ডায়াবিটিস এখন প্রায় সব বয়সেই দেখা যায়। কম বয়সে ডায়াবিটিস হয় না, এই ধারণাও ভুল। বরং ৪০-এর কোঠা পেরোনোর আগেই দেখা দিতে পারে এই রোগ। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কথায় এটি অবশ্য মারণরোগ। সারা বিশ্বে প্রায় ৫০০ মিলিয়ন মানুষ এই রোগে আক্রান্ত। প্রতি বছর দেড় মিলিয়ন রোগী এই রোগে মারা যান। ইদানিং কমবয়সিদের মধ্যে এই রোগের হার বাড়ছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, অনিয়মিত খাওয়াদাওয়ার কারণেই বাড়ছে রোগটির আশঙ্কা।
সম্প্রতি একটি গবেষণায় আরও গুরুতর তথ্যের খোঁজ মিলেছে। গবেষকদের দাবি, দক্ষিণ এশীয় মহিলাদের গর্ভাবস্থায় ডায়াবিটিস হওয়ার আশঙ্কা অনেকটাই বেশি। ইলাইফে প্রকাশিত গবেষণাটি জানাচ্ছে, গর্ভধারণের পর টাইপ ২ ডায়াবিটিস হওয়ার আশঙ্কা অন্য দেশের তুলনায় দক্ষিণ এশীয় মহিলাদের ক্ষেত্রে অনেকটা বেশি।
টাইপ ২ ডায়াবিটিস কী?
মায়োক্লিনিকের মতে, টাইপ ২ ডায়াবিটিস হলে অগ্ন্যাশয় যথেষ্ট ইনসুলিন তৈরি করতে পারে না। এছাড়া শরীরও ইনসুলিন ঠিকভাবে ব্যবহার করতে পারে না। ইনসুলিন রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে। এর কার্যক্ষমতা নষ্ট হলে রক্তে শর্করা বাড়তে থাকে। একসময় সেটির পরিমাণ স্বাভাবিক মাত্রাকে ছাড়িয়ে যায়। এর থেকেই দেখা দেয় টাইপ ২ ডায়াবিটিস।
গর্ভাবস্থায় ডায়াবিটিস কী?
গর্ভধারণের পর মায়ের শরীরে বেশ কিছু রোগের আশঙ্কা অনেকটাই বেড়ে যায়। এর মধ্যে অন্যতম হল ডায়াবিটিস। একে গর্ভাবস্থায় ডায়াবিটিস বা জেস্টেশনাল ডায়াবিটিসও বলা হয়। গর্ভধারণের সময় অতিরিক্ত ওজন থাকলে বা বয়স ২৫ এর বেশি হলে ডায়াবিটিসের আশঙ্কা আরও বাড়ে। এছাড়া উচ্চ রক্তচাপ বা কোনও হৃদরোগ থাকলেও এই রোগের আশঙ্কা বাড়তে পারে। গর্ভাবস্থায় এই রোগ দেখা দিলে প্রসবে জটিলতা তৈরি হতে পারে। এছাড়াও চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী এই সময় অতিরিক্ত সতর্ক থাকার প্রয়োজন হয়।
দক্ষিণ এশীয় মহিলাদের আশঙ্কা বেশি কেন?
ইলাইফে প্রকাশিত গবেষণাটি জিন স্তরে করা হয়। দেখা গিয়েছে, টাইপ ২ ডায়াবিটিস আর গর্ভাবস্থায় ডায়াবিটিসের জন্য একই জিন দায়ী। দক্ষিণ এশীয় মহিলাদের শরীরে এই জিনের উপস্থিতি পাওয়া যায়। বিশেষজ্ঞদের দাবি, এই বিষয়ে ভবিষ্যতে আরও গবেষণা জরুরি। পরবর্তী গবেষণাগুলোতেও যদি এটাই প্রমাণিত হয়, তবে গর্ভবতীদের চিকিৎসা পদ্ধতিতে পরিবর্তন আসতে পারে। পাশাপাশি, গর্ভধারণের আগেই ডায়াবিটিস প্রতিরোধে চিকিৎসকরা গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিতে পারবেন।