যদি প্রশ্ন করা হয়, ফিট থাকার জন্য প্রতিদিন কত ঘণ্টা ঘুম প্রয়োজন! যে কারও উত্তর হতে পারে - ৮ ঘণ্টা, ৭ ঘণ্টা কিংবা ৫ থেকে ৬ ঘণ্টা। তবে, একজন জাপানি ব্যবসায়ী দাবি করেছেন যে তিনি গত ১২ বছর ধরে প্রতিদিন মাত্র ৩০ মিনিট ঘুমোন।
এত কম ঘুমানোর কারণ কী
১২ বছর ধরে প্রতিদিন মাত্র ৩০ মিনিট ঘুমোনোর দাবি করা ব্যবসায়ীর নাম ডাইসুকে হোরি। ৪০ বছর বয়সী ডাইসুকে হরি, পুরোপুরি ফিট এবং সারা দিন তিনি সুপার সক্রিয়ও থাকে। এনার্জির বিন্দুমাত্র অভাব নেই। এই ব্যবসায়ী বলেন, এত কম ঘুমের পরও ফিট থাকতে, তিনি নিজের শরীর ও মনকে এমনভাবে ট্রেনিং দিয়েছেন যে প্রতিদিন ৩০ মিনিটের বেশি ঘুমের প্রয়োজনই নেই।
আরও পড়ুন: (পুজোর অফার দিচ্ছে Tata, একাধিক গাড়িতে ১.৮০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ছাড়! সম্পূর্ণ তালিকা রইল)
ডাইসুকে হরি জানিয়েছেন যে তিনি কাজ করার ক্ষমতা বাড়াতে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে মাত্র ৩০ মিনিট ঘুমোনোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। কম ঘুমোলে, হাতে প্রতিদিন ২৩ ঘণ্টা, ৩০ মিনিট সময় থাকে। এর মধ্যে প্রতিদিন জিমে দুই ঘণ্টার বেশি সময় কাটান তিনি। তিনি বলেন, যতক্ষণ খেলাধুলা ও ব্যায়াম করছেন, কোনও ধরনের সমস্যা হবে না। খাবার খাওয়ার এক ঘণ্টা আগে কফি পান করাও ভালো। এটি ঘুম এবং ক্লান্তি উভয়ই দূর করে।
২১০০ জনকে কম ঘুমের ট্রেনিং দিয়েছেন
সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ডাইসুকে ২০১৬ সালে জাপান শর্ট স্লিপারস ট্রেনিং অ্যাসোসিয়েশন শুরু করেন। এখানে তিনি ঘুম ও স্বাস্থ্য সংক্রান্ত ক্লাস নেন। এখনও পর্যন্ত, হরি ২১০০ শিক্ষার্থীকে খুব অল্প সময়ের জন্য ঘুমিয়েও সুস্থ থাকার ট্রেনিং দিয়েছেন।
'বেশিক্ষণ নয়, ভালো ঘুম দরকার'
জাপানের ইয়োমিউরি টিভি চ্যানেল ডাইসুকে হোরির প্রতিদিনের রুটিন নিয়ে একটি শো করেছিল। যেখানে হোরির পুরো কর্মকাণ্ড তিন দিনের জন্য রেকর্ড করা হয়েছিল। এই তিন দিনে তিনি একদিন ২৬ মিনিট এবং বাকি দুই দিন ৩০ মিনিট করে ঘুমিয়েছিলেন। চ্যানেলটিকে ইন্টারভিউ দেওয়ার সময় ডাইসুকে বলেন, অনেক ঘণ্টা ঘুমোনোর চেয়ে ভালো ঘুম হওয়াটা বেশি জরুরি। আমরা যদি কিছু সময়ের জন্য হলেও ভাল ঘুমোই, তবে দীর্ঘ ঘুমের প্রয়োজন হয় না।
কী বলছেন ডাক্তাররা
যদিও ডাক্তারদের দাবি যে এই বিষয়টি একেবারেই বাস্তবসম্মত নয়। একজন মানুষের গড়পড়তা ৬ থেকে ৮ ঘণ্টা ঘুমের প্রয়োজন। এতে শরীর ও মন থেকে ক্লান্তি দূর হয় এবং শরীর পরের দিন সক্রিয় হওয়ার জন্য প্রস্তুত হয়। অনেকের শরীর খুব কম ঘুম সহ্য করতে পারে, তবে এটি সকলের জন্য ঠিক নয়। কম ঘুমোলে অনেক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও দেখা দিতে পারে।
কম ঘুমের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া কী কী হতে পারে
- ক্লান্ত এবং অলস বোধ করা।
- মনোযোগ দিতে কিংবা কিছু মনে রাখতে সমস্যা হতে পারে।
- সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা কমতে পারে।
- হরমোনের ভারসাম্যহীনতা বিরক্তি, উদ্বেগ এবং বিষণ্নতার কারণ হতে পারে।
- রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল হয়ে যেতে পারে।
- খিদে নিয়ন্ত্রণকারী হরমোনগুলি প্রভাবিত হয়, যার কারণে স্থূলতার ঝুঁকি থাকে।
- হার্ট অ্যাটাক, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস ও স্ট্রোকের মতো রোগেরও ঝুঁকি বাড়তে পারে।