দর্শকদের খুশি করার জন্য, একটানা ১০ ঘণ্টা ধরে খাবার খেতেন মহিলা। ইউটিউবে প্রায়ই এমন বিপজ্জনক চ্যালেঞ্জ দেখিয়ে সাবস্ক্রাইবার বাড়িয়েছিলেন ঠিকই, কিন্তু জীবনের মেয়াদ বাড়াতে পারেননি। লাইভ স্ট্রিমিংয়ের সময়ই প্রাণ হারিয়েছেন তিনি।
২০২০ সাল থেকে চিনে মাকবাং ভিডিয়ো তৈরির একটি প্রবণতা রয়েছে। এই ভিডিয়োয় মানুষ প্রচুর খাবার খান। এ কারণে তাঁদের ওজন বাড়তে থাকে, স্বাস্থ্যের ক্ষতি হতে থাকে, তা বন্ধ করতে চিন সরকার এই ধরনের ক্রিয়াকলাপের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করলেও লাভ হয়নি। আজও দেশের অনেক মানুষ বিনা দ্বিধায় মাকবাং ভিডিয়ো তৈরি করে চলেছেন। এই কারণেই এদিন মারা গিয়েছেন প্যান নামক মহিলাটি।
আরও পড়ুন: (Bacteria Outbreak: প্যাকেটে জমিয়ে রাখা মাংস খেয়ে হাসপাতালে ভর্তি ২৮, ব্যাকটিরিয়া সংক্রমণে মৃত ২)
ঠিক কী ঘটেছিল
চিনের বাসিন্দা প্যান জিয়াওটিং নামের এই ২৪ বছর বয়সী মহিলা ইউটিউবে খাবার-সংক্রান্ত ভিডিয়ো তৈরি করতেন। ইউটিউবার হওয়ার আগে পেশায় একজন ওয়েট্রেস ছিলেন তিনি। অন্যান্য ইউটিউবারদের মাকবাং-এর মাধ্যমে লক্ষ লক্ষ এবং কোটি টাকা উপার্জন দেখে প্যান অনুপ্রাণিত হয়েছিলেন৷ শুরুতে দর্শকদের কাছ থেকে বিশেষ সাড়া না পেলেও খাবারের পরিমাণ বাড়ানোর পর মানুষ তাঁর ভিডিয়ো দেখতে শুরু করেছিলেন। আগে প্যান তাঁর অবসর সময়ে খাবারের ভিডিয়ো বানাতেন। তবে মানুষের ভালোবাসা দেখে এটাকেই নিজের পেশা বানিয়ে নিয়েছিলেন তিনি। এরপর প্যান নিজের চাকরি ছেড়ে দিয়ে একটি বাড়ি ভাড়া নিয়ে, সেটাকেই নিজের স্টুডিও হিসেবে ব্যবহার করতে শুরু করেন।
আরও পড়ুন: (Anxiety problem: সব সময় উদ্বেগে থাকেন? জানেন রক্ত জমাট বাঁধার মতো সমস্যা হতে পারে আপনার)
ওজন ছিল ৩০০ কেজি
প্যানের বাবা-মা তাঁর স্বাস্থ্য সম্পর্কে অত্যন্ত উদ্বিগ্ন ছিলেন। তাঁরা তাঁর কাজের বিরুদ্ধেও ছিলেন। যত বেশি মানুষ তাঁর লাইভ স্ট্রিম দেখেছেন, প্যান তত বেশি নিজের স্বাস্থ্যকে অবহেলা করেছেন।
তাঁর বাবা-মা এবং কিছু দর্শক তাঁকে প্রতিনিয়ত কম খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে আসছিলেন। যাইহোক, তিনি সবসময় তাঁদের বলেছিলেন যে তিনি ভাল আছেন। কিন্তু এইভাবে প্রতিদিন খাবারের ভিডিয়ো করার কারণে তাঁর ওজন বেড়ে গিয়েছিল ৩০০ কেজি।
আরও পড়ুন: (Kim Kardashian: সারা শরীরে লাল ছোপ, যন্ত্রণা! কোন জিনগত রোগে আক্রান্ত কিম কার্দাশিয়ান)
গত ১৪ জুলাই প্রতিদিনের মতো প্যান তাঁর চ্যানেলে লাইভ এসে খাবার খাচ্ছিলেন। এ সময় হঠাৎই অতিরিক্ত খাওয়ার কারণে মৃত্যু হয় তাঁর। মৃতদেহের ময়নাতদন্তের সময় পেটে অপাচ্য খাবার পাওয়া গিয়েছে। আসলে, দুর্ভাগ্যবশত, প্যানের শরীর তাঁর খাওয়ার রুটিন পরিচালনা করতে পারেনি। সোহু নামে একটি চিনা ওয়েবসাইটের মতে, তাঁর পেটের আকৃতি খারাপভাবে বদলে গিয়েছিল।
হাসপাতালে ভর্তি হয়েও মাকবাং ভিডিয়ো বন্ধ করেননি
দিন দিন লাফিয়ে ওজন বাড়ছিল প্যানের। সেদিকে খেয়াল না দিয়ে খেতেই থাকতেন তিনি। একপর্যায়ে অতিরিক্ত খাওয়ার কারণে তাঁকে হাসপাতালেও ভর্তি হতে হয়েছিল। গ্যাস্ট্রিক ব্লিডিং নামক রোগে ভুগছিলেন এই মহিলা। সেই রোগকে থোড়াই কেয়ার করে, হাসপাতাল থেকে বের হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই ফের খাবারের ভিডিয়ো করা শুরু করেছিলেন।