঁকি দেয় নেতাজির রবার স্ট্যাম্প: সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়

সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়ের স্মৃতিচারণে প্রথম স্বাধীনতা দিবস। গ্রাফিক্স: সুমন রায়

ময়দানের খেলার সময় ইস্টবেঙ্গল মোহনবাগানের দ্বৈরথ থাকলেও নিজেদের মধ্যে এক সুসম্পর্ক গড়ে উঠেছিল। বিশেষ করে আমার স্কুলে পূর্ববঙ্গ থেকে শিক্ষকরা এসে চাকরিতে যোগদান দিয়েছিলেন। আমাদের পড়াতেন।

সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়

সালটা ১৯৪৭। ১৫ অগস্ট তো নয়, ১৪ অগস্ট রাত বারোটা। সেই সময়ও ইংরেজ পুরোদস্তুর রয়ে গিয়েছে। ইংরেজি চালচলনে সবকিছু চলত। আমাদের বাড়ি ছিল গঙ্গার তীরে। বাড়ির অদূরেই ছিল থানা। ব্রিটিশ আমলের থানা বলে রাজকীয়তা ছিল পুরোভাগে। কারণ রাতারাতি তো সব পরিবর্তন সম্ভব নয়। থানার মাথার উপর খদ্দের এক পতাকা তোলা ছিল। আমরা এইসব দেখছি সন্ধে থেকেই। জানি রাত বারোটায় একটা কাণ্ড ঘটবে। ইতিমধ্যে আমাদের স্থানীয় প্রবীণ বিশিষ্ট মানুষ ধুতি, খদ্দরের পাঞ্জাবি, কাঁধে উত্তরীয় পড়ে থানার দিকে এগিয়ে চলছিল। আমাদের এখানে একটা পাঁচতলা বাড়ি ছিল। এই বাড়ি ছিল ডাচ-ওলন্দাজদের কুঠি। পরবর্তী সময় বেনারসি শাড়ির ব্যবসায়ী হরিমোহন দাঁ মহাশয় কিনে নিয়েছিল। তাঁর উত্তরসূরীরা সেই বাড়ির ছাদে বড়ো বন্দুক নিয়ে দাঁড়িয়েছিল।

আলো জ্বলছে, পতাকা উড়ছে। তখন আমিও আমার বন্ধুরা ছিলাম ছোট্ট ইঁদুরছানার মতো। সেইরাতে আমাদের ছিল স্বাধীনতা। তাই আমরা ধীরে ধীরে জমায়েত হই। ইতিমধ্যে গঙ্গায় এক দৃশ্য। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় এই গঙ্গায় আমেরিকার সৈন্য ছাউনি তৈরি করেছিল। সারিবদ্ধভাবে অ্যান্টি এয়ার ট্র্যাপ গান আকাশের দিকে মুখ করে সাজানো ছিল। সঙ্গে ছিল বিশাল বেলুন ব্যারেজ। আর ছিল ডেস্ট্রয়ার। আমাদের বরানগর থেকে বাগবাজার ঘাট অবধি সাজানো হয়েছিল। আসলে জাপানিরা অতর্কিত হামলা চালালে প্রতিরোধ করার নমুনা। একটু পরেই রাত বারোটা বাজল। সঙ্গে সঙ্গে সাইরেন‌ থেকে সমস্ত পুলিশের বন্দুক থেকে গুলি এবং আমরা সকলে বন্দেমাতরম করে নাচ গান করছি। আমাদের দেওয়া হয়েছিল মিষ্টি, সঙ্গে ছোট্ট একটি পতাকা। আমরা ওগুলো নিয়ে বাড়িতে ফেরত আসি। তারপর আবদার করতে থাকি বড়োদের। আবদার ছিল বড়ো এক পতাকা দিতে হবে।

