দীর্ঘ ৫ বছর পর বিশ্বভারতীর আশ্রম প্রাঙ্গণ এবার সবার জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে। নয়া উপাচার্য আসার পরেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পর্যটকরা এবার কাঁচমন্দির, উপাসনাগৃহ, গৌরপ্রাঙ্গণ ও আশ্রম এলাকা ঘুরে দেখার সুযোগ পাবেন। শান্তিনিকেতনের আশ্রমিক থেকে বিশ্বভারতীর ছাত্রছাত্রী ও কর্মিবৃন্দ সকলেই এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন।
‘হেরিটেজ নষ্ট হবে না তো?’
তবে বর্তমানে শান্তিনিকেতনের আশ্রম এলাকা ইউনেস্কোর হেরিটেজ তালিকাভুক্ত। তাই এই অঞ্চলে পর্যটকরা ঢুকলে অভ্যন্তরীণ পরিবেশ নষ্ট হবে না তো? সেক্ষেত্রে হেরিটেজ হিসেবে বড় ক্ষতি হতে পারে শান্তিনিকেতনের। এই প্রসঙ্গে উপাচার্যের মন্তব্য, আশ্রম এলাকার ভিতর সুরক্ষিত ও অক্ষত রাখতে একটি ‘সাইট ম্যানেজমেন্ট কমিটি’ তৈরি করা হবে। এই কমিটিই ঠিক করবে কীভাবে আশ্রম এলাকার ভিতরে পর্যটকরা ঘোরাফেরা করবেন।
আরও পড়ুন - ‘রবীন্দ্রনাথের আদর্শ ভালো বুঝি, আশা করি কোনও সমস্যা হবে না!’ HT বাংলায় Exclusive বিশ্বভারতীর নতুন উপাচার্য
ভেঙে গেল ‘অচলায়তন’
শান্তিনিকেতনের আশ্রম সকলের জন্য অবাধ করে দেওয়া হলেও এখনও পর্যন্ত কোনও সরকারি বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়নি। খুব শিগগিরই সেই বিজ্ঞপ্তি জারি করা হবে বলে জানানো হয়েছে। প্রাক্তন উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর সময় শান্তিনিকেতনের আশ্রম প্রাঙ্গণে পর্যটকদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করে দেওয়া হয়। দীর্ঘ পাঁচ বছর সেই পরিস্থিতিতেই ছিল শান্তিনিকেতন। কিন্তু নয়া উপাচার্য নিয়োগের সঙ্গে সঙ্গেই সেই ‘অচলায়তন’ ভেঙে গেল বলে মনে করছেন অনেকে।
আরও পড়ুন - বাংলার বিপন্ন সংস্কৃতি বিশ্বের দুয়ারে, ব্রিটিশ মিউজিয়াম শোভা পাচ্ছে হাওড়ার ছোট্ নৌকা
কোথায় কোথায় প্রবেশ অবাধ
আশ্রম এলাকা প্রবেশ নিষিদ্ধ করার পর সাধারণ মানুষ, পর্যটক ও আশ্রমিকদের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হয়েছিল। কিন্তু এবারে পর্যটকরা সিংহসদন, গৌরপ্রাঙ্গণ, আম্রকুঞ্জ, ঘণ্টাতলা, ছাতিমতলা ঘুরে দেখতে পারবেন। এছাড়াও, আশ্রমে থাকা অতুলনীয় সব ভাস্কর্য কাছ থেকে দেখতে পাবেন পর্যটকরা। বিশ্বভারতীর কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত একটি আন্তর্জাতিক কর্মশালায় উপাচার্য বলেন, ‘শান্তিনিকেতন ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট। এর সঙ্গে পর্যটনের যোগসূত্র রয়েছে। আমাদের পর্যটনও বাড়াতে হবে। আমি বৃৃহস্পতিবারই বিশ্ববিদ্যালয়ের আশ্রম এলাকা খুলে দেওয়ার অনুমতি দিয়ে দিয়েছি।’
‘বিশ্বভারতী মুক্ত ক্যাম্পাস’
ক্যাম্পাসের নানা অংশ প্রাচীর দিয়ে ঘেরায় আগের উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীকে বহু সমালোচনার মুখে পড়তে হয়। কিন্তু প্রবীর হাঁটতে চান রবীন্দ্রনাথের আদর্শের পথেই। তাঁর কথায়, ‘বিশ্বভারতী মুক্ত ক্যাম্পাস। এর কোনও সীমানা নেই।’ তবে ঠাকুর পরিবারের সদস্য সুপ্রিয় ঠাকুর থেকে শান্তিনিকেতন ট্রাস্টের সম্পাদক অনিল কোনার প্রত্যেকেই দাবি করছেন, এর পাশাপাশি আশ্রম এলাকায় নজরদারিও বাড়াতে হবে যাতে হেরিটেজ বিপন্ন না হয়।