Science News: এমনিতে অ‘পদার্থ’। তাকেই পদার্থে রূপান্তরিত করল বিজ্ঞানীদের প্রচেষ্টা। বিজ্ঞানের ইতিহাসে এই প্রথমবার। স্তব্ধ হল আলো। বিশ্বের সবচেয়ে গতিশীল তরঙ্গ বিশেষ পদ্ধতিতে ‘জমে গেল’ বরফের মতো। আলোকে বিজ্ঞানের পরিভাষায় ‘ফ্রিজ’ করার পদ্ধতি খুঁজে পেলেন বিজ্ঞানীরা। সম্প্রতি বিখ্যাত বিজ্ঞানবিষয়ক জার্নাল নেচার-এ প্রকাশিত হয়েছে এই গবেষণা। গবেষকদের কথায়, আলোকে ‘ফ্রিজ’ করে দেওয়ার ফলে তৈরি হয়েছে একটি সুপারসলিড। যা একইসঙ্গে সলিড, আবার সুপারফ্লুইডও। বিজ্ঞানের নিরিখে এটি পদার্থের একটি বিরল অবস্থা।
আরও পড়ুুন - ফুচকার জল হবে দোকানের মতো জিভে জল আনা! রইল সিক্রেট মশলার রেসিপি
সহজ করে বুঝে নেওয়া যাক
আলো আসলে তরঙ্গ। এটিকে বিজ্ঞানে পদার্থ হিসেবে গণ্য করা হয় না। কারণ এরা কোনও স্থান দখল করে থাকে না। তাছাড়া, এদের ভর নেই। অন্য দিকে, সলিড বা কঠিন পদার্থ পদার্থের একটি অবস্থা। যেমন, জল সাধারণ উষ্ণতায় তরল পদার্থ। শূন্য ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছালে বরফ হয়ে যায়। তখন এটি কঠিন পদার্থ। আবার ১০০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছালে বাষ্প। তখন এটি গ্যাস। এই অবস্থায় আলোকে ‘ফ্রিজ’ করে দেওয়ার পর তৈরি হয়েছে সুপারসলিড। অর্থাৎ এক দিকে যেমন এটি কঠিন পদার্থ, তেমনই অন্য দিকে সুপারফ্লুইড অর্থাৎ ‘অসাধারণ’ তরল।
কেন সুপারসলিড?
‘বরফের মতো জমে যাওয়া’ আলোকে সাধারণ তরলের থেকে বেশি মনে করার কারণ? সিএনআর ন্যানোটেকের আন্তোনিও জিয়ানফেট ও পাভিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেভিড নাইগ্রোর নেতৃত্বে এই গবেষণা হয়। গবেষকদের ব্যাখ্যা, অন্যান্য তরলের মতোই এর তরলের গুণ রয়েছে। কিন্তু সাধারণ তরলের থেকে অনেক দ্রুত চলে। আবার একই সঙ্গে ‘জমে গিয়েছে’ বলে এর মধ্যে কঠিন পদার্থের ধর্মও রয়েছে। ফলে একই সঙ্গে সলিড ও সুপারফ্লুইডের ধর্ম মিলে ‘ফ্রিজ’ হওয়া আলো একটি বিরল অবস্থার পদার্থ। সেটি বিরল অবস্থার নাম সুপারসলিড।
আরও পড়ুুন - লাউ উচ্ছের ডাল রান্নার সময় দিন এই ফোড়ন, জিভে জল আনা স্বাদেই চেটেপুটে খাবে সব
কীভাবে সম্ভব হল?
আলোকে ‘ফ্রিজ’ করতে একটি সেমিকন্ডাক্টর প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করেছেন গবেষকরা। সেমিকন্ডাক্টরের মধ্যে ইলেক্ট্রন যেমন আচরণ করে, ফোটন তেমনই আচরণ করছে কি না সেটি প্রথমে দেখা হয়। এর পর দেখা যায়, ধীরে ধীরে ঘন হয়ে পদার্থের আকার নিচ্ছে, ওই হাইব্রিড ফোটন তরঙ্গ। গবেষকদের কথায়, ‘আলোর সুপারসলিডিটি ধর্ম বোঝা সবে শুরু হল এই আবিষ্কারের মাধ্যমে।’ এর ভিত্তিতে আগামী দিনে আরও নতুন গবেষণার পথ খুলে যেতে পারে বলে মনে করছেন গবেষকরা।