আধুনিক জীবনযাত্রায় যন্ত্র একরকম অপরিহার্য হয়ে উঠেছে। ঘুম ভাঙা থেকে ঘুমোতে যাওয়া পর্যন্ত যন্ত্রের সাহায্য না নিলে চলাফেরাই মুশকিল হয়ে দাঁড়ায়। এছাড়াও, কাজের সূত্রে দীর্ঘসময় ধরে মোবাইল বা ল্যাপটপের ব্যবহার তো রয়েছেই। এর ফলে ডিজিটাল স্ক্রিনের সামনেই কাটে বেশিরভাগ সময়। কাজ ছাড়াও আধুনিক সময়ের পড়াশোনা ও বিনোদনও হয়ে পড়েছে যন্ত্রনির্ভর। ডিজিটাল যুগ যেমন আমাদের অনেক কাজ সহজ করে দিয়েছে, তেমনই ফেলেছে নানা সমস্যাতেও। বিশেষজ্ঞদের কথায়, দীর্ঘক্ষণ ল্যাপটপ ও ফোনের সামনে সময় কাটানোর ফলে তৈরি হচ্ছে গুরুতর শারীরিক সমস্যা। এর মধ্যে কিছু সমস্যা আবার দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব ফেলছে আমাদের জীবনে। আমেরিকার এক সমীক্ষা অনুযায়ী, শুধু ডিজিটাল স্ক্রিনের সামনে বসে মানুষেরা জীবনের ৪৪ বছর কাটাচ্ছেন । এর থেকেই দেখা দিচ্ছে নানা শারীরিক সমস্যা। ডিজিটাল যন্ত্রের কারণে হওয়া এই সমস্যাকে বিজ্ঞানের পরিভাষায় বলা হয় সাইবারসিকনেস।
১. মোশন সিকনেস: ডিজিটাল স্ক্রিনের গতিশীল ছবি ও ভার্চুয়াল রিয়েলিটির কারণে এই সমস্যা দেখা দিচ্ছে। বিশেষজ্ঞের মতে, মোশন সিকনেসের সমস্যা আগেও ছিল। তবে, ভার্চুয়াল রিয়েলিটির কারণে শরীর গতিশীল না হলেও মস্তিষ্ক গতি অনুভব করছে। এর থেকেই দেখা দিচ্ছে অভিনব এই সমস্যা।
২, মাথাধরা ও বমিভাব: সাইবারসিকনেসের আরেকটি উপসর্গ হল মাথাধরা ও বমি বমি ভাব। দীর্ঘক্ষণ ধরে স্ক্রিনের সামনে থাকার ফলে মেরুদন্ডের ব্যথা থেকে ভার্টিগোর সমস্যাও দেখা যেতে পারে। এর ফলে শরীরের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলা থেকে বমিভাব ও মাথা ঘোরার মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে।
৩. চোখে ব্যথা: একটানা সাত থেকে আটঘন্টা কাজ করলে চোখের উপর চাপ পড়া স্বাভাবিক। সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, কম্পিউটার নিয়ে কর্মরত এমন ৫০ থেকে ৯০ শতাংশের ক্ষেত্রেই কম্পিউটার ভিশন সিনড্রোম দেখা যায়। এই সমস্য়ায় চোখ জ্বালা থেকে মাথা ব্যথা, গলা ও ঘাড়ে ব্যথাও হতে পারে।
৪. ঘুমের সমস্যা: এলইডি টিভি, ফোন ও কম্পিউটারের আলো একরকমের নীল রশ্মির বিচ্ছুরণ ঘটায়। দীর্ঘক্ষণ এই নীল আলো চোখে পড়লে শরীরের মেলাটোনিন উৎপাদন ব্যাহত হয়।মেলাটোনিনই ঘুম আসতে সাহায্য করে। এর উৎপাদন কমে যাওয়ায় ঘুমেও সমস্যা তৈরি হয়।
৫. কগনিটিভ কার্যক্ষমতা: সোশ্যাল মিডিয়া ও ভিডিও গেমের নানারকম ঘটনাআমাদের মস্তিষ্কের ডোপামিন ক্ষরণ নিয়ন্ত্রণ করে। এর থেকেই ব্যাহত হয় কগনিটিভ কার্যক্ষমতা।