শহর তো বটেই, এখন গ্রামেও সেই ভাবে দেখা যায় না মাঠ। নেই খোলা আকাশ, নেই উঠোন। তার মধ্যে মহামারীর পর যোগ দিয়েছে ওয়ার্ক ফ্রম হোম। বাড়িতে বসে কাজ করার ফলে বাইরের জগতের সঙ্গে যোগাযোগ প্রায় বিচ্ছিন্ন হয়ে যাচ্ছে সকলের।
তবে বাড়িতে বসে কাজ করার কিছু সুবিধা যেমন আছে তেমন আছে একটি বড় অসুবিধা। আপনি ট্রেনে অথবা বাসে করে অফিসে গেলে আপনার শারীরিক পরিশ্রম হয় যা একেবারেই হয় না বাড়িতে বসে কাজ করার ক্ষেত্রে। শুধু তাই নয়, দীর্ঘক্ষণ কম্পিউটার বা ল্যাপটপের সামনে বসে কাজ করার ফলে একের পর এক শারীরিক সমস্যা বেড়েই চলেছে।
(আরো পড়ুন: আপনি কি শসা খান? সকলের কিন্তু খেতে নেই, দেখে নিন আপনি ঠিক করছেন কি না)
এই দীর্ঘক্ষণ বসে থাকা কতটা ক্ষতিকারক হতে পারে, তা নিয়ে কথা বলেছেন হায়দ্রাবাদের অ্যাপেলো হাসপাতালের নিউরোলজিস্ট ডক্টর সুধীর কুমার। চিকিৎসক বলেছেন, "কেউ যদি কোনও শারীরিক পরিশ্রম ছাড়া ৪ ঘণ্টার বেশি বসে থাকেন একটি জায়গায়, সে ক্ষেত্রে তিনি তার শরীরের এমন ক্ষতি করছেন যা ধূমপান করার সমসাময়িক।"
চিকিৎসকের মতে, ‘দীর্ঘক্ষণ একই জায়গায় বসে থাকলে ডায়াবেটিস, হাই ব্লাড প্রেসার, অ্যাসিডিটি, কোলেস্টরেল, হার্ট অ্যাটাক, স্ট্রোক এমনকি ক্যান্সারের মতো সমস্যাও হতে পারে। কাজের ফাঁকে কোনও রকম বিরতি ছাড়া কেউ যদি দীর্ঘক্ষণ একটানা কাজ করে যান, সেক্ষেত্রে ধূমপানের ফলে স্বাস্থ্যে যে জটিলতা তৈরি হয় তেমনি জটিলতা তৈরি হতে পারে এক্ষেত্রেও।’
(আরো পড়ুন:পাতে রাখুন ফাইবারের এই ‘পাওয়ার হাউস’কে, দূরে পালাবে বহু রোগ)
চিকিৎসক জানাচ্ছেন, ‘একই জায়গায় বসে যখন আপনার কাজ সেক্ষেত্রে প্রতি ৩০ মিনিট অন্তর অন্তর আপনাকে কাজের জায়গা থেকে উঠে হাঁটাহাঁটি করতে হবে। আপনি যদি মহিলা হন সে ক্ষেত্রে বাড়ির যাবতীয় কাজ সেরে ফেলতে পারেন এর মধ্যে, আপনি যদি পুরুষ হন সে ক্ষেত্রে আধঘন্টার মধ্যে দোকানে গিয়ে কোনও কাজ সেরে ফিরে আসতে পারেন। মোট কথা, কাজের ফাঁকে ফাঁকে শরীরকে চালনা করতে হবে, না হলে হবে বিপদ।’
সুধীর বাবু জানিয়েছেন, ‘আমরা যেমন ধূমপান বা চিনি থেকে দূরে থাকতে বলি মানুষকে, তেমনই দীর্ঘক্ষন বসে থাকার ব্যাপারটিও এড়িয়ে চলতে বলি সকলকে। যদি আপনার গুরুতর সমস্যা নাও হয়, তাও দীর্ঘক্ষণ বসে থাকলে পায়ে যন্ত্রণা বা কোমরে যন্ত্রণার মত সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই নিজেকে সুস্থ রাখার জন্য কাজের ফাঁকে ফাঁকে কিছুটা সময় শারীরিক চর্চার মধ্যে কাটান।’