বর্তমান প্রযুক্তির যুগে জীবনে কর্মব্যস্ততা থাকলেও, দিনের বেশির ভাগ সময় কাটে চেয়ার টেবিলে বসে। অফিসে বসে কাজ করা বা বাড়িতে এসে টেলিভিশনের আড্ডা, দিনের একটা বড় সময় বসেই কাটছে। দীর্ঘক্ষণ বসে থাকার ফলে আমাদের শরীরে সচলতা ক্রমশ কমে যাচ্ছে। যার পরিণতি হতে পারে ভয়াবহ। কিছু গবেষণায় বলা হয়েছে এই অভ্যাসের ফলে বাড়তে পারে মৃত্যুঝুঁকি।
আমেরিকার বিশিষ্ট পুষ্টিবিদ ড. জেমস লিভিন অলস জীবনযাত্রাক ক্ষতিকর প্রভাব নিয়ে গবেষণা করেছেন। তাঁর মতে, বসে থাকা ধূমপানের চেয়েও ক্ষতিকর। এটি এইচআইভি ভাইরাসে চেয়েও বেশি মৃত্যুর জন্য দায়ী। গবেষণায় দেখা গেছে দীর্ঘক্ষণ বসে থাকার কারণে শরীরে বিভিন্ন ধরনের ক্যানসার,হৃদরোগ এবং ডায়াবিটিস হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়।
আমেরিকার কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে, যাঁরা দিনে ১৩ ঘণ্টা বা তার বেশি বসে থাকেন, তাঁদের অকাল মৃত্যু ঝুঁকি দ্বিগুণ বেড়ে যায়। আবার দেখা গিয়েছে যাঁরা টানা আধ ঘন্টা বসে থাকেন তাঁদের অকাল মৃত্যুর ঝঁকি অনেক কম।
আমেরিকার জানার্ল অব এপিডেমিওলজি-র পক্ষ থেকে একটি গবেষণা চালানো হয়। এই গবেষণাটিতে ৫৩ হাজার ৪৪০ জন পুরুষ এবং ৬৯ হাজার ৭৭৬ জন মহিলাকে ১৪ বছর ধরে পর্যবেক্ষণ করা হয়।গবেষণার ফলাফলে দেখা যায় যারা দিনে ছয় ঘণ্টার বেশি সময় বসে থাকেন, তাঁদের অকাল মৃত্যুর সম্ভাবনা, দিনে যাঁরা তিন ঘণ্টা বা তার কম সময় বসে থাকেন, তাদের চাইতে বেশি।
উপরের গবেষণাগুলি থেকে এই সিদ্ধান্তে আসা যেতে পারে, দীর্ঘক্ষণ স্থির হয়ে বসে কাজ করা স্বাস্থ্য সম্মত নয়। যাঁদের কাজের কারণে অনেকক্ষণ বসে থাকতে হয় তাঁরা অবশ্যই নিয়মিত শরীরচর্চা করবেন। চেষ্টা করতে হবে কিছুক্ষণ বসে থাকার পরে কিছু সময়ের জন্য হলেও যেন চলাফেরা করা সম্ভব হয়।