আমার সম্পর্কের এক কাকু দুটো মেয়েদের ব্লাউজ নিয়ে ও সাদা কাপড় দিয়ে সেফটিপিন দিয়ে পতাকা বানিয়ে দিয়েছেন। আমি দেখে চরম হেসেছি। সকাল হতেই অধিকাংশ বাড়িতের মাথার উপর পতাকা উড়িয়ে দিয়েছিলেন বিশেষ করে কংগ্রেসের নেতারা। দিনটা বৃষ্টির ছিল না, সুন্দর একটা দিন ছিল। পতপত করে পতাকা উড়ছে। আমাদের এখানে স্বরস্বতী পূজোয় ঘুরে উড়তো, আর ১৫ আগস্ট চারদিকে পতাকা উড়তো। আমরা হা করে দেখতাম। অনেকে দেখতে দেখতে খানা খন্দে পড়ে যান। তবুও আনন্দের শেষ ছিল না। কিন্তু ইংরেজ চলে গেছে। ইংরেজদের উপর খুব রাগ ছিল। তখন জাপানিরা বোমা ফেলত। সেই সময় একটি ছড়া বলতাম 'বোম ফেলেছে জাপানি, বোমের ভেতরে কেউটে সাপ, ব্রিটিশ বলে বাপ রে বাপ'। সেই সময় আমরা নেতাজির খুব ভক্ত ছিলাম। নেতাজির রবার স্ট্যাম্প সারা বইয়ে লাগিয়েছিলাম। আর জয় হিন্দ স্ট্যাম্প লাগিয়েছিলাম। এই জন্য খুব বকাও খেয়েছি। কিন্তু সেই সময় কি বুঝতাম স্বাধীনতা মানে কী!

এখন স্বাধীনতা গা সহ্য হয়েছে। তার আগেই ১৯৪৬ সালে শরণার্থীরা ধীরে ধীরে ভিড় করতে শুরু করেছে। স্বাধীনতার পর পণ্ডিত জওহরলাল নেহরু থেকে শরৎ বসু গঙ্গার তীরে শরণার্থী শিবিরের সঙ্গে দেখা করতে এসেছিলেন। শুধু শরণার্থী নয় INA-এর অনেক সৈন্যরাও আশ্রয় নিয়েছিল। মজার কথা বলি সেই সৈন্যদের অনেক ভেড়া ছিল, আর সেই ভেড়াগুলো খুব গুতো দিত। তখন দেশ স্বাধীন হয়েছে। গঠনমূলক কাজকর্ম শুরু হয়েছে। সঙ্গে সঙ্গে কলকাতার শিয়ালদহ স্টেশন থেকে সার্কুলার রোডের কথা আমরা ইতিহাস থেকে সবাই জানি। এক্ষেত্রে আমার এক প্রিয় ভোলাদা ছিলেন। ভোলাদা খুব সাহিত্য রসিক মানুষ ছিলেন, খুব থিয়েটার দেখতেন। বিটি রোডের ধারে একটা চায়ের দোকান ছিল। সেই চায়ের দোকানে পূর্ব পাকিস্তানের অনেক সম্ভ্রান্ত মানুষ ওদেশের অনেক কথা জানাতেন। এই চায়ের দোকানে অনেক অনেক নামী সাহিত্যিকরা প্রতিনিয়ত আসতেন। গৌরকিশোর ঘোষ, সুনির্মল বসু থেকে শ্রদ্ধেয় বিমলদা, রবিকিশোর মালিকের মতো সাহিত্যিকদের নাম করা যেতেন। ধীরে ধীরে পূর্ববঙ্গের মানুষেরা আমাদের বন্ধু হয়ে গিয়েছিলেন।

