বর্তমানে পৃথিবীর পরিবেশের দুটি সবচেয়ে বড়ো সমস্যা গ্রিনহাউস গ্যাস এবং প্লাস্টিক বর্জ্য। এই দুটির সমাধান খুঁজতে বিশ্বের নানা প্রান্তে বি ভিন্ন গবেষণায় চলছে। সম্প্রতি তেমনই একটি গবেষণায় অভূতপূর্ব সাড়া মিলল। কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই ভারতীয় গবেষকের চেষ্টায় তৈরি হল একটি বিশেষ চুল্লি সিস্টেম। যা একইসঙ্গে এই বৃহত্তম সমস্যা দুটির সমাধান করতে পারবে। অধ্যাপক এরউইন রেইসনারের তত্ত্বাবধানে রেইসনার ল্যাবে এই গবেষণাটি করা হয়। ভবিষ্যতে বাসযোগ্য পৃথিবী গড়ে তুলতে এই ল্যাবে নানারকম পরীক্ষা নিরীক্ষা চলে। সেখানেই গ্ৰিন হাউস গ্যাস ও প্লাস্টিক বর্জ্য রূপান্তরিত করার চুল্লি বা রিয়্যাক্টর আবিষ্কার করলেন দুই বিজ্ঞানী। তাদের এই চুল্লি বিশেষ কায়দায় গ্ৰিন হাউস গ্যাস ও প্লাস্টিক বর্জ্যকে পরিবেশবান্ধব জ্বালানি ও অন্যান্য মূল্যবান পদার্থে পাল্টে দেয়। বিজ্ঞান পত্রিকা নেচার সিন্থেসিসে সম্প্রতি গবেষণার ফলাফলটি প্রকাশিত হয়েছে।
গবেষণাপত্র অনুযায়ী, চুল্লিটি শুধুমাত্র সৌর শক্তিতে চলে এবং আলো শোষণের জন্য পেরোভস্কাইট ব্যবহার করে। পেরোভস্কাইট সিলিকনের তুলনায় বেশি সাশ্রয়ী। ডক্টর মতিয়ার রহমান এনডিটিভি সংবাদ মাধ্যমকে জানান, 'চুল্লিটির দুটি কক্ষ রয়েছে। একটি কক্ষে কার্বন ডাই অক্সাইড রূপান্তরিত হয়। অন্যটি কক্ষটি প্লাস্টিক বর্জ্যকে দরকারী পণ্যে পরিণত করে।'
প্রসঙ্গত মতিয়ার এই গবেষণাপত্রের অন্যতম লেখক। তাঁর কথায়, চুল্লিটি কার্বন ডাই অক্সাইড এবং প্লাস্টিক বর্জ্য রূপান্তরের মাধ্যমে সিনগ্যাস, ফর্মিক অ্যাসিড এবং গ্লাইকোলিক অ্যাসিডের মতো পণ্য তৈরি করতে সাহায্য করে। এই পণ্যগুলির বেশ কয়েকটি শিল্পক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়। যেমন সিনগ্যাস তরল জ্বালানি তৈরি করতে ব্যবহৃত হয়। ফর্মিক অ্যাসিড চামড়া এবং তন্তুজ প্রক্রিয়াকরণে ব্যবহৃত হয়। ওষুধ শিল্পে বিশেষ করে ত্বকের যত্নে গ্লাইকোলিক অ্যাসিড ব্যবহার করা হয়।
কেমব্রিজ ইউনিভার্সিটি এক বিবৃতিতে বলা হয়, প্রচলিত ফটোক্যাটালিটিক কার্বন ডাই অক্সাইড রিডাকশন প্রসেসের তুলনায় চুল্লিটি অনেক বেশি হারে এই পণ্যগুলি তৈরি করেছে।
ডক্টর রহমান আরও বলেন পুরো রূপান্তরণ প্রক্রিয়াটির চাবিকাঠি হল ফটোইলেক্ট্রোডস। এটি চুল্লিতে বর্জ্য রূপান্তর করার জন্য অনুঘটকগুলি ধরে রাখে। রাসায়নিক বিক্রিয়া তাড়াতাড়ি ঘটাতে অনুঘটক একটি বড় ভূমিকা পালন করে। এর থেকে বড়ো ব্যাপার অনুঘটক সম্পূর্ণ নতুন উপাদান তৈরি করতে পারে।
পরীক্ষার ইতিবাচক ফলাফল পেয়ে স্বভাবতই খুশি গবেষকরা। এখন সম্পূর্ণটি গবেষণাটি আরও বড় আকারে করার পরিকল্পনা চলছে। আরেক বিজ্ঞানী শুভজিৎ ভট্টাচার্যের কথায়, এখন সরল কার্বন যৌগ তৈরি করা যাচ্ছে। অনুঘটক বদল করলে আরও জটিল যৌগও তৈরি করা যাবে।
এই খবরটি আপনি পড়তে পারেন HT App থেকেও। এবার HT App বাংলায়। HT App ডাউনলোড করার লিঙ্ক https://htipad.onelink.me/277p/p7me4aup