ব্যক্তিগত ও পেশাগত জীবনের মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখা খুবই কঠিন। বিশেষত কর্মজীবী দম্পতিদের জন্য এই চাপ বেশি। এই কারণেই, আজকাল অনেক দম্পতির বেশিরভাগ সময় ঝামেলা করেই কেটে যায়। এরপর যখন জল মাথার উপরে চলে যায়, তখন একমাত্র বিকল্প থাকে ডিভোর্স। তবে এখন আরও একটি অদ্ভুত অপশন ট্রেন্ডে রয়েছে, যার দরুণ দম্পতিরা নিজেদের মধ্যে বাড়তে বাড়তে থাকা দূরত্ব-পার্থক্য দূর করতে পারেন। এটি হল ঘুম।
স্লিপ ডিভোর্স, এক্ষেত্রে দম্পতিরা নিজেদের চাহিদা এবং আরাম অনুযায়ী আলাদাভাবে ঘুমোতে পছন্দ করেন। বর্তমান লাইফস্টাইল ও কর্মসংস্কৃতি এই অদ্ভুত বিষয়ের জন্ম দিয়েছে। সারা রাত ডিউটি করে আসা, ক্লান্ত সঙ্গীর নাক ডাকার অভ্যাস বা দেরি করে ফোন ঘাঁটার অভ্যাস অন্য সঙ্গীর ঘুমের ব্যাঘাত ঘটাতে পারে। এতে ঝামেলা বাড়ে। তাহলে এর একমাত্র সমাধান হল স্লিপ ডিভোর্স। শহরগুলোতে এই প্রবণতা সবচেয়ে বেশি দেখা যাচ্ছে।
আরও পড়ুন: (Alakshi Biday Puja 2024: অলক্ষ্মীর বিদায়ের পুজো সম্পূর্ণ করতে বরণ করা হয় শুকতারাকে! কোন সময়টি এর জন্য আদর্শ)
স্লিপ ডিভোর্সের উপকারিতা
খাবার এবং ঘুম শরীরের কাজ করার জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দুইটি জিনিস। এই দুই জিনিসের অভাব, আপনার পুরো রুটিন, এমনকি একটি ভাল সম্পর্ককেও ব্যাহত করতে পারে। তাই স্লিপ ডিভোর্স হলে, সুখী দাম্পত্য জীবনের সমাপ্তি হয় না, বরং নতুন করে শুরু করা যায়। সারা দিনে ক্লান্তির শেষে, ভালভাবে পেটপুজো সেরে ঘুম, মানসিক চাপমুক্ত রাখে, সকালে উঠে মন ভালো থাকে।
আরও পড়ুন: (Kali Puja 2024 Theme: কালী আরাধনার ভয়াল পরিবেশ নৃত্যনাট্য়ে! টালিগঞ্জের রসা শক্তি সেবকের থিমে বড় চমক)
কিন্তু স্লিপ ডিভোর্স আবার এই চার ক্ষতিও করে বসতে পারে
- নিরাপত্তাহীন বোধ করা: এর কারণে সঙ্গী নিরাপত্তাহীন বোধ করতে পারেন। আসলে, বিয়ের পর বিছানা ভাগাভাগি করা খুবই স্বাভাবিক ব্যাপার, কিন্তু সঙ্গী যদি ভালো ঘুমের জন্য আলাদাভাবে ঘুমোতে চান, তাহলে অন্যজন সেটাকে দূরত্ব তৈরির অজুহাত মনে করতে পারেন। মনে এরপর ভয় জন্মায় যে সম্পর্কে নির্ঘাত তৃতীয় ব্যক্তি প্রবেশ করেছে। যার জেরে সম্পর্কে অহেতুক উত্তেজনা ও ঝামেলা লেগেই থাকে।
- সংযোগের অভাব: আলাদা ঘুমোলে, সঙ্গীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার অনুভূতি হারাতে শুরু করে। বেডরুম হল সেই জায়গা যেখানে আমরা আমাদের সঙ্গীর সঙ্গে ভালবাসা, অভিযোগ এবং আরও অনেক কিছু শেয়ার করতে পারি। যার কারণে পারস্পরিক সম্পর্ক গড়ে ওঠে, কিন্তু ঘুমে বিচ্ছেদ বা স্লিপ ডিভোর্সে এই জিনিসগুলির জন্য কোনও সময় থাকে না, যার কারণে সংযোগ কমতে শুরু করে। এমনকি সম্পর্কে থাকাকালীনও পাকাপাকি বিচ্ছেদের অনুভূতিও আসে।
- রোম্যান্সের অভাব: সুখী দাম্পত্যে, এটা খুবই প্রয়োজনীয় জিনিস। আলাদা ঘরে ঘুমালে ধীরে ধীরে প্রেম ও রোমান্স কমে যায়, যা আপনার বিবাহিত জীবনে ব্যাঘাত ঘটাতে পারে এবং বিচ্ছেদের কারণও হতে পারে। ব্যক্তিগত জীবনের সঙ্গে সম্পর্কিত যে কোনও ধরনের সমস্যা আপনার পেশাদার জীবনকেও প্রভাবিত করে।
- সুখ কমে যাওয়া: ঘুমে বিচ্ছেদের কারণে কর্মজীবী দম্পতিদের জীবন থেকেও সুখ উধাও হয়ে যাচ্ছে। সারাদিন অফিসে কাটিয়ে তারপর গৃহস্থালির কাজ শেষ করে রাত হলেই একে অপরের সঙ্গে সময় কাটানোর সুযোগ আসে। এমন পরিস্থিতিতে আলাদা ঘুমানোর সিদ্ধান্ত, দুজনের জন্যই কঠিন হতে পারে। এ কারণে পারস্পরিক কলহ বাড়তে থাকে। কমার সম্ভাবনা কম।