বাঙালি মানেই মিষ্টির সঙ্গে গভীর সম্পর্ক। ঘরোয়া অনুষ্ঠান হোক বা পুজো পার্বণ, মিষ্টি না হলে কোনওটাই সম্পূর্ণ হয় না। যত পদই রান্না হোক, শেষ পাতে মিষ্টি না হলে খাওয়াটা ঠিক জমে না। দুর্গাপুজো থেকে ভাইফোঁটা মিষ্টি দিয়ে আত্মীয়দের ভালোবাসা জানানোর রীতি। আবার ঘরোয়া অনুষ্ঠানে আনন্দ উদযাপন করতেও মিষ্টিমুখ করা দরকার।
উৎসবের সঙ্গে জড়িয়ে থাকলেই মিষ্টি যে স্বাস্থ্যের জন্য ভালো, তা নয়। বরং অতিরিক্ত মিষ্টি খাওয়ার ফলে বিপজ্জনক রোগ দেখা দিতে পারে। ডায়াবিটিস তেমনই একটি রোগ। ডায়াবিটিস রোগটি শুধু একা আসে না। এর সঙ্গে দেখা দিতে পারে হৃদযন্ত্রের সমস্যা, কিডনি ও মুখের সমস্যাও।
বিশ্ব ডায়াবিটিস দিবসের আগেভাগে প্রকাশিত হয়েছে চিনি সংক্রান্ত একটি গবেষণা। আর সেখানেই প্রকাশিত হয়েছে মিষ্টি নিয়ে অবাক করা তথ্য। দীপাবলীর পর এই সমীক্ষাটি করা হয়। সম্প্রতি প্রকাশিত এই সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, দীপাবলীতে ভারতীয়দের মধ্যে মিষ্টি খাওয়ার পরিমাণ ৩২ শতাংশ বেড়ে গিয়েছিল। এমনিতেই সারা বছর ধরে ভারতীয়রা যথেষ্ট পরিমাণে মিষ্টি খান। উৎসবের সময় তা বেড়ে যায় এক তৃতীয়াংশ। এতেই কপালে ভাঁজ পড়েছে পুষ্টিবিদ ও চিকিৎসকের। বিশেষজ্ঞদের মতে, অতিরিক্ত মিষ্টি খাওয়ার ফলে বাড়ছে ডায়াবিটিসের আশঙ্কা।
মিষ্টি খাওয়ার পরিসংখ্যানের পাশাপাশি আরেকটি তথ্যও উঠে এসেছে গবেষণায়। দেখা গিয়েছে উৎসবের মরশুমে ভারতীয়দের গড় ওজন বেড়েছে দেড় কেজি। আনন্দের মরশুমে ব্যায়াম করার অভ্যাস যেমন কমেছে, তেমনই বেশি খাওয়াদাওয়ার প্রভাব পড়েছে শরীরে।
গত দুই বছর কোভিডের কারণে কোনও উৎসবই সেভাবে পালিত হয়নি। এই বছর কোনওরকম নিষেধাজ্ঞা না থাকায় বাধ ভেঙেছে মানুষের আনন্দ। ধুমধাম করে উৎসব উদযাপনের পাশাপাশি খাওয়া দাওয়াতেও খামতি ছিল না।
সমীক্ষার রিপোর্ট জানাচ্ছে, দীপাবলিতে সবচেয়ে বেশি বিক্রি হয়েছে কাজু বরফি ও গুলাব জামুন। এছাড়াও যে রাজ্যগুলি মিষ্টি বিক্রির তালিকায় প্রথমদিকে রয়েছে, সেগুলো হল দিল্লি, ব্যাঙ্গালোর , মুম্বাই, হায়দরাবাদ ও পুনে। বাঙালিরাও খুব পিছিয়ে ছিল তেমনটা নয়।
রিপোর্টটি জানাচ্ছে পুরুষদের মিষ্টি খাওয়ার পরিমাণ মহিলাদের তুলনায় অনেকটাই বেশি। এছাড়া তাদের চিনি খাওয়ার প্রবণতাও এই সময় বেড়েছে ৩৮ শতাংশ। অন্যদিকে মহিলাদের ক্ষেত্রে এই প্রবণতা মাত্র ২৫ শতাংশ। গড় ওজনের দিক থেকেও এগিয়ে রয়েছেন পুরুষরাই। পুজোর মরশুমে তারা প্রায় ১.৭৮ কেজি ওজন বাড়িয়েছেন। অন্যদিকে মহিলাদের ওজন মাত্র ১.২৮ কেজি বেড়েছে।