Saraswati Puja 2025 For Bengalis: সরস্বতী পুজো পশ্চিমবঙ্গ, বিহার, ওড়িশা, উত্তরপ্রদেশ, এবং কিছু দক্ষিণ ভারতীয় রাজ্যেও হয়ে থাকে। দেবী এখানে জ্ঞান, সঙ্গীত, শিল্প, বিদ্যা, ও বুদ্ধির দেবী রূপে পূজিতা। সাধারণত বসন্তের ঋতুতে, মাঘ মাসের শুক্লা পঞ্চমী তিথিতে হয় এই পুজো।
সরস্বতী পুজোর ইতিহাস বিভিন্ন পুরাণ ও পৌরাণিক কাহিনীর মধ্যে নিহিত। একাধিক পুরাণে সরস্বতী দেবীর বর্ণনা এসেছে। তবে, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সরস্বতীকে ব্রহ্মার স্ত্রী হিসেবে দেখানো হয়। এছাড়া, বাংলার ইতিহাসে সরস্বতী পুজো বিশেষ স্থান দখল করে আছে। ঐতিহ্যগতভাবে, শিক্ষার্থীরা এই দিনটি তাদের বই, খাতা ও লেখার সরঞ্জাম দেবীর পায়ে অর্পণ করে পুজো করেন। বিশ্বাস করা হয়, এই দিন জ্ঞান অর্জন এবং শিক্ষায় উন্নতি লাভের একটি শুভ দিন।
আরও পড়ুন - ‘বিদ্যা দদাতি বিনয়ং’ শিক্ষাই জীবনের পাথেয়, পরিজনদের পাঠান সরস্বতী পুজোর শুভেচ্ছা
কী বলছে পুরাণ?
সরস্বতী পুজো শুরু হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে বেশ কয়েকটি পৌরাণিক কাহিনী আছে। বলা হয়, দেবী সরস্বতী ব্রহ্মার মুখ থেকে জন্মগ্রহণ করেছিলেন এবং তাঁর সঙ্গীত, বিদ্যা ও কলা-শিল্পের প্রতি গভীর প্রতিভা ছিল। ব্রহ্মা তাঁকে বুদ্ধি, জ্ঞান এবং শিক্ষা দিতে পারেননি। দেবী সরস্বতী নিজেই এগুলির প্রতিভা অর্জন করেন। তাই সরস্বতী জ্ঞানের দেবী হিসেবে পূজিত হন এবং তাঁর উদ্দেশে পুজো শুরু হয়।
যেভাবে বাঙালির আপন
বাংলায় সরস্বতী পুজোর সূত্রপাত সম্পর্কে ইতিহাসবিদদের নানা মত রয়েছে। অনেকেই বলেন, বাংলায় সরস্বতী পুজো শুরু হয় ১৮০০ সালের দিকে। জানা যায়, রাজা কৃষ্ণচন্দ্র রায় (১৮০০–১৮৪৫) সরস্বতী পুজো শুরু করেছিলেন তাঁর রাজবাড়িতে। এই সময়ে তিনি পুজোকে একটি সাংস্কৃতিক আয়োজন হিসেবে গ্রহণ করেছিলেন, যেখানে শিক্ষার্থীরা তাঁদের বইপত্র দেবীর সামনে রেখে পুজো করতেন এবং তাদের বিদ্যা ও জ্ঞানের উন্নতির জন্য আশীর্বাদ চাইতেন।
আরও পড়ুন - সরস্বতী পুজোয় মায়ের ভোগে থাক গোলাব জামুন! বাড়িতেই চটজলদি বানিয়ে ফেলুন এইভাবে
বঙ্গজীবনের অঙ্গ
ঊনবিংশ শতাব্দীতে বাংলায় শিক্ষা এবং সংস্কৃতির প্রসারের সঙ্গে সঙ্গে সরস্বতী পুজো আরও জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। বিশেষ করে, বাংলার শিক্ষিত মধ্যবিত্ত সমাজে পুজোর আচার-অনুষ্ঠান একটি সাধারণ ঐতিহ্য হয়ে ওঠে। এ সময়ে এটি স্রেফ ধর্মীয় অনুষ্ঠান না হয়ে, জ্ঞান ও শিক্ষার প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে একটি সামাজিক অনুষ্ঠান হয়ে দাঁড়ায়।