ময়দানের খেলার সময় ইস্টবেঙ্গল মোহনবাগানের দ্বৈরথ থাকলেও নিজেদের মধ্যে এক সুসম্পর্ক গড়ে উঠেছিল। বিশেষ করে আমার স্কুলে পূর্ববঙ্গ থেকে শিক্ষকরা এসে চাকরিতে যোগদান দিয়েছিলেন। আমাদের পড়াতেন। মনে পড়ে ইতিহাস ও অঙ্কের মাস্টারমশাইয়ের কথা। নতুন করে ইতিহাস শিখেছি এবং নতুন তালে অঙ্ক বুঝেছি। আর সেই শিক্ষকেরাই এই দেয়াল পত্রিকা, সভা-সমিতি, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান কিভাবে করতে হয় শিখিয়েছেন। স্বাধীনতার কথা মনে করলে এই স্মৃতিগুলোই এখনও তাড়া করে।

Latest News

টেস্টের প্রথম বলেই স্টার্কের ইনসুইং ইয়র্কার, শাফল করে খেলতে গিয়ে আউট যশস্বী শাহরুখের সঙ্গে বিবাদ নিয়ে সরব অভিজিৎ ভট্টাচার্য প্রিয়াঙ্কার প্রযোজনা সংস্থা ভারত ছেড়ে চলল বিদেশে, তাহলে কি আর দেশে ফেরা হবে না ‘মা’ বলে ডাকে না কেউ, তাও দুই ছেলে মেয়েকে নিয়ে কোনও অভিযোগ নেই দিয়া মির্জার হাতে নেই কাজ! তার মধ্যেই ভেঙে ফেলা হল আমিরের পালি হিলের বাড়ি, কিন্তু কেন? UPI পেমেন্টে নয়া নিয়ম জারি করল RBI, গ্রাহকদের জন্য বড় সুখবর রক্তচাপ থেকে চর্মরোগ সব কিছুতেই কাদা থেরাপি উপকারী, জেনে নিন এর বিস্ময়কর গুণ বছরের শেষে অনেক শুভ গ্রহ গতিপথ পরিবর্তন করবে, ৬টি রাশির সুবর্ণ সময় শুরু হবে আধাসামরিক বাহিনীতে বাড়ছে আত্মহত্যা-চাকরি ছাড়ার হার, সামাল দিতে নয়া ব্যবস্থা রাজ্যসভায় থোক-থোক ৫০০ টাকার নোট মিলল বিরোধীর আসনে, বললেন ‘আমি তো ১টা নিয়ে যাই’

IPL 2025 News in Bangla

ধোনির সঙ্গে ১০ বছরের বেশি কথা নেই, নিজেই জানালেন হরভজন, ঝামেলা কি জোরদার? কেরল ম্যাচের পর মহারাষ্ট্র ম্যাচেও নেই সচিনপুত্র! গোয়া দল থেকেও কি বাদ অর্জুন? ভাইরাল ‘গুলাবি শরারা’য় জমিয়ে ঠুমকা ধোনির, সাক্ষীকে দিলেন টেক্কা! দেখুন ভিডিয়ো IPLর আগে স্বস্তিতে CSK! ৩০ লাখের শ্রেয়স গোপাল সৈয়দ মুস্তাক আলিতে নিল হ্যাটট্রিক… ক্রিকেট মাঠ ছেড়ে SBIর ডিউটিতে! ভারতের প্রাক্তন ক্রিকেটার মন দিচ্ছেন নতুন কাজে… KKRর সুসংবাদ! আবু ধাবি T10 জিতলেন রাসেল-নরকিয়া! ফাইনালে দুরন্ত বোলিং নরকিয়ার! পন্তের রেকর্ড ভাঙার পর ফের ঝোড়ো সেঞ্চুরি IPL-এ ‘ব্রাত্য’ উর্ভিল প্যাটেলের এখনও ধোনিকে আউট করার ঘোরে যশ দয়াল, স্টোরি পোস্ট করতেই ট্রোল মাহি ভক্তদের আমি কিন্তু IPL ট্রফি জিতেছি, RCB-র তারকা ব্যাটসম্যানকে খোঁচা গিবসের CSK নয়, ড্যাডস আর্মি এবার কলকাতা,IPL 2025-এ সব থেকে বুড়ো দল নিয়ে মাঠে নামবে KKR

Copyright © 2024 HT Digital Streams Limited. All RightsReserved.