মাঝে মাঝেই পেটব্যথা, হজমের গন্ডগোল, কোষ্ঠকাঠিন্য এখনকার দিনে প্রতিদিনের সমস্যা। ভারতের বেশিরভাগ মানুষ বর্তমানে এই সমস্যায় ভুক্তভোগী। অনেককে এই সমস্যা সারাজীবন বয়েও বেড়াতে হয়। পেটের এই রোগটির পোশাকি নাম ইরিটেবল বাওয়েল সিনড্রোম বা আইবিএস। সাধারণত চল্লিশ বা তার বেশি বয়সে রোগটির উপসর্গ দেখা দিতে শুরু করে। যদিও, বর্তমানে অনেক কমবয়সীদের ক্ষেত্রেও এই রোগ দেখা যাচ্ছে। আইবিএস-এর পিছনে মূল কারণ এখনও সমপূর্ণ বুঝে ওঠা সম্ভব হয়নি। তবে, অ্যালকোহল বা ক্যাফেইন জাতীয় তরল পান, অত্যাধিক স্ট্রেস ও মশলাদার খাবার খাওয়া এই রোগের জন্য দায়ী বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।
ফর্টিস হাসপাতালে ইন্টারভেনশনাল ও মেডিক্যাল গ্যাস্ট্রোলজি বিভাগের ডাক্তার সন্দীপ শর্মা জানাচ্ছেন, আইবিএস এক বিশেষ ধরনের গ্যাস্ট্রিক ডিসঅর্ডার। এতে পাঁচ থেকে ১৫ শতাংশ ভারতীয় নিয়মিত ভোগেন।রোগের লক্ষণ হিসেবে মলের প্রকৃতি পাল্টে যায়। এছাড়া কোষ্ঠকাঠিন্যের মতো সমস্যাও তৈরি হয়। তবে, রোজকার জীবনে কিছু নিয়ম মেনে চললে এই রোগের থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।
নিয়মিত ব্যায়াম
বেশকিছু সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, নিয়মিত ব্যায়াম করলে্ পেট ফোলা ও ব্যথার মত সমস্যা ধীরে ধীরে কমে যায়। ডাঃ শর্মার কথায়, যেকোনওরকম ব্যায়ামই আইবিএসের সমস্যাগুলো কমাতে সাহায্য করে। এমনকি কেউ চাইলে নিয়মিত যোগব্যায়ামও করতে পারেন।
ফাইবারসমৃদ্ধ খাবার খাওয়া
ফাইবারসমৃদ্ধ খাবার বাওয়েলের কার্যকারীতা সঠিক রাখতে সাহায্য করে। তাই রোজকার ডায়েটে ফাইবারসমৃদ্ধ খাবার থাকা জরুরি।ডাক্তারের কথায়, রোজ ২০-৩০ গ্রাম ফাইবারসমৃদ্ধ খাবার যেমন ইসবগুল খেলে বাওয়েল সিনড্রোম অনেকটাই কমে যেতে পারে।
কম ফোডম্যাপ (Fodmap)-এর ডায়েট
ফোডম্যাপের সম্পূর্ণ অর্থ হল, ফারমেন্টেবল অলিগোস্যাকারাইড, ডাইস্যাকারাইড, মনোস্যাকারাইড অ্যান্ড পলিওলস্। বিভিন্ন ধরনের খাবার, ফল ও শাকসবজিতে এগুলো বেশি পরিমাণে থাকে। কারও কারও ক্ষেত্রে ফোডম্যাপ আইবিএস-এর প্রধান কারণ হিসেবে দেখা দেয়। বিশেষজ্ঞের কথায়, রোজকার ডায়েটে কম ফোডম্যাপযুক্ত খাবার রাখা উচিত। তবে, দীর্ঘদিন ধরে কম ফোডম্যাপযুক্ত খাবার খাওয়া শরীরের পক্ষে ক্ষতিকর। আইবিএস-এর উপসর্গ কমে এলে ধীরে ধীরে এর পরিমাণ বাড়ানো যেতে পারে। আম, আপেল, তরমুজ ও দুগ্ধজাত দ্রব্য ইত্যাদিতে ফোডম্যাপ বেশি পরিমাণে থাকে। এগুলোর বদলে খাওয়া যেতে পারে কলা, লেবু, আঙুর।
প্রোবায়োটিকযুক্ত খাবারের পরিমাণ বৃদ্ধি
রোজকার ডায়েটে প্রোবায়োটিকযুক্ত খাবারের পরিমাণ বাড়ালে আইবিএস-এর উপসর্গ থেকে মুক্তি পাওয়া যেতে পারে। প্রোবায়োটিক অন্ত্রের কার্যকারিতা স্বাভাবিক রাখতে সাহায্য করে।এছাড়াও প্রোবায়োটিক ডায়রিয়ার মতো সমস্যাও কমাতে সাহায্য করে। দই, ইয়োগার্ট, বাটারমিল্ক, চিস ইত্যাদি প্রোবায়োটিকে সমৃদ্ধ খাবার।