বহু ধরনের চিন্তাভাবনা মাথায় ভিড় করে এলে ঘুম সেভাবে ভালভাবে হয়ে ওঠে না। ঘুমিয়ে পড়লেও বিভিন্ন চিন্তার জেরে বারবার ভেঙে যায় ঘুম। এমন সমস্যা কম বেশি প্রায় অনেকের মধ্যেই থাকে। চিকিৎসকরা বলছেন, অনিদ্রাজনিত ইনসমনিয়ার সঙ্গে সম্পর্কিত হার্টের রোগের নানান দিক।
চিকিৎসক রাকেশ রাজপুরোহিত বলছেন, 'খারাপ ঘুমের অভ্যাসের সঙ্গে যে ক্রনিক কন্ডিশনগুলি জড়িত রয়েছে তা হল, কার্ডিওভ্যাসকুলার ডিজিজ, স্ট্রোক, টাইপ টু ডায়াবেটিস, কোনও কোনও ক্ষেত্রে ক্যানসার। যখন রোগীদের ঘুমের অস্বাভাবিকতা দেখা যায়, তখন লেপ্টিন হরমোন ক্ষরণ কমে।' তিনি বলছেন, বারবার ঘুম ভেঙে যাওয়া বা অল্প ঘুম, ব্লাডপ্রেশারের রোগ ধরিয়ে দেয়। শুরু হয় হার্টের সমস্যা, হার্ট অ্যাটাক, ডায়াবেটিস, স্ট্রোক। ঘুমের অস্বাভাবিকতা নিয়ে কয়েকটি উপসর্গের হদিশ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা।
-খুব জোরে নাক ডাকা। মাঝে মাঝে গলার কাছে রুদ্ধ হওয়ার মতো অনুভূতি।
-৭ ঘণ্টার বেশি সারা দিনে ঘুমিয়ে পড়া। সারা দিনে যখন তখন ঘুম পাওয়া ও প্রবল দুর্বলতার দরুন ঘুমিয়ে পড়া বারবার।
-৩০ মিনিটের বেশি সময় লাগছে ঘুম আসতে। আর এটি বহুদিন ধরেই ঘটে চলেছে।
-কাজে মন বসছে না। ঘন ঘন রাগ হচ্ছে। কোনও কিছু ভাবতে গিয়ে সমস্যা হচ্ছে।
-মাঝ রাতে ঘুম ভেঙে অনেকক্ষণ জেগে থাকছেন।
-ঘুমের সময় পা বারবার দুলিয়ে বা ছড়িয়ে ফেলার তাগিদ জাগা।
-হাসতে হাসতে ঘুমিয়ে পড়া।
-ঘুম থেকে জাগিয়ে রাখতে প্রয়োজন হয় কোনও না কোনও ক্যাফিনের।
উল্লেখ্য, ঘুমের সমস্যা থেকে বহু ধরনের শারীরিক সমস্যা জন্মাতে পারে। এমনকি ঘুমের অস্বাভাবিকতা থেকে বিভিন্ন ধরনের রোগও হয়। দেখে নেওয়া যাক ঘুমকে কেন্দ্র করে কোন কোন রোগ শরীরে দানা বাঁধতে পারে-
-ঘুমের সময় শ্বাস প্রশ্বাসে সমস্যা। স্লিপিং অ্যাপনিয়া, এই রোগে ঘুমের সময় নাক বা গলা বারবার বন্ধ হয়।
-ইনসমনিয়ার জেরে ঘুমোতে সমস্যা হয়। কিছুতেই আসে না ঘুম। এর জেরে হার্টের সমস্যা হতে পারে।
-হাইপারসমনিয়া হল এমন একটি রোগ, যার জেরে কিছুতেই ঘুম ভাঙে না।
-প্যারাসমনিয়া হল এমন একটি রোগ, যা ঘুমের মধ্যে কাজ করায়। এর জেরে স্লিপ ওয়াকিং এর মতো সমস্যা দেখা দেয়।
- ঘুমের সময় পা দোলানোর ইচ্ছা রেস্টলেস লেগ সিন্ড্রোম তৈরি করে। এরফলে পায়ে একটি বিশেষ অনুভূতি জন্মাতে শুরু করে।
-সাইকার্ডিয়ান রিদম ডিসঅর্ডারে সঠিক সময়ে ঘুম হয় না বা সঠিক সময়ে ঘুম থেকে জাগা হয় না। এতে বেশি রাতে ঘুম আসার সমস্যা হয়।